আসমানী কিতাবের পরিচয় - বিস্তারিত আলোচনা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আসসালামু আলাইকুম- প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা করার চেষ্টা করবো - আসমানী কিতাবের পরিচয়, এর সংখ্যা,
আসমানী কিতাব গুলো কোন ভাষায় কোন কোন নবী-রাসূলগণের উপর নাযিল করা হয়েছে, সকল আসমানী কিতাব কি অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত আছে? সঙ্গে থাকবেন আশা করি।
পেজ সূচিপত্রঃ আসমানি কিতাবের পরিচয় - বিস্তারিত আলোচনা
- আসমানি কিতাবের পরিচয় - বিস্তারিত আলোচনা
- আসমানী কিতাবের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
- আসমানী কিতাব কি আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ?
- আপনি কিতাবসমূহের সংখ্যা কত? জেনে নিন
- প্রধান ৪টি আসমানী কিতাব সম্পর্কে জানুন
- সহীফা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নিন
- কোন কোন ভাষায় আসমানী কিতাবগুলো অবতীর্ণ হয়েছে?
- আসমানি কিতাব সমূহের অবস্থা
- পোস্টের শেষকথাঃ আসমানি কিতাবের পরিচয় - বিস্তারিত আলোচনা
আসমানি কিতাবের পরিচয় - বিস্তারিত আলোচনা
ইসলামের মৌলিক আকিদার একটি অন্যতম আকিদা হলো আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহ তায়ালা মানুষের হেদায়েত বা পথ নির্দেশনার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলদের উপর বিভিন্ন কিতাব নাযিল করেছেন। মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ ও উন্নয়নে এসব আসমানী কিতাবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
আসমানী কিতাব গুলো স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক রচিত এবং এগুলো জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে বিশেষ বিশেষ নবী ও রাসূলদের নিকট সংরক্ষিত অবস্থায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর প্রতি, তার রাসূলের প্রতি, রাসূলের উপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি এবং পূর্ববর্তী রাসূলগণের উপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি ঈমান আনো।” ( সূরা-নিসা: ১৩৬)
আল্লাহ তায়ালা আলোচ্য আয়াতসহ আরো অনেক আয়াত সমূহে আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন, অন্য আরেকটি আয়াতে আল্লাহ তায়ালা- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও প্রকৃত মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈমান এনেছেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং মুমিনগণও ঈমান এনেছেন আল্লাহর প্রতি, ফেরেস্তাগণের প্রতি, গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং তারা রাসূলগণের প্রতি।” (সূরা-বাকারা: ২-২৮৫)
সুতরাং আসমানী কিতাবের মাধ্যমেই যেহেতু আল্লাহ তায়ালা মানুষকে জীবনযাপন পদ্ধতি, হেদায়াত ও সাফল্য অর্জনের যাবতীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাই ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈমানের তৃতীয় রকম হলো আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি ঈমান আনা।
পক্ষান্তরে আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি ঈমান না আনা হলো চরম পথভ্রষ্টতা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের উপর, রাসূলগণের উপর এবং কেয়ামতদিনের উপর ঈমান আনে না, সে তো পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে; সত্য থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে।” (সূরা-নিসা: ৪-১৩৬)
আসমানী কিতাবের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
কিতাব শব্দের অর্থ হচ্ছে লিপিবদ্ধ বা লিখিত বস্তু। এর আরো কয়েকটি প্রতিশব্দ হলো গ্রন্থ, বই, পুস্তক ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালা যেসব কিতাব মানবজাতির হেদায়েতের জন্য দিকনির্দেশনা স্বরূপ নাযিল করেছেন তাকে আসমানী কিতাব বলে। আল্লাহ তায়ালা জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর মাধ্যমে তাঁর বাণী সমূহ নবী-রাসূলগণের নিকট প্রেরণ করেছেন। অতঃপর নবী-রাসূলগণ তা মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন।
মোটকথা আল্লাহ তায়ালার বাণী সম্বলিত গ্রন্থগুলোকে আসমাণী কিতাব বলা হয়।আসমানী কিতাবের বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের তৃতীয় রুকন।
আসমানী কিতাব সমূহের উপর ঈমান আনার অর্থ হলো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা যে, আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য কিতাব রয়েছে যা তিনি নবী-রাসূলগণের উপর নাযিল করেছেন এবং সত্যিকার অর্থে সেগুলো আল্লাহ তায়ালার বাণী। এগুলো হলো জ্যোতি ও হেদায়েত।
আর নিশ্চয়ই এই কিতাব সমূহের মধ্যে যা রয়েছে তা সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠ। এর অনুসরণ করা ও তদ অনুযায়ী এর আমল করার সকলের জন্য ফরজ ও অবশ্য কর্তব্য।
আসমানী কিতাব কি আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ?
