দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক- আমাদের বেঁচে থাকার জন্য দৈনিক বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করতে হয়। তাই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য নানারকম খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদানগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া উচিত। দৈনিক খাবারে- স্বাস্থ্যকর পুষ্টির উপস্থিতি দেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, এমনকি আমাদের মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাই দৈনিক সুষম বা পুষ্টিকর খাবারের একটি তালিকা থাকা খুবই প্রয়োজন। আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ‘দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন’
পেজ সূচিপত্রঃ দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
- দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
- দৈনিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের উপকারিতা
- দৈনিক যেসমস্ত পুষ্টিকর শাক-সবজি খাওয়া উচিত
- দৈনিক যেসমস্ত পুষ্টিকর ফল-মূল খাওয়া উচিত
- দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় যা যা থাকা উচিত
- শেষ-কথাঃ দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
যে সমস্ত খাবারের মধ্যে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য উপাদান পরিমাণমত বিদ্যমান সেসমস্ত খাদ্যকেই এক কথায় সুষম খাদ্য বলা হয়। অর্থাৎ মানবদেহের প্রয়োজণীয় ও পরিমাণমত ছয়টি উপাদানযুক্ত খাবারকেই সুষম খাদ্য বলা হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত সুষম খাবার আমাদের দেহের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের যে চাহিদা থাকে তা পূরণ করে।
ভিন্ন ভিন্ন বয়সের মানুষ তাদের চাহিদা ও শারীরিক পরিশ্রম অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। প্রতিটি খাবারের পুষ্টিগুণ মান সমান হয় না। তাই আমাদের শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে শরীরের সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলে এবং সুস্থ থাকা যায়। সুষম খাবারের মাধ্যমে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন, শক্তি উৎপাদনসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জিত হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ সকালের নাস্তা না খেলে কি হয় - বিস্তারিত জানুন
আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টি কোন বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের অনেকেই দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পূরনের জন্য পুষ্টিকর খাবারগুলো সঠিকভাবে বাছাই করতে পারে না।
যে ছয়টি সুষম খাদ্য উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে থাকে সেগুলো হলো:
- প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার
- শর্করা জাতীয় খাবার
- চর্বি বা স্নেহ জাতীয় খাবার
- খনিজ লবণ
- ভিটামিন ও
- বিশুদ্ধ পানি।
দৈনিক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের উপকারিতা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে: পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার, বিশেষ করে ভিটামিন সি এবং ই-সমৃদ্ধ খাবার, সেইসাথে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রোগ প্রতিরোধ অর্থাৎ আপনার দেহের ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং আপনার শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
- দেহে রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে: রক্ত মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর একটি। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ফল-মূল, সামুদ্রিক খাবার যেমন ওয়েস্টার, ক্লামস অথবা শুকনো ফল যেমন- কিসমিস, এপ্রিকট বা খুবানি, খেজুর ইত্যাদি খেলে রক্তর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দ্রুতগতিতে বেড়ে থাকে।
