বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,

প্রিয় পাঠক- আসসালামু আলাইকুম, জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। খাদ্য গ্রহণ একটি প্রাকৃতিক কার্যক্রম। তাছাড়া খাদ্য মানুষের প্রধান মৌলিক চাহিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আর খাদ্য গ্রহণ আমাদের বয়স অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপের হয়ে থাকে বা হওয়া উচিত।

বয়স-অনুযায়ী-আমাদের-খাদ্যাভ্যাস

কারণ, শিশু বয়স থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। তাই আজকে আমাদের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হচ্ছে, ‘বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?’

পেজ ‍সূচিপত্রঃ বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার থাকাটা আবশ্যক হলেও কোন বয়সে কোন ধরনের পুষ্টি শরীরে প্রয়োজন আর কতখানি, তা জেনে খাদ্য তালিকা তৈরি করা জরুরী।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস তার দৈনিক পরিশ্রম ও দেহের ওজনের উপর নির্ভর করে। খাবার পুষ্টিকর করার জন্য মোট ক্যালরির ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রকার কার্বোহাইড্রেট থেকে, ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ স্নেহ বা চর্বি  জাতীয় খাবার থেকে এবং ২০ থেকে ২৫ শতাংশ প্রোটিন  বা আমিষ জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন - আমাদের যা যা করণীয়

সাধারণত একজন কর্মজীবী পুরুষের প্রতিদিন তার প্রতি কেজি ওজনের জন্য কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ ক্যালরি গ্রহণ করতে হয়।। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত। শিশুদের ক্ষেত্রে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ প্রায় ১০০০। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ২০০০ থেকে ২৫০০ এবং ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের জন্য ২০০০থেকে ২২০০ ক্যালরি প্রয়োজন হয়।

বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত? তা নিয়েই আজকের আলোচনা-

প্রথমে আসা যাক,

৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

জন্মের পর থেকে শুরু করে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য সর্বোত্তম খাদ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জন্মের এক ঘন্টা পর থেকে শুরু করে প্রথম ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়। মায়ের বুকের দুধ ব্যতিত অন্য খাবার খাওয়া যাবে না। কারণ, জন্মের পরপরই যে ঘন, ঈষৎ হলুদাভ শালদুধ বের হয় তাতে অ্যান্টিবডির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা শিশুকে জীবনের প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় মায়েদের ১ম ৩ মাস - বিশেষ কিছু খাবারের পরামর্শ

-মাস-বয়স-পর্যন্ত-শিশুর-দৈনিক-খাদ্যাভ্যাস-কি-হওয়া-উচিত

তাছাড়া, মায়ের বুকের দুধে প্রোটিন, স্নেহ বা চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিবডি সহ শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের ঘুমের মধ্যে ঝাঁকুনি কিসের লক্ষণ ঘরোয়া সমাধান ও পরামর্শ

তাই মায়ের বুকের দুধে এসব পুষ্টি উপাদান তৈরি করতে তাদের বিভিন্ন ধরনের সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। যেমন-

  • বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক-সবজি ও ফল-মূল খেতে হবে।
  • শর্করার জন্য ভাত, রুটি, ওটমিল, যবের ছাতু ইত্যাদি খেতে হবে।
  • দুধ, দই, দুধের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন- পনির, ছানা, পায়েশ ইত্যাদি খেতে হবে।
  • স্বাস্থ্যকর স্নেহ জাতীয় খাবার যেমন- বিভিন্ন ধরনের বীজ, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ইত্যাদি।
  • বিশুদ্ধ পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে হবে।

তবে যে কোন ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় খাওয়া ও পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, এসব খাবার ও পানীয়তে বিভিন্ন ধরনের রসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ থাকে যা শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

৬ মাস ১ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাদ্যাভ্যাস জেনে নিন

শিশু বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদদের মতে, শিশুর বয়স যখন ৬ মাস থেকে এক বছর হয় এ সময় মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি তাদেরকে অতিরিক্ত খাবার দেওয়া উচিত। যেমন- 

মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি আপনার শিশুকে অতিরিক্ত খাবার হিসেবে, ভাত-ডাল, খিচুড়ি, হালুয়া, ডিম, মাছ, মাংস, সবুজ শাক-সবজি, পাকা ফল হিসেবে- পেঁপে, কাঁঠাল, কলা, আম খেতে দিন। বুকের দুধ খেলে ৩ বার খাবার দিন।আর বুকের দুধ না খেলে ৫ বার খাবার দিন।

আরো পড়ুনঃ জন্মের পর শিশুকে টিকাদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ- বিস্তারিত আলোচনা

সমস্ত খাবার অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নরম করে রান্না করতে হবে। বিশেষ করে, মাছ, মাংস, ডাল ভালো করে সিদ্ধ করে ব্লেন্ড করে শিশুকে খাওয়াতে হবে। ডিম সিদ্ধ করে শুধু কুসুম অংশটুকু শিশুকে খাওয়াতে হবে।