নবী-রাসূলগণের প্রতি যে সকল আসমানী কিতাব নাযিল করা হয়েছে সেগুলো মানব রচিত কোন সাধারণ গ্রন্থ নয়। বরং এগুলো স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার রচিত নিজস্ব রচনা যা তিনি ন্যায়নীতি ও সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য জিব্রাইল আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন।যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আমি আমার রাসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যেন মানুষের ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।” (সূরা-হাদীদ: ২৫)
অন্য একটি আয়াতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের এর উপর অবতীর্ণ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব আল কোরআন রচনা সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেন,
“তিনি কোন মনগড়া কথা বলেন না। বরং তিনি কেবল তাই বলেন যা তাঁর নিকট ওহীর মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে শিক্ষাদান করে শক্তিশালী (জিব্রাইল) ফেরেস্তা।” (সূরা-নজম: ৩-৫)
তাই এক কথায় বলা যায় যে, সকল আসমানী কিতাবসমূহ মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ করা হয়েছে।
আপনি কিতাবসমূহের সংখ্যা কত? জেনে নিন
আল্লাহ তায়ালা নবী রাসুলদের প্রতি যে সকল ঐশ্বীগ্রন্থ প্রেরণ করেছেন সেগুলোকে আল কোরআনের ভাষায় কিতাব বা সহীফা বলা হয়েছে।
কিতাব ও সহীফার প্রকৃত সংখ্যা কত তা আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত আর কারো জানা নেই। আল কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না। তবে কেউ কেউ বলেন মোট আসমানী কিতাব হলো ১০৪টি। এগুলোর মধ্য থেকে চারটি হল কিতাব বা বড় গ্রন্থ আর ১০০টি হলো রিসালা বা সহীফা অর্থাৎ পুত্রিকা বা ছোট বই। যারা বলেন আসমানী কিতাব মোট ১০৪টি তারা মূলত একটি সুদৈর্ঘ্য হাদিসের ভিত্তিতে এ কথা বলেন।
আবুজারা আল গিফারী (রহঃ আঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ তায়ালা কতটি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন- তিনি বললেন ১০৪টি।
- শীষ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ করেছেন ৫০টি সহীফা
- ইদ্রিস আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ করেছেন ৩০টি সহীফা
- ইব্রাহমি আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ করেছেন ১০টি সহীফা
- আর তাওরাত নাযিলের পূর্বে মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ করেছেন ১০টি সহীফা।
- আল্লাহ তায়ালা আরো অবতীর্ণ করেছেন তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কুরআন।
প্রধান ৪টি আসমানী কিতাব সম্পর্কে জানুন
কুরআন ও সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, মৌলিক আসমানী কিতাবের সংখ্যা হল চারটি। এ বিষয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই।নাযিল হওয়ার ক্রমধারাঅনুসারে এগুলো হলো তাওরাত যাবুর ইঞ্জিল ও আল-কুরআন।
তাওরাতের বিবরণ:
ইহুদিদের ধর্মীয় বিধি-বিধানের মূল ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল হলো তাওরাত। তাওরাহ বা তুরাহ একটি হিব্রু শব্দ যার অর্থ শিক্ষা। তাওরাত বলতে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তারাহখের প্রথম অংশকে বুঝালেও সার্বিকভাবে তুরাহ হলো তাদের লিখিত ও মৌখিক শিক্ষা।
হাজার হাজার বছর আগে কয়েকটি পাথরের ফলকে উৎকীর্ণ অবস্থায় এটি হযরত মুসা আঃ এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। মুসা আঃ নিজ গোত্র বনি ইসরাইলকে সাথে করে নিয়ে মিশর থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং ফেরাউনের নীল নদের ডুবে যাওয়ার পর এটি অবতীর্ণকরা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,
“আমি পূর্ববর্তী অনেক সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার পর মুসাকে কিতাব দিয়েছি।” (সূরা-কাসাস: ৪৩)
অন্য আরেকটি আয়াত আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই আমি তাওরাত নাজিল করেছি হেঁটে রয়েছে হেদায়েত ও আলো।” ( সূরা-মায়েদা: ৪৪)
যাবুরের বিবরণ:
যাবুর হযরত দাউদ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর নাযিল হয়েছিল। এটি হিব্রু ভাষায় লিখিত। হিব্রুতিকে বলা হয় কিতুভীম যার অর্থ হলো গাওয়া বা আবৃত্তি করা। হযরত দাউদ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোত্রের মাতৃভাষা ছিল ইউনানী। তাই যাবুর হিব্রু বা ইউনানী বা আরামাইক ভাষায় নাযিল করা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“ আর আমি দাউদকে দিয়েছি যাবুর।” (সূরা-ইসরা: ৫৫)
ইঞ্জিল এর বিবরণ:
ইঞ্জিল মূসা আলাইহিস সালামের উপর নাযিল করা হয়েছে। এটি খ্রিস্ট ধর্মে বাইবেল বা যীশুর গাসপেল নামে পরিচিত। ইঞ্জিল অর্থ হল সুখবর। এ কিতাব কমবেশি ১৯০০ বছর আগে নাযিল করা হয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আমি তাদের পর ঈসা ইবনে মারিয়ামকে প্রেরণ করেছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। আমি তাঁকে ইঞ্জিল প্রধান করেছি। এতে হিদায়াত ও আলো রয়েছে। এটি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তাওরাতের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোকে সত্যায়ন করে, পথ প্রদর্শন করে এবং এটি আল্লাহ ভীরুদের জন্যে উপদেশ বাণী।” (সূরা-মায়িদা: ৪৬)
আল-কোরআনের বিবরণ:
পবিত্র আল কোরআন হলো আসমানী কিতাবসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ কিতাব। যা হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় পবিত্র রমজান মাসে কদরের রাত্রে প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে।
আল কোরআন শব্দটি আরবি যার অর্থ হলো পাঠ, পঠিত বা পাঠ করার যোগ্য যা বার বার পাঠ করা যায় এবং যা নিকটে নিয়ে যায় ইত্যাদি। পরিভাষায় আল কোরআন হলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ আল্লাহ তায়ালার এমন বাণী যা শব্দগতভাবে অন্য কারো পক্ষে রচনা করা অসম্ভব। তেলাওয়াত করা এবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
এটি শুরু হয়েছে সূরা ফাতেহার মাধ্যমে এবং শেষ হয়েছে সূরা নাসের মাধ্যমে।
আল-কোরআনকে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জন্য সংবিধান হিসেবে অবতীর্ণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য সংবিধান হিসেবে অবতীর্ণ করা হয়নি। এটি পূর্ববর্তী সকল আসমানী কিতাবের সত্যায়ন করে। হে প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“তিনি আপনার প্রতি কিতাব (অর্থাৎ আল-কোরআন) অবতীর্ণ করেছেন সত্যতার সাথে; যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়ন করে। এ কিতাবের পূর্বে মানুষের হেদায়েতের জন্যে নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইঞ্জিল, অতঃপর অবতীর্ণ করেছেন আল-কোরআন (অর্থাৎ সত্য-মিথ্যা নিরূপণকারী গ্রন্থ আল-কুরআন)।” (সূরা-আল ইমরান: ৩-৪)
সহীফা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নিন
আল্লাহ তায়ালা প্রধান চারটি আসমানী কিতাব নাজিল করার পাশাপাশি আরো অনেকগুলো ছোট ছোট আসমানীকিতাব নাযিল করেছেন। ছোট্ট আসমানী কিতাবগুলোকে সহীফা বলা হয়। যেমন হযরত ইব্রাহিম ও মুসা আলাইহিস সালাম এর উপর কিছু সহীফা নাযিল করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“এটা লিখিত রয়েছে পূর্ববর্তী সহীফাসমূহে ইব্রাহিম ও মুসার সহীফাসমূহে।” (সূরা-আ’লা: ১৮-১৯)
কোন কোন ভাষায় আসমানী কিতাবগুলো অবতীর্ণ হয়েছে?
আসমানী কিতাব একটিমাত্র ভাষা বা আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়নি। বরং যে কিতাব যে জাতির উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়েছে সে কিতাব সে জাতির ভাষায় নাজিল করা হয়েছে। কেননা এসব কিতাব নাযিল করার উদ্দেশ্য হলো উক্ত জাতিকে হেদায়েতের দিক নির্দেশনা প্রদান করা এবং তাদের নিকট আল্লাহ তায়ালার বিধান সমূহ ব্যাখ্যা করা।
সুতরাং কিতাব যদি উক্ত জাতির মাতৃভাষায় অবতীর্ণ না করে বিদেশি অন্য কোন ভাষায় অবতীর্ণ করা হতো তাহলে কিতাব প্রেরণের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতো। অতএব আসমানী কিতাবসমূহ প্রত্যেক জাতির মাতৃভাষায় প্রেরণ করা হয়েছে। যেমন:
- তাওরাত হিব্রু ভাষায়,
- যাবুর ইউনানী ভাষায়,
- ইঞ্জিল সুরিয়ানী ভাষায়
- এবং পবিত্র আল-কোরআন আরবি ভাষায় নাযিল করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,
“আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার স্বজাতির ভাষায় প্রেরণ করেছি, তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বোঝানোর জন্য।” (সূরা-ইব্রাহীম: ৪)
আসমানি কিতাব সমূহের অবস্থা
পবিত্র আল কুরআনে বলা হয়েছে শুধুমাত্র আল কোরআন ব্যতীত অন্যান্য সকল আসমানী কিতাবকে বিকৃত করা হয়েছে। নবী-রাসূলদের ইন্তেকালের পর সংশ্লিষ্ট জাতিগুলো তাদের প্রবৃত্তির তাড়নায় নিজেদের গায়েবী স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কিতাবগুলোর পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও বিকৃতি সাধন করেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“অতএব তাদের জন্য আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লিখে এবং বলে: এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, যেন এর বিনিময়ে সমান অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব, তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।” (সূরা-বাকারা: ৭৯)
আরো পড়ুনঃ
- যেসব গুণী নারীরা দুনিয়াতে বেহেশতের সুসংবাদ পেয়েছেন
- জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ৩০ জন মহিলা সাহাবীদের নাম
- 'নারী-পর্দা’ নিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক আমরা আলোচনা করব!!
- ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি - ইসলামে এই বাক্যের গভীর তাৎপর্য
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url