- দেহের তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে: প্রোটিন বা আমিষ, শর্করা বা চিনি এবং চর্বি বা স্নেহজাতীয় খাদ্য দেহের তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে থাকে। শর্করা বা চিনি জাতীয় খাবার হলো দেহের প্রধান জ্বালানি, যেটা দেহের তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করে। আমিষও তাপ শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। স্নেহজাতীয় খাবার সবচেয়ে বেশি শক্তি উৎপাদনকারী করে থাকে। বি-ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার শক্তি বিপাকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- অপুষ্টিজনিত রোগ দুরীকরনে: অপুষ্টিজনিত রোগ দুরীকরনে পুষ্টিকর খাবার বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টির অভাবে মানবদেহে নানারোগ বাসা বাধে। আর এ সমস্ত রোগগুলিকেেই অপুষ্টিজনিত রোগ বলা হয়।
- হজমে সহায়তা করে: নানা ফল-মূল, শাক-সবজি এবং গোটা শস্যের মতো পুষ্টিকর খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান পাওয়া যায়, যা স্বাস্থ্যকর হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
- মানসিক বিকাশ ঘটায়: শিশুকাল থেকেই মানুষের মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে আয়োডিন, প্রোটিন বা আমিষ ও ভিটামিন জাতীয় খাবার। পুষ্টিকর খাবারের কার্যকারীতা শুধু দেহের উপরেই পড়ে না বরং মনের উপরও সমানভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া মানসিক অবসাদ দূরীকরণ ও সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই।
- দেহের অবসাদ ও ক্লান্তি দূরীকরনে: দেহের অবসাদ ও ক্লান্তি দূরীকরনে পুষ্টিকর খাবারের উপকারিতা অপরিসীম ও অগণিত। যদি সঠিকভাবে পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করা হয় তাহলে মানসিক অবসাদ ও দৈহিক ক্লান্তিবোধ অনেকাংশে লাঘব সম্ভব। পুষ্টিকর খাবারের উপাদান সমুহের মধ্যে, খনিজ ও আমিষ জাতীয় খাবার দেহের অবসাদ ও ক্লান্তি দুরীকরনে সহায়তা করে থাকে।
দৈনিক যেসমস্ত পুষ্টিকর শাক-সবজি খাওয়া উচিত
শাক-সবজি যে পুষ্টির এক বিশাল উৎস এটা এখন প্রায় সব মানুষেরই জানা। তারপরও অনেকের ধারণা হলো, পুষ্টিকর খাবার মানেই মাছ-মাংস কিংবা অন্যান্য দামী খাবার। দৈনিক খাবারের তালিকায় পুষ্টি সমৃদ্ধ বিভিন্ন শাক-সবজি থাকাটা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী।
নিম্নে পুষ্টিকর কিছু শাক-সবজির নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:
- ব্রোকলি: ব্রোকলি হলো এমন একটি সবজি যা মানব দেহের ক্যানসার প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যালসের সমৃদ্ধ বিশাল উৎস।এটি আপনাকে জটিল Bladder বা মূত্রাশয়ের ক্যানসার থেকেও রক্ষা করতে পারে।
- বিট: বিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ। এ সবজিতে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি থাকে এর সবুজ অংশ বা পাতায়। এর পাতা বা ডাটা রান্না করে খাওয়া যায়। এটি আপনি চাইলে আচার করেও খেতে পারেন। বিট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার ও প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।
- ভূট্টা: ভুট্টায় রয়েছে উচ্চ পুষ্টিগুন যেমন- ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ডায়েটারি ফাইবার ও আরো কিছু পুষ্টি। নিয়ম করে দৈনিক ভুট্টার দানা খেলে আপনি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। যেমন- হার্টের রোগ, রক্তনালীর রোগ, ডায়াবেটিস এবং মুটিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এর দানার পাশাপাশি মোচাও খেতে পারেন।
- রেড ক্যাপসিকাম: রেড ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা আপনাকে দৈনিক ভিটামিন-সি এর ১৫০ শতাংশ সরবরাহ করতে পারে।
- পালংশাক: বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকের ভিতর পালংশাক হচ্ছে সবচেয়ে পুষ্টি সমৃদ্ধ শাক। সবচেয়ে জনপ্রিয় শাকের মধ্যে অন্যতম পালংশাক- আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং কে-এর চমৎকার উৎস।প্রতিদিন এটি আমরা সহজে রান্না করে খেতে পারি। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান চোখের স্বাস্থ্য অর্থাৎ চোখে সুস্থতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- পুঁইশাক: পুইশাক একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ শাক। এতে রয়েছে ফাইবার ও ভিটামিন এ। দৈনিক পুঁইশাক খেলে আমাদের দেহের হজমশক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- মেথিশাক: মেথিশাক খেতে একটু তেতো সাধের যা ভেজে বা তরকারি হিসেবেও খাওয়া যায়। যাদের ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তাদের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে, গর্ভবতী মায়েদের দুধ উৎপাদন বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
