আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, নেক আমল মানে আল্লাহর প্রিয় বান্দা। আল্লাহর
প্রিয় বান্দাদের নেক আমলের মধ্যে রয়েছে- পরিপূর্ণ ঈমান, বিশ্বাস ও ভালো কাজ
তথা সৎকর্ম করা, সময়মত সালাত কায়েম করা, সকল বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা
স্থাপন করা, মন থেকে তওবা করা, মানুষের সেবা ও উপকার করা, যেকোন বিষয়ে ধৈর্য ধারণ
করা, আল্লাহ পাকের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন নিয়ে চিন্তা করা, বেশি থেকে বেশি জিকির ও
দোয়া করা।
মানব সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে আজ অবধি যত নবী রাসুল এসেছেন তাঁদের দেখানো পথ
অনুসরণ করে যাঁরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়েছেন এবং দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ
পেয়েছেন আজকে আমরা তাঁদের নেক আমল সম্পর্কে এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা
করব, ইন্শাল্লাহ্।
পেজ সূচিপত্রঃ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ
- আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ।
- আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সঙ্গ মানুষকে আল্লাহর প্রিয় করে তুলে।
- আল্লাহর তায়ালার সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ও নেক আমল-যেমন হওয়া উচিৎ।
- জান্নাতে যাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছোট ছোট নেক আমল।
-
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা কারা ও তাদের নেক
আমলের বৈশিষ্ট্য।
-
আল্লাহর অভিশপ্ত বান্দা কারা ও তাদের বদ আমল।
-
পোস্টের শেষকথা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ।
আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ
দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের ৪টি নেক আমলের কথা উল্লেখ করা
হয়েছে যে আমলগুলোর মাধ্যমে তাঁরা জান্নাতি হবেন। আল্লাহ তয়ালা বলেন, নিশ্চয়
ধর্মভীরু বা মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতসমূহে ও ঝর্ণাধারায়,তাদের প্রতিপালক যা
তাদেরকে দিবেন তা তাঁরা ভোগ করবেন, কারণ তাঁরা পূর্বে (দুনিয়ার জীবনে) ছিলেন
সৎকর্মশীল; রাতের সামান্য অংশই ঘুমিয়ে কাটাতেন। রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমা
প্রার্থনায় রত থাকতেন এবং তাঁদের সম্পদে আছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার (যা
তারা আদায় করত)। (সূরা জারিয়াত: ১৫-১৯)
সূরা জারিয়াত: ১৫-১৯- এ আয়াত গুলোতে জান্নাতিদের যে ৪ নেক আমলের কথা বলা হয়েছে:
সৎকর্মশীলতায় উৎকর্ষ লাভকারী:
ইহসান হলো ইবাদতে সৌন্দর্য ও পরিপূর্ণতা অর্জন করা। হাদিসে এসেছে, ইহসান অর্থ
এমনভাবে ইবাদতের চেষ্টা করা, যেন ইবাদতকারী আল্লাহকে দেখছে, যদিও তারা আল্লাহকে
দেখতে পায় না, তবে তারা নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করে যে, তিনি নিঃসন্দেহে তাদেরকে
দেখছেন।
রাত জেগে ইবাদত করা:
রাত জেগে আল্লাহর ইবাদত করা, তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল।
আল্লাহর নবী, তার প্রিয় ও নেক বান্দারা এ আমলে অভ্যস্ত ছিলেন। আবু হোরায়রা
(রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমাদের রব
আল্লাহ তায়ালা প্রতি রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে, তখন প্রথম
আকাশে নেমে এসে বলতে থাকেন, কে আমাকে ডাকবে যে আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আমার
কাছে চাইবে যে আমি তাকে দেব? কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে যে আমি তাকে ক্ষমা করে
দেব? (সহিহ বুখারি: ১১৪৫)
শেষ রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা:
রাত জেগে নামাজ ও তিলাওয়াতের পাশাপাশি ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনাও আল্লাহর
নৈকট্য অর্জনের জন্য সহায়ক আমল। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে ইস্তেগফার বা তওবা করলে
রিজিক বৃদ্ধি, উত্তম প্রাকৃতিক পরিবেশ, সম্পদ ও সন্তান দিয়ে সাহায্য করার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দুনিয়ার সুখ সমৃদ্ধি দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অভাবী ও বঞ্চিতদের দান করা:
মুমিন মুসলমান বান্দাদের একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হলো দানশীলতা। সম্পদশালী
মুসলমানদের ওপর প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ দান করা ফরজ যা যাকাত হিসেবে
