প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,

প্রিয় পাঠক- আসসালামু আলাইকুম, গাজরে রয়েছে বহু পুষ্টিগুণ এবং অবাক করা উপকারিতা। যেমন- আমাদের চোখের যত্ন থেকে শুরু করে ত্বক উজ্জ্বল করা পর্যন্ত গাজর কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে, গাজরকে বলা হয় প্রাকৃতিক পাওয়ার হাউজ।

প্রতিদিন-গাজর-খেলে-যেসব-উপকারিতা-পাওয়া-যায়

কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, এবং বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। তাই, আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হচ্ছে- “প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়” এর উপর।

পেজ সূচিপত্রঃ প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়

প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়

গাজর বা Carrot, যার বৈজ্ঞানিক নাম-Daucus Carota। এটা এক প্রকার মূল জাতীয় সবজি। গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং আঁশযুক্ত শীতকালীন সবজি- যা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। কাঁচা এবং রান্না দু’ভাবেই এটি খাওয়া যায়।

বিভিন্ন প্রকার খাবার তৈরিতে গাজর ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তরকারি, হালুয়া ও বিশেষ করে সালাদ হিসাবেও গাজর অত্যন্ত জনপ্রিয়। এতে উচ্চমানের বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, মিনারেলস ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে।

গাজরে আছে ফ্যালকেরিনল এবং ফ্যালকেরিনডায়ল যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। তাই গাজর খেলে ব্রেস্ট, কোলন, ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

আর এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এ ছাড়াও রয়েছে বহু রকমের স্বাস্থ্যগত সুবিধা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি গাজর থেকে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ পেতে হয় তাহলে কাঁচা গাজর খাওয়াই সর্বোত্তম। তাই গাজরের জুস বানিয়ে খেলেই পাওয়া যাবে গাজরের সর্বোচ্চ পুষ্টিমান উপাদান। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গাজরের জুস স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে কয়েকগুণ।

গাজর খেলে- হার্ট সবল বা সুস্থ থাকে, হাড় সুস্থ রাখে, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, ত্বক ভালো ও সুন্দর রাখে, কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।

এছাড়াও লিভারের সমস্যা দূর করে, মুখের গন্ধ এবং অন্যান্য মুখের স্বাস্থ্য সমস্যা দূরে রাখে। নিম্নে এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আরো পড়ুনঃ দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন

গাজর খাওয়ার নিয়ম জানুন-

প্রতিদিন নিয়ম মেনে গাজর খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। পুষ্টি-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে কাঁচা ও রান্না করা গাজরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

  • গাজরে বিটা ক্যারোটিন থাকে যাকে ক্যারোটিনয়েড-ও বলা হয়। রান্না করা হলে এটা শরীরে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। ‘এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে এই সত্যতা মিলে। এ থেকে জানান যায় যে, ফুটন্ত এবং বাষ্পায়ীত গাজরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যারোটিনয়েড সংরক্ষিত থাকে।

গাজর-খাওয়ার-নিয়ম

  • এটা সত্য যে, উচ্চ তাপে সবজি রান্না করা হলে এর পুষ্টিমান হারায়। গাজরের বিটা ক্যারোটিনের ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। গাজর রান্না করা হলে এর ক্যারোটিনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন আরও উপকারী হয়। বিটা ক্যারোটিন একটা প্রোভিটামিন যা পরবর্তীতে শরীরে ভিটামিন-এ’ তে রূপান্তরিত হয়। এটা চুলের বৃদ্ধি, দৃষ্টি শক্তির উন্নত, হৃদপিণ্ডের সুস্থতা ও ক্যানসারের উপাদান নষ্ট করতে সহায়তা করে। 
  • নরম না হওয়া পর্যন্ত মাঝারি আঁচে গাজর রান্না করুন। বিটা ক্যারোটিন চর্বিতে দ্রবণীয় যা উচ্চ তাপেও নষ্ট হয় না। গাজর রান্না করা হলে তা নরম হয় যা হজমে সহায়তা করে ও বিটা ক্যারোটিন সহজে গ্রহণ হয়।
  • গাজর টুকরা করে কেটে সালাদ বানিয়ে, কুচি করে হালুয়া বা জুস বানিয়ে অথবা ভর্তা বানিয়েও খেতে পারেন।

রান্না করা গাজর বেশি উপকারী মানে এই নয় যা তা কাঁচা খাওয়া যাবে না। গাজরের নিজস্ব কিছু উপকারিতা আছে যা- যে কোনোভাবে গ্রহণ করলেও পাওয়া যায়।

প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত? এ সম্পর্কে পুষ্টিবিদদের মত হলো- প্রতিদিন ১ থেকে ২টি মাঝারি আকারের গাজর বা ১ থেকে ২ কাপ গাজর খাওয়া উচিত যা আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় বেশ কার্যকরী এবং এটি ভিটামিন-এ ও অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে।