দৈনিক যেসমস্ত পুষ্টিকর ফল-মূল খাওয়া উচিত
আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় ফল-মূল অন্তর্ভুক্ত করা কেবল সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে না বরং উজ্জ্বল ত্বকের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে। ফলে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পানি, যা আপনার ত্বককে পুষ্টি, হাইড্রেট এবং ক্ষতি থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে।
আমরা যেসব ফল খেয়ে থাকি তাদের প্রত্যেকটিতে কিছু না কিছু পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। তবে কিছু ফলে পুষ্টির পরিমাণ এত বেশি যে এগুলোকে সুপারফুডও বলা হয়ে থাকে।
নিম্নে পুষ্টিকর কিছু ফল-মূল নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:
- পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, এবং ভিটামিন-ই যা ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা পুষ্টিযোগায়। তাছাড়া এতে রয়েছে, এক্সফোলিয়েটিং সমৃদ্ধ প্যাপেইন নামক একটি এনজাইম। এটি ত্বককে নরম ও মসৃণ করে থাকে।
- কলা: দৈনিক খাওয়া যায় এরকম পুষ্টিকর ফল এর মধ্যে কলা খাদ্য তালিকার সবার উপরে থাকে। এতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম ও আঁশ যা আমাদের দেহকে দীর্ঘ সময় শান্তিপূর্ণ রাখতে পারে। কলা আবার স্নেক হিসেবেও খাওয়া যায়।
- আম: আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ এবং সি থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় বিটা-ক্যারোটিন যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রকে শক্তিশালী করে ও চোখের দৃষ্টিকে তীক্ষ্ণ রাখে।আম একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অনেকটা পূরণ করে থাকে।
- আনারস: আনারস একটি ব্রোমিলেন সমৃদ্ধ ফল। বায়োমেডিক্যাল রিপোর্টসে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী এতে থাকা প্রদাহ বিরোধী এনজাইম যা আমাদের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- আপেল: আপেলে প্রচুর কোয়ারটেচিন থাকে। এই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টটি মস্তিষ্কের কোষের ডিজেনারেশন বা ক্ষয়সাধন প্রতিরোধ করে থাকে। আবার আপেল খেলে ব্লাড প্রেশার কমে। এর খোসায় বিদ্যমান ফ্লেভানয়েড হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- আঙুর: আঙুর হলো বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও প্রাচুর্যপূর্ণ স্বাস্থ্যকর ফল। এটি পটাশিয়ামের উৎস যেটি মাংসপেশীর যন্ত্রণাদায়ক সংকোচন প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
- তরমুজ: তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ত্বককে হাইড্রেট করে এবং আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন-এ এবং সি কোষের পুনর্জন্ম বা পুনর্গঠনে উৎসাহিত করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করে।
- কিউই: কিউই হলো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আরেকটি ফল, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা ক্যানসার থেকে সুরক্ষিত রাখে ও চোখের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটায়। কিউইতে থাকা ভিটামিন-সি ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে, কালো দাগ এবং রুক্ষতা কমাতে সাহায্য করে।
- কমলালেবু: কমলালেবুতেও রয়েছে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন-সি যেটি কোলাজেন সংশ্লেষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা ফোলেট- নতুন ত্বকের কোষ তৈরি করতে এবং দূর্বল কোষগুলিকে মেরামত করতে সাহায্য করে, যা ত্বককে মসৃণ করে তোলে।
- অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি তবে স্বাস্থ্যকর। এতে আরো রয়েছে ভিটামিন-সি এবং ই। অ্যাভোকাডো ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় যা যা থাকা উচিত
দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা অনুসরন করলে স্বাভাবিক মাত্রায় খাবার গ্রহনেও অধিক মাত্রায় খাদ্যপ্রান ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
- প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার: সাধারণত মাছ, মাংস, ডিম পুষ্টিকর খাবার হিসেবে অতুলনীয়। দৈনিক আপনার খাবারের তালিকায় অন্তত ১৩০ থেকে ৩৩০ গ্রাম মাছ, মাংস, ডিম রাখুন। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবারের বিকল্প হতে পারে না। তাই দেহের পুষ্টির যোগান দিতে আমিষ জাতীয় খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখুন।
- স্বাস্থ্যকর চর্বি জাতীয় খাবার: দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকার চর্বি জাতীয় খাবার হচ্ছে সুষম খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনার সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ মিলি লিটার তেল ও চর্বি জাতীয় খাবার নিশ্চিত করুন।
- শর্করা জাতীয় খাবার: শর্করা জাতীয় খাবার হচ্ছে সুগার বা চিনি জাতীয় খাবার। দেহের সুস্থতার জন্য শর্করার প্রয়োজন আছে তবে সীমিত। একজন সুস্থ মানুষের জন্য দৈনিক ২০-২৫ গ্রাম শর্করাই যথেষ্ট। তবে বয়স অনুযায়ী শতকরা পরিমাণ কম বেশ হতে পারে।
- দানাদার খাবার: দানাদার খাবার যেমন-চাল, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি। দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রায় ২৫০ থেকে ৪৫০ গ্রাম দানাদার খাবার গ্রহণ করা উচিত। এসব খাবারে প্রচুর পরিমান ভিটামিনও রয়েছে। যা দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।
- ডাল জাতীয় খাবার: ডাল এমন একটি খাবার যেটা সব বয়সের মানুষ প্রতিদিন প্রতিবেলাই খেতে পারে। ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা দেহের বিভিন্ন খাদ্য উপকরণের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। দৈনিক কমপক্ষে ৪০ থেকে ৬০ গ্রাম ডাল জাতীয় সুষম বা পুষ্টিকর খাবার আপনার খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রাখুন।
- দুধ ওদুধ জাতীয় খাবার: বলা হয়ে থাকে দুধে সব ধরনের খাদ্য উপাদান বিদ্যমান। সুস্থ থাকতে দুধের কোন বিকল্প নেই। দুধের বিকল্প হিসেবে দুধ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরণের খাবারও খেতে পারেন। যেমন- দই, ফিরনি, সেমাই, পায়েশ, ইত্যাদি। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের পুষ্টিকর খাবারের তালিকা হিসেবে দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার দৈনিক ১৫০ থেকে ৪৫০ মিলি রাখুন।
- বিভিন্ন ধরনের ফল-মূল: আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় ফল-মূল অন্তর্ভুক্ত করা কেবল সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে না বরং উজ্জ্বল ত্বকের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে। ফলে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পানি, যা আপনার ত্বককে পুষ্টি, হাইড্রেট এবং ক্ষতি থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে। প্রতিদিন অন্তত ১২ থেকে ২২০ গ্রাম ফল খাবার হিসেবে গ্রহন করা উচিৎ।
- বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি: শাক-সবজি যে পুষ্টির এক বিশাল উৎস এটা এখন প্রায় সব মানুষেরই জানা। তারপরও অনেকের ধারণা হলো, পুষ্টিকর খাবার মানেই মাছ-মাংস কিংবা অন্যান্য দামী খাবার। দৈনিক খাবারের তালিকায় পুষ্টি সমৃদ্ধ বিভিন্ন শাক-সবজি থাকাটা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী। আসলে মানুষের দেহের জন্য শাকসবজির গুরুত্ব লিখে প্রকাশ করার মতো নয়। প্রতিটি মানষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাকসবজি আবশ্যকীয়। প্রাপ্তবয়স্ক একজন ব্যাক্তির দৈনিক ৩৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম শাক-সবজি খাওয়া উচিত।




গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url