প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
আজকাল মোবাইল ফোন দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা এবং যোগাযোগ করা অনেক সহজলভ্য হয়ে গেছে, যার কারণে অনেকেই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ এমনকি বাংলাদেশের মানুষও মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় হলো ‘প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি?’
পেজ সূচিপত্রঃ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
- প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
- প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল বা সুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন
- প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের কুফল বা অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন
- প্রশ্ন ও উত্তরঃ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
- পোস্ট শেষ-কথাঃ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি? // In Daily Life
তথ্য-প্রযুক্তির এই অত্যাধুনিক যুগে প্রায় ছোট-বড় প্রতিটা মানুষ মোবাইলের সাথে এমনভাবে মিশে গেছে যেন মোবাইল ছাড়া এক মুহূর্তও ভাবা কঠিন। এটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই নয় বরং বিনোদন, ব্যবসা, শিক্ষা, এমনকি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়েও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যার ফলে আমরা এর অনেক সুফল বা সুবিধা ভোগ করে আসছি।
অপরদিকে, এর অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক (Negative) বা খারাপ প্রভাব ফেলছে। মোবাইল ফোন দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা এবং যোগাযোগ করা অনেক সহজলভ্য হয়ে গেছে, যার কারণে অনেকেই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ 4G- এর আওতাভুক্ত। এ ছাড়া বর্তমানে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (MFS) ব্যবহার করছে ২১ কোটি ৯০ লাখ গ্রাহক। এবং মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশই স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন।
প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল বা সুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন
প্রথমদিকে মোবাইল ফোন শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম বা ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা হতো। যা দিনে দিনে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এর ব্যবহারের পাশাপাশি আরো অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ফোন থেকে আমরা নানা রকম সুফল বা সুবিধা ভোগ করে থাকি। যেমন, সহজেই যোগাযোগ করা, যেকোনো জায়গার ম্যাপ দেখা, ছবি তোলা, ভিডিও করা, ভিডিও দেখা, গান শোনা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে যেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করা যায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের যেসমস্ত সুফল বা সুবিধা বা উপকারিতা আমরা পাই তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- যোগাযোগের মাধ্যম: আগে একমাত্র যোগাযোগের প্রধান ছিল মাধ্যম চিঠি। আর এখন এই আধুনিক বিশ্বে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হল মোবাইল ফোন। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে মুহূর্তেই যোগাযোগ করা যায়। পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে অন্য কোন প্রান্তের কারও সাথে কথা বলতে হলে সাথে সাথে কল দিয়ে কিংবা টেক্সট মেসেজ করে কথা বলা যায়।
- শিক্ষার ক্ষেত্রে: মোবাইল ফোন যোগাযোগের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও এর ব্যবহার ও গুরুত্ব অপরিসীম। করোনা কালিন সময়ে অনেকেই মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করেছে। ক্লাশের যেকোন বিষয়ের প্রতিদিনের এসাইনমেন্ট তৈরি করা যায় অতি সহজেই। আপনার হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে ইউটিউব থেকে যেকোনো টপিকের উপর ক্লাস করতে পারবেন।
- কর্মজীবনে: আমাদের কর্মজীবনের প্রতিটি সেক্টরে অর্থাৎ বিভিন্ন অফিস আদালতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সুফল বা সুবিধা অতুলনীয়। মোবাইলের মাধ্যমে যে কোন চাকরির বিজ্ঞপ্তি বা আবেদনপত্র জমা সহজে করা যায়, যে কোন সমস্যায় পড়লে কারো কাছ থেকে সাহায্য নিতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবেই পাওয়া যায় এবং সমস্যার সমাধান দ্রুত হয়। যেমন, যে কোন বিষয় মোবাইল ফোনে ইমেইলের মাধ্যমে দ্রুত একে অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
- ইনকামের ক্ষেত্রে: আজকাল তথ্য-প্রযুক্তির এই অত্যাধুনিক যুগে অনলাইন ইনকামের একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল ফোন। ঘরে বসে যে কেউ মোবাইন ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে যেমন, ইউটিউব, ফেসবুক ইত্যাদি মাধ্যম থেকে সহজেই ইনকাম করতে পারে। বিশেষ করে, যারা স্টুডেন্ট আছে তারা চাইলেই হাতের খরচ মোবাইলের ফোনের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারে প্রতিদিন।