প্রতিদিন-কতটুকু-গাজর-খাওয়া-উচিত

আবার দেখা যায়, অতিরিক্ত খেলে  বিটা ক্যারোটিন ত্বকে জমা হয়ে কমলা রং সৃষ্টি করতে পারে এবং এতে ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।। তাই বিভিন্ন সবজির সাথে পরিমিত পরিমাণে গাজর খাওয়া উচিত।

আর শিশুদের (২-৩ বছর) ক্ষেত্রে প্রতিদিন আধা কাপ পরিমাণ গাজর খাওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন - আমাদের যা যা করণীয়

গাজর খাওয়ার উপকারিতা-

প্রতিদিন গাজর খেলে- এর নানারকম পুষ্টিকর উপাদান আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এর উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। যেমন-

  • গাজরে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরে কোলাজেন তৈরি হওয়া বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরে কোথাও ক্ষত হলে তা দ্রুত ভালো হয়। এ ছাড়া গাজর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ভিটামিন ‘এ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। লাল-কমলা রঙের ফল-মূল অথবা সবজি যেমন গাজর, মিষ্টি কুমড়া এবং তরমুজে বেটা-ক্যারোটিন নামের এক ধরনের উপাদান থাকে। এই উপাদানটি শরীরে ভিটামিন ‘এ’-তে পরিণত হয়। আর এতেই শরীরের অন্যান্য স্বাস্থ্যগত উপকারের পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
  • এটি আমাদের পাকস্থিলীর হজম ক্ষমতা বাড়ায়। গাজর খেলে দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, বদহজম ইত্যাদি নিরাময় হয়। লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীর গাজরের রস, গাজরের স্যুপ পান করলে উপকার পাবেন।
  • গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম দেহের কোলেস্টেরল এবং শর্করা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাজরের জুস ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের উপাদান খুবই কম। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে এই সবজি।
  • গাজরের রস খেলে চর্বি কমে। ফলে ওজনও কমে। তাই শরীরচর্চার পর বা মর্নিং ওয়াকের পর এই জুস এক গ্লাস খেলে ভালো উপকার পাবেন।
  • ক্যান্সার রোগীর সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে সর্বদা জৈব এবং খোসা ছাড়ানো গাজর বেছে নেওয়া উচিত।
  • এতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড রঞ্জক পদার্থ। যা দেহের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
  • গাজরের সমস্ত উপকারী উপাদানগুলো আমাদের দেহের ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে থাকে। এ ছাড়া শ্বাসনালীর প্রদাহ ভালো করতে সাহায্য করে।
  • গর্ভাবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায়ও গাজর খেতে পারেন। এসময় গাজরের রস পান খুবই উপকারী। এতে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয় না। যেসব মায়েরা শিশুকে দুধপান করান, তাদের নিয়মিত গাজরের রস পান করা উচিত।
  • গাজরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ ফাইবার রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা বেশি পরিমাণে ফাইবার খেলে গ্লুকজ মেটাবলিজম উন্নত হয়। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের গাজর খাওয়া জরুরি।
  • লিভারে জমে থাকা পিত্ত ও চর্বি পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে গাজর। স্ট্রোকের প্রবণতা কমায়-হাভার্ড ইউনিভার্সিটির তথ্যানুসারে, যারা সপ্তাহে ৫টি কিংবা তার বেশি খায় তাদের স্ট্রোকের আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় অনেকটাই কম হয়।

কাঁচা গাজর খেলে কি হয়? জেনে নিন-

বিশেষজ্ঞরা জানান, গাজর রান্না করে খাওয়ার তুলনায় কাঁচা গাজর অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। কাঁচা গাজর খেলে কী কী উপকার পাওয়া যায়, তা জেনে নেওয়া যাক-

  • প্রতিদিন কাঁচা গাজর খেলে দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। এতে থাকা উপকারী উপাদান শরীরে ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্য ধরে রাখে। হঠাৎ মেজাজ পরিবর্তনের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
কাঁচা-গাজর-খেলে-কি-হয়
  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন গাজরের রস খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে বলে। কারণ, এটি শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। যদি কেউ ব্রণ কিংবা অ্যাকনের সমস্যায় ভোগেন, গাজরের রস তাদের জন্য খুবই উপকারী।
  • এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। প্রতিদিন কাঁচা গাজর খেলে শরীর সুস্থ থাকে।
  • কাঁচা গাজরে রয়েছে, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, মিনারেল ও ফাইবার। ভিটামিন-্রএ এর অভাবে জেরোফথালমিয়া হতে পারে। যা চোখের একটি রোগ। গাজর খেলে এই সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
  • তাছাড়া কাঁচা বা রস করে গাজর খেতে পারেন। তবে, ক্যান্সার রোগীর সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে সর্বদা জৈব এবং খোসা ছাড়ানো গাজর বেছে নেওয়া উচিত।