পরিচিত। যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। জাকাত আদায় না করা কবিরা গুনাহ।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ”হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে ব্যয়
কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোন-বেচাকেনা, না কোন বন্ধুত্ব এবং না
কোন সুপারিশ। আর কাফিররাই জালিম।” (সুরা বাকারা: ২৫৪)
জাকাতের বাইরে নফল দানও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহ বলেন, যারা তাদের সম্পদ
ব্যয় করে রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। অতএব, তাদের জন্যই রয়েছে তাদের রবের
নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা
বাকারা: ২৭৪)
আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সঙ্গ মানুষকে আল্লাহর প্রিয় করে তুলে
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللٰهَ وَ كُوْنُوْا مَعَ
الصّٰدِقِيْنَ
আয়াতের অর্থ: “হে মুমিনগণ! তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো।
সূরা তওবা (০৯): ১১৯।
উক্ত আয়াতে- মহান আল্লাহ তায়ালা সত্যবাদী তথা আল্লাহ ওয়ালাদের সঙ্গে থাকার হুকুম
করেছেন। আর এটা হচ্ছে পরহেজগারী লাভ করার অন্যতম সহজ উপায়। দ্বীনী ও
ইসলামী শিক্ষার ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষের
হেদায়েতের জন্য কিতাব ও ব্যক্তিবর্গ (আল্লাহর নির্বাচিত ও প্রিয় বান্দাদের)
পাঠিয়েছেন। এরই মাধ্যমে যুগে যুগে মুমিনবান্দাগণ আল্লাহর প্রিয় থেকে প্রিয়
হয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারিমের বিভিন্ন জায়গায় মুমিনদের বিভিন্ন গুণ ও
বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে সূরা-ফোরকানে মুমিনদের এমন
বিশেষ ১২টি গুণের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলো আল্লাহর কাছে প্রিয়।
১ম গুণ-চলাফেরায় বিনয়ী হওয়া: আল্লাহর প্রিয় বান্দারা -স্থিরতা গাম্ভীর্য
ও বিনয়ের সাথে চলাফেরা,ওঠা-বসা করে। রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন হাঁটতেন, মনে হত যেন
কোনো উঁচু জায়গা থেকে নিচের দিকে নামছেন। মুমিন বান্দাদের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
তথা- চোখ, কান হাত-পা আল্লাহ তায়ালার সামনে হীন ও অক্ষম অবস্থায় থাকে। ফলে
জ্ঞানহীন মূর্খ লোকেরা তাদেরকে দেখে দূর্ব ল ও পঙ্গু মনে করে। অথচ তারা পঙ্গুও
নয় দুর্বলও নয় বরং তারা সুস্থ এবং কর্মঠ। আল্লাহর ভীতি তাদের উপর প্রবল থাকে যা
অন্যদের উপর নেই। তাদেরকে দুনিয়াবী কাজকর্ম থেকে পরকালের চিন্তায় মগ্ন রাখে।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা জমিনে নম্রভাবে চলাফেরা করে।’ (সূরা :
ফোরকান, আয়াত : ৬৩) ।
নম্রতার গুণ মানুষকে সুন্দর করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘নম্রতা বস্তুকে
সুন্দর করে আর অনম্রতা করে কলঙ্কিত।’ (আত তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস : ৪০৮২)।
২য় গুণ- অজ্ঞদের সঙ্গে তর্কে না জড়ানো: আল্লাহতায়ালার অভিজ্ঞতা
সম্পন্ন লোক মূর্খদের অসৌজন্যমূলক কথার জবাব দেয় না এবং কোন রকম প্রতিশোধ গ্রহণ
করে না ,যাতে করে সে ব্যতীত অন্য কেউ কষ্ট না পায়।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘অজ্ঞলোক যখন তাদের লক্ষ্য করে (অজ্ঞতাসুলভ) কথা
বলে, তখন তারা শান্তিপূর্ণ কথা বলে। (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৬৩)।
৩য় গুণ- তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা: তাহাজ্জুতের নামাজ আল্লাহর
প্রিয় বান্দাদের একটি বড় গুণ। আল্লাহর তায়ালার ইবাদতের জন্য রাত্রি জাগরন
এর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে যে, সারাদিনের ক্লান্তি শেষে রাতের
সময়টি হচ্ছে ঘুম ও বিশ্রামের সময়। সমস্ত আরাম-আয়েশ কে ছুঁড়ে ফেলে প্রতিপালকের
সামনে দন্ডায়মান হওয়া যেমন কষ্টকর, সেইসাথে লৌকিকতারও কোনো সম্ভাবনা থাকেনা।
এখানে মূলত উদ্দেশ্য হচ্ছে যে তারা দিবারাত্রি আল্লাহর ইবাদতে প্রভুর দাসত্বের
মধ্যে অতিবাহিত করে।
হাদিসে আছে নবী এ কারীম (সা.) বলেন: তোমরা নিয়মিত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় কর।
কেননা এটা তোমাদের পূর্ববর্তী সব নেক বান্দাদের অভ্যাস ছিল। আর তাহাজ্জুদ আল্লাহ
তাআলার নৈকট্য দানকারী। মন্দ কাজের কাফফারা এবং গুনা থেকে নিবৃত কারী। (তিরমিজি)।
৪র্থ গুণ- জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করা: আল্লাহর প্রিয়