- বিনোদনের ক্ষেত্রে: একসময় বিনোদনের মাধ্যম ছিল শুধুমাত্র টেলিভিশন আর রেডিও। সেটা যুগে যুগে বিশ্ব উন্নতির সাথে সাথে মোবাইল ফোনে এসে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা যেকোনো ধরনের বিনোদন উপভোগ করতে পারি। যেমন- গান শোনা, ভিডিও দেখা, সিনেমা দেখা, নাটক দেখা, ভিডিও রেকর্ডিং করা, করা ছবি তোলা, অনলাইনে বিভিন্ন গেম খেলা ইত্যাদি।
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে: বিভিন্ন সুবিধার পাশাপাশি আমাদের হাতের স্মার্টফোন অর্থাৎ মোবাইল ফোন চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার বদলৌতে ডাক্তাররা মোবাইলের মাধ্যমে রোগীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি রোগীরাও আর্থিকভাবে অনেকটা সুবিধা পেয়ে থাকে।
- সামাজিক ক্ষেত্রে: মোবাইল ফোন সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে সামাজিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে। আগে একজনের সাথে যোগাযোগ করতে চিঠির ব্যবহার করা হতো। যেটা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। কিন্তু মোবাইল ফোনের কল্যানে আমরা খুব সহজেই একে অপরের সাথে মুহূর্তের মধ্যেই যোগাযোগ করতে পারছি।
- ব্যবসার ক্ষেত্রে: অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি ব্যবসার ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোন বা হাতের স্মার্টফোন আনাবেত সুবিধা বা সুফল দিয়ে আসছে আমাদের। ব্যবসার ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের সবচেয়ে সুবিধা হচ্ছে তার সুফল হচ্ছে ব্যবসার মার্কেটিং করা। আপনি ঘরে বসেই আপনার ব্যবসার প্রসার প্রচার করতে পারছেন।
প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের কুফল বা অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন
- জীবনমান অবনতি: মানুষ আজকাল মোবাইল ফোন অর্থাৎ হাতের স্মার্টফোন এমনভাবে ব্যবহার করছে যেন সে বিভিন্ন নেশার মতো আসক্ত হয়ে পড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনভাবে মগ্ন থাকে যে সারাদিন নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথাও মনে না অনেক সময়। যার ফলে দিন দিন মানুষের জীবনমান বা জীবনধারা অবনতি বা ব্যাহত হচ্ছে।
- মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা: অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না বা ক্ষতিকর। সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানো, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের জটিলতা, কঠোরতা ও স্ট্রেসের ফলে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আমরা প্রতিদিন যেভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আসছি তাতে আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক এবং তাই হচ্ছে।
- সামাজিক সমস্যা ও অনৈতিক কাজ: মোবাইল ফোন সামাজিকভাবে যেমন উপকার করে থাকে তেমনি এর অপকারও অনেক রয়েছে। কিছু মানুষের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি অনেক বেশি আসক্তি সৃষ্টি হওয়ার ফলে তারা সামাজিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে, যার ফলে একাকীত্ব এবং হতাশা দেখা দিতে পারে। অনেক মানুষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে প্রতারণা, ইভটিজিং, সাইবার বুলিং ইত্যাদি অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।
- ব্যক্তিগত গোপনীয়তার হুমকি: আমরা সাধারণত ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কিছুই আগে যেভাবে নোটবুকে নোট করে রাখতাম তেমনিভাবে বর্তমানে প্রযুক্তির দুনিয়ায় এ সমস্ত ব্যক্তিগত বিষয়াদি মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে থাকি। নেট দুনিয়ার বদৌলতে যেটা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- মোবাইলে শিশুদের আসক্তি: মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। তাদের বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলি মোবাইল ফোন আসক্তি (একটি জীবন-হুমকিপূর্ণ) দ্বারা দখল করছে।
প্রশ্ন ও উত্তরঃ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি?
পোস্ট শেষ-কথাঃ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি?
‘প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল কি?’ এই শিরোনামের আর্টিকেলটি আলোচনা করে আমরা বলতে পারি যে, প্রতিদিন মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে যেরকম ভাবে বিভিন্ন কাজে সুফল বয়ে আনে বা বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকি তেমনি ভাবে বিপরীতেও এর কুফল এবং বিভিন্ন অসুবিধা দেখতে পাই। তাই আমাদের উচিত এটাকে ভালো কাজে লাগানো। বিশেষ করে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের প্রতি আমাদের বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত একজন অভিভাবক হিসেবে।



গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url