গাজর খেলে কি মোটা হয়? চলুন জানি

গাজর খেলে কি মোটা হয়?  হ্যাঁ, গাজর খেলে মোটা হওয়া সম্ভব, কিন্তু বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, গাজরের ক্যালরির ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম। কেক এবং আইসক্রিমের তুলনায় আপনাকে অনেক বেশি গাজর খেতে হবে। বাস্তবে, গাজর দিয়ে ওজন বাড়ানো সম্ভবত বেশ কঠিন হবে।

আপনি যদি নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে গাজর খান অর্থাৎ অতিরিক্ত পরিমাণে গাজরের হালুয়া বা অতিরিক্ত তেল-চিনি যুক্ত খাবার খান তাহলে ওজন বাড়তে পারে। কারণ, তখন ক্যালোরি বেড়ে যায়। এতে করে আপনার ত্বক কমলা রঙের হয়ে যাবে, যা আপনি স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার হতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ গমের রুটি খাওয়ার উপকারিতা-গমের লাল আটার ‍রুটি

গাজর খেলে কি রক্ত তৈরি হয়?

গাজর সরাসরি রক্ত তৈরি না করলেও, এটি রক্ত এবং রক্ত ​​প্রবাহের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি সবজি। গাজর আমাদের দেহের রক্তকে পরিশোধন করে থাকে এবং দেহ থেকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেল দূর করতে সাহায্য করে। কিন্তু রক্ত তৈরি হয় না। আর এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে ও সোডিয়ামের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।

এতে প্রচুর ভিটামিনস, মিনারেলস যেমন-পটাশিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (যেমন-বিটা-ক্যারোটিন) থাকে, যা সামগ্রিক রক্ত ​​ও হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

রাতে গাজর খেলে কি হয়? জানুন-

প্রতিদিন রাতের বেলায় গাজর খেলে আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, কারণ এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন যা ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত হয়, এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। খাওয়ার পরপরই ঘুমানো উচিত নয়, একটু সময় নিয়ে ঘুমালে হজম ভালো হয়।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রাতের বেলায় গাজর খেলে ঘুম ভালো হয়।

তাছাড়া, এতে থাকা ভিটামিন-এ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে বা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে।

তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ, অতিরিক্ত খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরো পড়ুনঃ দৈনিক তিন বেলা ভাত খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

গাজর খেলে কি এলার্জি হয়? জানা দরকার!

গাজর খেলে কি এলার্জি হয়? এর উত্তরটি যতই হাস্যকর মনে হোক না কেন, হ্যাঁ, গাজরে এলার্জি আছে। কারণ হল সবজিটিতে উচ্চ মাত্রার এলার্জিনিক কার্যকলাপ রয়েছে। এটি সাধারণত পরাগরেণু এলার্জি (বার্চ, ড্যান্ডেলিয়ন ইত্যাদি) ভোগা লোকদের প্রভাবিত করে। এর কারণ হল গাজরে এমন প্রোটিন থাকে যা পরাগরেণুর মতোই।

তাছাড়া গাজরের এলার্জির কারণগুলি ব্যক্তিগত অসহিষ্ণুতা বা বংশগতিও হতে পারে। অনেক সময় কাঁচা গাজর খাওয়ার পরে এলার্জি দেখা দেয়।

গাজরের এলার্জির কিছু প্রধান লক্ষণসমূহঃ

  • শ্লেষ্মা ঝিল্লি, ঠোঁট এবং জিহ্বার ফোলাভাব দেখা দেয়
  • নাক বন্ধ হওয়া, এলার্জিক রাইনাইটিস
  • কাশি এবং হাঁচি হওয়া
  • মুখে জ্বালাপোড়া করা
  • চুলকানি এবং একজিমা দেখা দেওয়া
  • পেট ব্যথা করা
  • বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া
  • কনজাংটিভাইটিস এবং
  • ক্যারোটিন জন্ডিস দেখা দেওয়া।

এবং ডাক্তাররা শিশুদের বিশেষ সতর্কতার সাথে কিছু খাবার দেওয়ার পরামর্শ দেন (অথবা একেবারেই না দেওয়ার পরামর্শ দেন)। যেমন, গাজর এর মধ্যে অন্যতম।

আবার, বিশেষজ্ঞরা গাজরের রসের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন, যা মায়েদের প্রিয়। কারণ এটি কেবল ভিটামিন সমৃদ্ধই নয়, আপনার সন্তানের জন্য অপ্রয়োজনীয় ঝামেলাও বয়ে আনতে পারে।

আরো পড়ুনঃ শীতে সুস্বাদু পিঠা পুলির উৎসব যা বাংলার ঐতিহ্য

পোস্টের শেষকথাঃ প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়

পরিশেষে, ‘প্রতিদিন গাজর খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়’ শিরোনামের এই আর্টিকেলটি আলোচনা করে আমরা বলতে পারি যে, দৈনন্দিন জীবনে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবজি হিসেবে গাজর রাখতে পারেন। কারণ, এটি অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর যা আর্টিকেলটির আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে।

বিশেষ-কথা: এই পোস্টে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞান এবং তথ্যের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে এবং আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সর্বদা একজন যোগ্যতাসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url