বান্দারা জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্যবলে, হে- আমার প্রতিপালক আমাদের হতে
জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত করুন আর জাহান্নামে আশ্রয় স্থল ও বসতি হিসেবে কত
নিকৃষ্ট। সুতরাং আমাদের সবার উচিত ইবাদতের সাথে সাথে আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে
মুক্তির জন্য দোয়া করা এবং সমস্ত গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার সংকল্প করা। কখনো কোন
গোনা হয়ে গেলে সাথে সাথে তওবা করে নেওয়া।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা বলে, হে আমাদের রব, জাহান্নামের আজাব আমাদের
থেকে দূরে রাখুন।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৬৫)।
৫ম গুণ- অপব্যয় ও কৃপণতা না করা: আল্লাহর প্রিয় বান্দার ৫ম গুণ
হলো ব্যয় করার সময় তারা কখনও অপব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না বরং এর সমতা
বজায় রাখে। পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয়
করে না, কার্পণ্যও করে না, বরং তারা আছে এই দুয়ের মাঝে - মধ্যম পন্থায়।আল্লাহ
তায়ালা আরো বলেন- অপচয়কারী শয়তানের ভাই।
মোট কথা হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব কাজে
ব্যয় করার আদেশ দিয়েছেন তাতে কার্পণ্য করে ব্যয় করার অর্থ হচ্ছে কৃপণতা।
সুতরাং একদম ব্যয় না করা অনেক বড় গুনাহের কাজ। দ্বীনের কাজে ব্যয় করার মধ্যে
কার্পণ্য করা মুমিনের কাজ হতে পারে না।
৬ষ্ঠ গুণ- শিরক থেকে বেঁচে থাকা: আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ বা
মুমিনবান্দাগণ ইবাদতে আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে না। আর শিরক হলো মারাত্বক
গুনাহ এবং শিরককারী বা মুশরিকদের শেষ পরিণাম হবে অতি ভয়াবহ ও চিরস্থায়ী। আল্লাহ
আমাদের সবাইকে শিরক মুক্ত জীবন দান করুন।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাঁরাই আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা যাঁরা আল্লাহর
তায়ালার সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৬৮)।
৭ম গুণ- অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা না করা: আল্লাহ তায়ালার প্রিয়
বান্দাগণ- তাঁরা কাউকে অন্যায় ভাবে হত্যা করে না এবং শিরক, হত্যা ,জিনা এই তিন
প্রকারের গোনাহ সবচেয়ে জঘন্যতম । আল্লাহ বলেন : “যারা এই সমস্ত পাপ কাজে লিপ্ত
হবে তারা অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে এবং এর শাস্তি হবে অনেক ভয়াবহ।” কিন্তু যারা
তাওবা করবে এবং বিগত পাপ কাজ সমূহের উপর লজ্জিত হয়ে একনিষ্ঠতার সাথে আল্লাহর
কাছে তওবা করবে , আল্লাহ তাদের মাফ করে দিবেন।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন, তাকে
অন্যায়ভাবে হত্যা করে না।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৬৮)।
৮ম গুণ- ব্যভিচারে লিপ্ত না হওয়া: আল্লাহ তায়ালার প্রিয়
বান্দারা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না এবং ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয় না। কোরআনে
কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৬৮)।
৯ম গুণ- মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়া: আল্লাহ তায়ালার প্রিয়
বান্দারা অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দেয় না। কোরআনে কারিমে ইরশাদ
হয়েছে, ‘তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৭২)।
১০ম গুণ- অনর্থক কাজ পরিহার করা: আল্লাহ তায়ালার প্রিয়
বান্দারা অর্থহীন ও অনর্থক কাজকর্ম করেন না বরং অর্থহীন ও অনর্থক কাজ যেখানে
হয় সেখান থেকে সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে ভদ্রভাবে চলে যান। কোরআনে কারিমে
ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোনো অনর্থক কার্যকলাপের নিকট দিয়ে যায়, তখন আত্মসম্মান
বাঁচিয়ে যায়।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৭২)।
এবং হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো
অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৮)।
১১তম গুণ- কোরআনের উপদেশ গ্রহণ করা: আল্লাহ তায়ালার
প্রিয় মুমিন বান্দা যখন আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করবে তখন সে গভীর মনোযোগ দিয়ে
পড়বে, কোরআন বুঝবে, না বুঝলে বোঝার চেষ্টা করবে, আয়াতে কারীমা নিয়ে গবেষণা
করবে। কোরআন পড়বে অথচ কোরআন বুঝার চেষ্টা করবে না, গবেষণা করবে না এটাতো মুমিনের