১ বছর থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাবার

এসময় আপনার শিশু যতবার বুকের দুধ খেতে চায় ততবার খেতে দিন। পাশাপাশি পরিবারে যেসব খাবার খাওয়া হয় তার মধ্যে থেকে পুষ্টিকর খাবার বেছে নিয়ে দিনে ৫ বার খাওয়ান। যেমন- মাছ, মাংস, ভাত, ডাল, খিচুড়ি, ডিম, সবুজ শাক-সবজি, রঙিন ফল-মূল খাওয়ান। কারণ,  এই সময় ধীরে ধীরে শিশুর ওজন বাড়তে শুরু করে।

আরো পড়ুনঃ শীতে শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা - বিস্তারিত আলোচনা

২ থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাদ্যাভ্যাস

দুই থেকে পাঁচ বছর বয়স শিশুর দৈনিক খাবারে অনেকটা পরিবর্তন আনতে হয়। কারণ এ সময় আপনার শিশুর দেহের পরিবর্তন হতে থাকে পাশাপাশি ওজনও বাড়তে থাকে এবং হাড় শক্ত হতে থাকে। কারণ, লাফালাফি, দৌড়াদৌড়ি বিভিন্ন ধরনের মনচাহী কাজ করে থাকে ফলে অতিরিক্ত খাদ্যের প্রয়োজন দেখা দেয়। তাছাড়া এ সময়টাতে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া একে বারেই বন্ধ হয়ে যায়।

দৈনিক শিশুদের যে সমস্ত খাবার খাওয়ানো উচিত এ বয়সে তা নিচে আলোচনা করা হলো-

প্রতিদিন সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম দৈনিক সম্ভব না হলেও একদিন পরপর অবশ্যই খেতে হবে। অডমিল, পাউরুটি, ভাত, গমের রুটি বা ময়দা রুটি এবং বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফল-মূল যেমন, কলা, পেয়ারা, আঙ্গুর, আপেল, ডালিম, আম ইত্যাদি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা উচিত।

থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাদ্যাভ্যাস জেনে নিন

৬ থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে বা খাবার তালিকায় পরিবর্তন আনা খুবই জরুরী। কারণ, এসময় শিশুর শারীরিক গঠন ও মাংস বেশি শক্তিশালী হতে শুরু করে ফলে প্রচুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হয়। যেমন-

  • প্রতিদিন সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে।
  • মাছ, মাংস, দুধ, ডিম দৈনিক খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে। অডমিল, পাউরুটি, ভাত, গমের রুটি বা ময়দার রুটি রাখা উচিৎ
  • বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফল-মূল যেমন, কলা, পেয়ারা, আঙ্গুর, আপেল, ডালিম, আম ইত্যাদি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা উচিত।

১৩ থেকে১৮ বছর বা কিশোর বয়সে দৈনিক খাদ্যাভ্যাস

১৩ থেকে১৮ বছর বা কিশোর বয়সে প্রতিটা কিশোর-কিশোরীর  দৈনিক খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সময় তাদের বিকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুষম খাদ্যের প্রয়োজন দেখা দেয়। যেমন-

আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার: মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বিভিন্ন রকম ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য, সয়াবিন ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে হবে। ফলে দেহের বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয় পূরন, হরমোন ও এনজাইম উৎপাদন হবে।

শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার: ভাত, রুটি, ওটমিল, যবের ছাতু ইত্যাদি খেতে হবে। ফলে দেহে তাপশক্তি উৎপাদন ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার: স্বাস্থ্যকর চর্বি, ডিম, দুধ, তেল, তেল জাতীয় খাবার, সয়াবিন, সরষে, তিল, বাদাম নারকেল, ঘি মাখন ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। এসব খাবার দেহের তাপ শক্তি উৎপাদন করবে এবং শক্তি সঞ্চিত করবে এবং দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ করবে।

 ভিটামিন জাতীয় খাবার: বিভিন্ন সবুজ শাক-সবজি, রঙিন ফল-মূল খেতে হবে। এতে করে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।

খনিজ সমৃদ্ধ খাবার: সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে শাক-সবজি, ফল-মূল দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার, বাদাম বিভিন্ন ধরনের বীজ খেতে হবে। কারণ, এতে রয়েছে, , ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক আয়রন যা দেহের পেশী শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, হাড় ও দাঁত মজবুত করে।

এবং বিশুদ্ধ পানি: ১৩ থেকে১৮ বছর বা কিশোর বয়সে দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে বিশুদ্ধ পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার এবং ফাস্টফুড থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিত তিন বেলা খাবার গ্রহণ করতে হবে।

