সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
প্রিয় পাঠক- আসসালামু আলাইকুম, নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখতে অর্থাৎ আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই সুষম খাদ্য অর্থাৎ পুষ্টিকর খাদ্য। আর এই পুষ্টিকর খাদ্যের প্রধান উৎস হচ্ছে দুধ। বিভিন্ন পুষ্টিবিদদের মতে, ‘দেহকে সুস্থ ও ফিট রাখতে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের ভূমিকা অতুলনীয় ও অপরিহার্য।’
তাই আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয় হলো- ‘সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন’।
পেজ সূচিপত্রঃ সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
- সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
- সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ পান করার গুরুত্ব জেনে নিন
- স্বাস্থ্য ও মেধা-শক্তির জন্য প্রতিদিন দুধ খান
- গরুর দুধ খাওয়ার উপকারিতা
- গরুর দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
- দুধ কি জাতীয় পদার্থ জানুন
- ঠান্ডা দুধ খেলে কি গ্যাস হয় জেনে নিন
- এক গ্লাস দুধে কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে দেখে নিন
- মেধাবী জাতি গঠনে দুধ পানের ভূমিকা কি? জানা দরকার
- পোস্টের ইতি-কথাঃ সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারের উপকারিতা নিয়ে বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের সাবেক প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান পুষ্টিবিদ অধ্যাপক আখতারুন নাহার বলেন, ‘সুষম খাবারের কথা বলতে হলে প্রথমেই আসে দুধের কথা। দুধ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ খাবার। মানবজীবনের শুরু হয় দুধ দিয়ে। শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের জন্য দুধ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। যেসব শিশু জন্মের পর ঠিকভাবে দুধ পান করতে পারে না, তারা অধিকাংশ সময় নানা ধরনের অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগে।’ সুস্থ ও ফিট থাকতে প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ পান করা উচিত।
দুধে রয়েছে, অপরিহার্য উপাদান ল্যাকটোজ, যা দৈহিক গঠন ও মেধা বিকাশে সাহায্য করে। এটি মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার মূল উপাদান। আর দুধের সবচেয়ে উপকারী দিক হলো এর ক্যালসিয়াম। মানুষের হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম খুবই জরুরি। এছাড়াও দুধে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ যেমন-
- ক্রোমিয়াম
- আয়রন
- কোবাল্ট
- ম্যাঙ্গানিজ
- কপার
- জিংক ও
- আয়োডিন।
২০০১ সাল থেকে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে- ১লা জুন ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।
আরো পড়ুনঃ দৈনিক পুষ্টিকর খাবার কি হওয়া উচিত - বিস্তারিত জানুন
সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ পান করার গুরুত্ব জেনে নিন
প্রকৃতি থেকে পাওয়া একটি সম্পূর্ণ বা পরিপূর্ণ খাদ্য হচ্ছে দুধ। যুগ যুগ ধরে এটি মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এটা শুধু একটি পানীয় নয়, বরং প্রয়োজনীয় প্রায় সকল পুষ্টির একটি উৎস। মানবদেহকে সুস্থ রাখতে এর গুরুত্ব অতুলনীয়।
- নিজেকে সুস্থ থাকার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মকেও শক্তি, বুদ্ধি ও সুস্থতার সঙ্গে গড়ে তুলতে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ পান করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা যারা নিয়মিত ও পরিমিত দুধ পান করি না তাদের জন্য পুষ্টিবিদদের পরামর্শ হলো, ‘হাজারো ব্যস্ততার ফাঁকে খুব সহজেই তারা ইউএইচটি দুধ পান করতে পারেন।’
- দেহে পর্যাপ্ত পানি থাকা বা বডি হাইড্রেটেড থাকা অত্যাবশ্যক। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি পরিবহন এবং বর্জ্য বের করে দেওয়ার জন্য এটি খুবই জরুরি।
- হাড় ও দাঁত শক্তিশালী রাখতে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধ এই অত্যাবশ্যক খনিজের সেরা উৎসগুলোর একটি। পাশাপাশি হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়া অস্টিওপরোসিস এবং দাঁতের নানা সমস্যা তৈরি হওয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে দুধ।
- তাছাড়া ক্যালসিয়াম- শৈশব ও কৈশোরে হাড়ের বৃদ্ধির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ বেড়ে ওঠার সময় দেহের হাড় মজবুত না হলে তা সারা জীবনের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
- দুধে রয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ পানি। ফলে আমাদের দেহে তরল বা পানির চাহিদা পূরণে এটি একটি খুবই ভালো উৎস। দেহে পর্যাপ্ত পানি থাকা বা দেহ হাইড্রেটেড থাকা অত্যাবশ্যক। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি পরিবহন ও বর্জ্য বের করে দেওয়ার জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খুবই জরুরি।
আরো পড়ুনঃ বয়স অনুযায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস কি হওয়া উচিত?