বৈশিষ্ট্য হতেই পারে না।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে এর
প্রতি অন্ধ ও বধিরসদৃশ আচরণ করে না।’ (সূরা : ফোরকান, আয়াত : ৭৩)।
১২তম গুণ- সন্তান ও স্ত্রী অনুগত হওয়ার দোয়া করা: আল্লাহ পাকের
প্রিয় বান্দা- তারা তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য দোয়া করে- হে আমাদের প্রভু
আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে আমাদের চোখের শীতলতা স্বরূপ বানিয়ে দাও এবং
আমাদেরকে মুত্তাকীদের ইমাম বানিয়ে দাও। আল্লাহর নেক বান্দাগণ শুধু নিজেরাই উত্তম
বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী অধিকার হবে এমন হতে পারে না। তারা চায় তাদের সন্তানরা ও যেন
এ ধরনের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী অর্জন করে। এবং তাদের স্ত্রীগণ যেন তাদের মতো উত্তম
বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয় যাতে করে তাদের মন আনন্দে ভরে যায়।
আল্লাহর নেক বান্দাদের আকাঙ্ক্ষা তাদের সন্তান স্ত্রীগণ যেন আল্লাহকে ভয় করে
চলে। স্ত্রী ও সন্তান যদি আল্লাহর অনুগত হয়ে চলে তাহলে একজন মুমিনের জন্য এর
চেয়ে বড় প্রশান্তি আর কিছুই হতে পারে না। আর যদি তারা আল্লাহর অবাধ্য হয় তাহলে
এর চেয়ে বড় কষ্টের আর কিছুই নেই।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা এই বলে দোয়া করে যে হে আমাদের রব, আমাদের
স্ত্রী ও সন্তানদের পক্ষ থেকে দান করুন নয়নপ্রীতি এবং আমাদের মুত্তাকীদের নেতা
বানান।’
আল্লাহর তায়ালার সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ও নেক আমল- যেমন হওয়া উচিৎ
আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর প্রিয় বান্দা সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওলির
সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা করি। আমি বান্দার ওপর যা
ফরজ করেছি তা অপেক্ষা আমার কাছে অধিক প্রিয় কোনো বস্তু নেই, যা দ্বারা আমার
বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে। আর বান্দা নফল ইবাদতের দ্বারা আমার নৈকট্য
লাভের চেষ্টা করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি আল্লাহ স্বয়ং তাকে ভালোবাসতে শুরু করি।
যখন আমি তাকে ভালোবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে। তার চোখ হয়ে
যাই, যা দিয়ে সে দেখে। তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। তার পা হয়ে যাই, যা
দিয়ে সে হাঁটে।
সে যদি কিছু চায় আমি তা অবশ্যই দান করি, যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায় আমি অবশ্যই
তাকে আশ্রয় দান করি।’ (সহীহ বুখারি, হাদিস : ২৫০২)।
উল্লিখিত হাদিসে আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় বান্দাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কের
নানা দিক ফুটে উঠেছে। বান্দা মহান আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে
তার নৈকট্য অর্জন করে, তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে। বিপরীতে আল্লাহ তাঁর
প্রিয় বান্দাদেরকে শত্রুর শত্রুতা থেকে রক্ষা করেন এবং তাদের দোয়া-প্রার্থনা
কবুল করেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বান্দা সিজদারত অবস্থায় তার প্রতিপালকের সর্বাধিক
নিকটবর্তী হয়।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১১১১)।
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘আদায়যোগ্য সর্বোত্তম আমল হলো আল্লাহ তাআলার
নির্ধারিত ফরজ, আর পরিত্যাগযোগ্য আমল হলো আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত হারাম।
নিয়তের সততার ওপর প্রতিদান নির্ভর করে।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ৩/১৯)।
ঈমান, ইবাদত ও আনুগত্যের পথ ধরে বান্দা একসময় আল্লাহর নিকটতম বান্দা তথা
ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হয়। হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দা নফল
ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করতে থাকে, এমনকি আমি তাকে
ভালোবাসি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)।
আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় সকল মুমিন বান্দাকে তাঁদের নেক আমলকে ভালোবাসার দানে
ধন্য করুন। আমিন।
জান্নাতে যাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছোট ছোট নেক আমল
এ পর্যায়ে আমরা জান্নাতে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল নিয়ে
আলোচনা করব-