প্রাপ্ত বয়স্কদের দৈনিক খাদ্যাভ্যাস চলুন জেনে নেয়া যাক

পুষ্টিবিদ ফারাহ মাসুদা বলেন, “পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির সূষম খাদ্য বা পুষ্টির চাহিদা তার দৈনিক পরিশ্রম, দেহের ওজন ও স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। যারা অফিসে কাজ করেন অর্থাৎ চলাফেরা কম করা হয় তাদের তুলনামূলকভাবে কম ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত।”

তিনি জানান, একজন পুর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির কতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত তা তার শারীরিক পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে। আর প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে ব্যক্তির ওজনের ওপর।

একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের খাদ্য তালিকায় সুষম খাবার বা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকা উচিত। যেমন- শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। দৈনিক খাদ্যতালিকায় মাছ বা মাংস, শস্যদানা (ভাত/আটা), ডাল, সবুজ শাক-সবজি, ফল-মূল এবং দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

একজন ষাট কেজি ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক শক্তির প্রয়োজন প্রায় ২৫০০ থেকে ২৮০০ কিলো ক্যালরি। আর খাবারের মোট ক্যালোরির ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ নানা রকমের কার্বোহাইড্রেইট থেকে, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ থেকে এবং বাকিটুকু প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করা উচিত।

প্রাপ্ত বয়স্কদের দৈনিক খাদ্যাভ্যাসের বিভিন্ন খাদ্যের পরিমাণ নিম্নে দেওয়া হলো-

  • মাছ ও মাংস- ১০০ থেকে ১২৫ গ্রাম
  • ডিম- কমপক্ষে ১টি
  • ভাত- ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম
  • ডাল- ৫৫ থেকে ৬৫ গ্রাম
  • আটা- ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম
  • আলু- ১০০ গ্রাম
  • সবুজ শাক-সবজি- ১০০ থেকে ১২৫ গ্রাম
  • ফল-মূল- ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম
  • স্বাস্থ্যকর চর্বি বা জাতীয় খাবার- ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম
  • শর্করা বা চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার- ৩০ থেকে ৩৫ গ্রাম।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা হ্রাস পায়। এ কারণে দেহের ওজন কমে যেতে পারে এবং পুষ্টিহীনতা দেখা দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে বাদাম, দই ও সেদ্ধ ডিম খেতে হবে। তাছাড়া খাবারের গন্ধ, স্বাদ ও অনুভূতি হ্রাস পেতে থাকে। ফলে খাবার কম আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। এ জন্য খাবারে বৈচিত্র্য রাখতে হবে এবং পছন্দ অনুসারে খাবার খেতে হবে।

বয়স বেশি হলে দাঁত পড়ে যেতে থাকে ফলে খাবার খেতে ও চিবাতে অসুবিধা হতে পারে। তাই খাবার হতে হবে নরম ও সহজপাচ্য। অতিরিক্ত চিনি, লবণ ও চা, কফি, সফট ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলতে হবে।

প্রশ্ন ও উত্তরঃ বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

১. প্রশ্ন:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে কি পরিমাণ ফল খাওয়া উচিত?

উত্তর:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে প্রায়  ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম গ্রাম পরিমাণ ফল খাওয়া উচিত। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে প্রায় ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।

২. প্রশ্ন:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে কি পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার দরকার হয়?

উত্তর:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার দরকার হয়।

৩. প্রশ্ন:
পুষ্টিকর খাবার কোনগুলো?

উত্তর:
পুষ্টিকর বা সুষম খাবার যেমন - মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, দই, ডাল, বাদাম ও বিভিন্ন ফল ও সবজি। এইগুলোর সমস্ত কিছুই পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।

৪. প্রশ্ন:
কোন খাবারে সবচেয়ে বেশি ক্যালরি পাওয়া যায়?

উত্তর:
যে সমস্ত খাবারের সবচেয়ে বেশি ক্যালরি পাওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে- বাদাম, বাদামের মাখন, ঘি, তেল, দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরি পনির এবং ফলের মধ্যে এভোকাডো।

উপসংহারঃ বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?

পরিশেষে ‘বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্য অভ্যাস কি হওয়া উচিত?’  শিরোনামের আর্টিকেলটি আলোচনা করে আমরা বলতে পারি যে, জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অর্থাৎ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিন খাদ্য গ্রহণ করতেই হয়। আর এই খাদ্য গ্রহণ- বয়স অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট তালিকা থাকা অবশ্যই উচিত। সর্বোপরি একজন স্বাস্থ্য চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে দৈনিক খাবারেরএকটি তালিকা তৈরি করে নেওয়া উচিত।

বি: দ্র: এই আর্টিকেলের সমস্ত ডাটা বিভিন্ন ওয়েবসাইট মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করে আপনারেদ মাঝে উপস্থাপন করেছি মাত্র। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দোয়া করি ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url