স্বাস্থ্য ও মেধা-শক্তির জন্য প্রতিদিন দুধ খান
দুধ হলো এমন একটি সুষম খাদ্য যা আমাদের দেহের স্বাস্থ্যরক্ষায় ও মেধা-শক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। দুধের মধ্যে পুুষ্টিকর খাদ্যের ছয়টি উপাদানই বিদ্যমান। যথা-
- কার্বোহাইড্রেট
- প্রোটিন বা আমিষ
- স্নেহ বা চর্বি
- ভিটামিন
- খনিজ লবণ ও
- পানি।
তাছাড়া দুধের মধ্যে এর সব উপাদানগুলোই সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান। আর এটি প্রকৃতি থেকে পাওয়া খাদ্য মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ‘যারা নিয়ম করে প্রতিদিন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন, তারা স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে পারেন। এমনকি, সুষম খাদ্য ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে তাদের ওজন কমার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।’
দুধের ইলেকট্রোলাইট- যেমন : পটাসিয়াম ও সোডিয়াম—শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাওয়ার অভ্যাস করাই যায়।
কেইউ মেডিক্যাল সেন্টারের ডায়াবেটিস ও নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারমান এবং গবেষণাটির সহ-লেখক ডেভরা সুলিভান জানান, ‘আমরা জানি, দুধ হাড়ের গঠন এবং পেশির গঠনের জন্য কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ মস্তিষ্কের জন্যও সমানভাবে কাজ করে।”
গবেষণায় আরো দেখা যায় যে, দুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে গ্লুটাথায়নের পরিমাণ বেড়ে যায়। গ্লুটাথায়ন মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিহত করে এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিপাকীয় প্রক্রিয়ার সময় প্রতিক্রিয়াশীল রাসায়সিক যৌগ থেকে মস্তিষ্কের যে ক্ষতি হয়, তা প্রতিহত করতে কাজ করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের ফলে মস্তিষ্কের আলঝেইমার, পারকিনসন ইত্যাদি রোগ হয়। নিয়মিত দুধ খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও কাজ করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন - আমাদের যা যা করণীয়
গরুর দুধ খাওয়ার উপকারিতা
গরুর দুধ শিশুকাল থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত প্রত্যেকটি মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে
একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গরুর দুধ প্রকৃতির দেওয়া একটি অমূল্য
খাবার। দুধে থাকা বিভিন্ন উপাদান যেমন- প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি,
ভিটামিন-বি১২, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি এই সমস্ত কিছু আমাদের দেহের বিভিন্ন
অঙ্গ-পতঙ্গের সুস্থতা রক্ষায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গরুর
দুধের উপকারিতা অপরিসীম।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে গরুর দুধ খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম। টাসিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে, যা উচ্চ রক্তচাপের একটি প্রধান কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত দুধ পান করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
- দূরে থাকা পটাশিয়াম হৃদ যন্ত্রের সুস্থতা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। তাছাড়া দুধে থাকা প্রোটিন বিশেষ করে, হুইপ্রোটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগের একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ।
- স্বাভাবিকভাবে কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে এসিডিটি বাড়ে। সাধারণত দুধ খেলে এসিডিটি কমে। কারণ, দুধের ক্যালসিয়াম ও ফসফেট অ্যাসিডকে প্রশমিত করে, যার ফলে পাকস্থলীর পিএইচ (pH) মান বৃদ্ধি পায় এবং অ্যাসিডিটি কমে। বিশেষ করে, যারা প্রায়শই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগে (GERD) ভুগছেন, তাদের জন্য নিয়মিত দুধ পান করা উপকারী হতে পারে।
- যাদের ঘুম কম হয় তাদের জন্য দুধ পান করা ভালো একটি উপায় হতে পারে। কারণ দুট্রিপ্টোফ্যান নামক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে, যা ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া গরম দুধ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, যা পরে ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং ঘুমের অনুভূতি আনে।
- দুধের মধ্যে উচ্চ মানের প্রোটিন থাকায় আমাদের দেহের পেশির গঠন ও মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে, বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দুধের প্রোটিন বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি সারকোপেনিয়া বা বয়সজনিত পেশী ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- দুধ মস্তিষ্কের স্বচ্ছ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২ যা মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, অর্থাৎ মেজাজ এবং জ্ঞানীয় কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গরুর দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
গরুর দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, আপনার দেহের চাহিদা অনুযায়ী আপনি যে কোন সময় দুধ খেতে পারেন তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হয় বা মেনে চলা উচিত। বিশেষ করে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি।
জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রকাশ হয়েছে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।
- সকালের নাস্তায় বেশি প্রোটিন পেতে চাইলে সকালে দুধ পান করতে পারেন। ক্যালসিয়াম, প্রোটিনের বাইরেও দুধে থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন। নিয়মিত দুধ পান করলে এসব পুষ্টিও পাবেন।
- সকালে ব্যায়াম করতে চাইলে, সকালে দুধ পান করুন। এতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম পাবেন। আপনার হাড় ও পেশির বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন জরুরি।
- ঘুমের সমস্যা হলে এবং ভালোভাবে ঘুমাতে চাইলে, রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন। এটি ঘুমাতে সাহায্য করবে।
- সারাদিন পরিশ্রমের পর ক্লান্ত লাগলে রাতে দুধ পান করুন। দুধের মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড। এটি মস্তিষ্কের সেরোটোনিনের হরমোর নিঃসরণে সাহায্য করে। শরীর শিথিল রাখে।
দুধ কি জাতীয় পদার্থ জানুন
দুধ কি জাতীয় পদার্থ হয়ে প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, দুধ হচ্ছে একটি ইমালশন বা কলয়েড মিশ্রণ জাতীয় পদার্থ। অর্থাৎ কলয়েড হচ্ছে একটি অসমসত্ব মিশ্রণ যেখানে কোন দ্রব্য পদার্থের সূক্ষ্ম কণা কোনো দ্রাবকের মধ্যে ইতস্তত ঘুরে বেড়ায় অথচ দ্রবীভূত হয় না। যেমন- ভাতের ফেন , সাবানের ফেনা ইত্যাদি।
এবং কলয়েড দ্রবণে উভয় পদার্থই তরল হলে তাকে ইমালশন বলে। সেজন্য দুধ একটি ইমালশন ( কলয়েড ) মিশ্রণ জাতীয় পদার্থ।
ঠান্ডা দুধ খেলে কি গ্যাস হয় জেনে নিন
এক গ্লাস দুধে কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে দেখে নিন
এক গ্লাস দুধে সুষম খাদ্যের অনেক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। এতে রয়েছে- প্রায় ১৫০ ক্যালোরি শক্তি, প্রায় ১১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, প্রায় ৮ গ্রাম ফ্যাট বা চর্বি, এবং প্রায় ৮ গ্রাম প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় পুষ্টিকর উপাদান।
তাছাড়া এক গ্লাস দুধে আরও রয়েছে, বিভিন্ন ভিটামিন খনিজ পদার্থ। যেমন-
ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, সোডিয়াম, রয়েছে
ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২।
মেধাবী জাতি গঠনে দুধ পানের ভূমিকা কি? জানা দরকার
মেধাবী জাতি গঠনে দুধ পানের ভূমিকা অপরিসীম। মানব সভ্যতার বিকাশে এবং মেধাবী জাতি গঠনে দুধ নিবিড়ভাবে জড়িত। দুধ প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ খাবার। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি স্তরেই রয়েছে দুধের প্রয়োজনীয়তা। খাদ্যের ছয়টি উপাদান যেমন- আমিষ, চর্বি, শর্করা, মিনারেল, ভিটামিন ও পানি সুষমভাবে দুধে উপস্থিত থাকায় এটিকে শুধুমাত্র পানীয় না বলে আদর্শ খাদ্যও বলা হয়।
প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ (২৫০ মিলি.) পান করলে অন্যান্য আমিষের এমাইনো এসিডের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। দুধে আমিষের প্রায় ৮০% হল কেসিন এবং বাকী ২০% হোয়ে আমিষ নামে পরিচিত। পৃথিবীর আর কোন খাদ্যে কেসিনের উপস্থিতি নেই। এটাই দুধের শ্রেষ্ঠত্ব।
তাছাড়া দুধে উপস্থিত দুগ্ধ শর্করা যা ল্যাকটোজ নামে পরিচিত শিশুদের মস্তিস্কের কোষ বর্ধনে সাহায্য করে। তাই যে সকল শিশু বেশী বেশী দুধ পান করার সুযোগ পায় তারা বেশী মেধাবী হয়ে থাকে। আর এই ল্যাকটোজ শুধুমাত্র দুধেই পাওয়া যায়। প্রকৃতির অন্য কোন খাদ্যে ল্যাকটোজ নেই, যার ফলে মস্তিষ্কের বৃদ্ধির জন্য দুধের কোন বিকল্প নেই।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সুইডেন ও সুইজারল্যাণ্ডের জনগণ প্রতিদিন ৮২০ থেকে প্রায় ৯৬০ মিলি দুধ পান করে। যার ফলে তাদের মধ্যে নভেল পুরষ্কার প্রাপ্ত বিজ্ঞানীর সংখ্যা অনেক বেশী। তাই মেধাবী জাতি গঠণে দুধের কোন বিকল্প নাই।
জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) সর্বপ্রথম ২০০১ সালের ১ জুনকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দেয়।
পোস্টের ইতি-কথাঃ সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন
পরিশেষে, ‘সুস্থ থাকতে প্রতিদিন দুধ খান- নিজেকে ফিট রাখুন’ শিরোনামের এই আর্টিকেলটি আলোচনা করে আমরা বলতে পারি যে, দুধ যে শুধুমাত্র একটি পানীয় তা নয়, বরং এটি স্বাস্থ্যের এক অমূল্য পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান। দুধ থেকে যেসব রোগমুক্তি হয় (হাড়ের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অনিদ্রা এবং মানসিক স্বাস্থ্য) সবক্ষেত্রেই দুধের যে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত জানলাম। তাই নিয়মিত দুধ পান করুন এবং সুস্থভাবে জীবন-যাপন করুন। অর্টিকেলটিতে ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দরদৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।
বিশেষকথা: এই পোস্টে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞান এবং তথ্যের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, এবং এটি চিকিৎসা পরামর্শ নয়। যেকোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত উদ্বেগের জন্য বা আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সর্বদা একজন যোগ্যতাসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।




গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url