সুরা ইখলাছের ফজিলত - রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, 'তোমরা কি কেউ প্রতি রাতে
কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অক্ষম? তাহলে সে প্রতি রাতে সুরা ইখলাছ
পড়বে। তাহলে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতের সওয়াব পাওয়া যাবে।' (মুসনাদে আহমদ :
২৩৫৫৪)।
গোপনে নফল পড়ার ফজিলত - রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, 'জনসম্মুখের তুলনায়
লুকিয়ে নফল নামাজ পড়ার মধ্যে ২৫ গুণ বেশি সওয়াব।
রাসূল (সা:) বলেন, “অন্ধকারের মধ্যে যাহারা মসজিদে বেশী বেশী যাতায়ত করে,
কেয়ামতের দিনের জন্য তাহাদেরকে পূর্ণ নূরের সুসংবাদ শুনাও।” —(আল হাদীস)।
মসজিদে ডান পা দিয়ে দরুদ ও দুয়া পড়ে ঢুকা এবং বাম পা দিয়ে দরুদ ও দুয়া পড়ে বের
হওয়া।
প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুণ (আশ্হাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু
ওয়াহ্দাহু লা- শারী কা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহূ ওয়া
রাসূলুহূ) । এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
(সহীহ মুসলিম, হাদিস নং- ৪৮)।
প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ৩৩ বার
আল্লাহু আকবার এবং ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল
মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর) পাঠ করুণ এতে আপনার
অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। সহীহ মুসলিম, হাদিস নং- ১২২৮। সেই সাথে জাহান্নাম
থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে
মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে। সহিহ মুসলিম, মিশকাত হাদিস
নং- ১৮০৩)।
প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। সহীহ
নাসাই, সহীহ তারগিব, হাকিম হাদিস নং- ৩৮৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ১১৪০।
রাসুল (সাঃ)-এর উপর সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ পড়ুন এতে আপনি নিশ্চিত
রাসুল (সাঃ)-এর সুপারিশ পাবেন। তবরানি, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৬৫৬।
সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পরলে
সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশী মর্যাদা দেওয়া হবে। সহিহ আবু দাউদ, হাদিস নং-
৫০৯১। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি
'সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি' পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ
রোপণ করা হয়। (তিরমিজি : ৩৪৬৪)।
জামাতে ইমামের প্রথম তাকবীরের সাথে ৪০ দিন সলাত আদায় করুন এতে আপনি প্রায়
নিশ্চিত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। তিরমিজি, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং-
৭৪৭, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৪০৪)।
প্রতিটি ভালো কাজ ডান দিক দিয়ে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা।
বাথরুমে যেতে দুয়া পড়ে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা, বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে বের
হয়ে দুয়া পড়া।
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে দুয়া পড়ে বের হওয়া এবং প্রবেশের সময়ও ডান পা
দিয়ে প্রবেশ করে সালাম দেয়া। যদিও ঘরে কেউ না থাকুক না কেন সালাম দেয়া সুন্নাহ,
আল্লাহর হুকুম। যদি ঘরে কেউ নাকে তবে এই সালাম ঘরের ফিরিশতাদের জন্য।
আযানের জবাব দেয়া, আযানের পর হাদিসে বর্ণিত দুয়া পড়া। চলতে ফিরতে ছোট বড় সকলকে
সালাম দেয়া। সালাম দিয়ে কথা শুরু ও শেষ করা।
এই রকম আরো অনেক ছোট ছোট আমল আছে যা আমরা অনায়াসে করতে
পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমিন।
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা কারা ও তাদের নেক আমলের বৈশিষ্ট্য
আমরা ইসলামের আলোকে বলতে পারি সকল ওলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, আল্লাহর
অনুগ্রহ প্রাপ্ত বান্দা হতে হলে অবশ্যই একনিষ্ঠ হৃদয়ে আল্লাহর সমস্ত
আদেশ-নিষেধ ও বিধি-নিষেধ মানতে হবে এবং তৎঅনুযায়ী পালন করতে হবে, আর যে ব্যক্তি
মহান আল্লাহর তাওহীদ ও রাসূল (সা.)- এর রিসালাতের উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন
করবে, তাঁর প্রতিটি হুকুম-আহকাম মেনে চলবে এবং ইসলামের উপর আমরণ প্রতিষ্ঠিত থাকবে
তারাই হবেন আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা।
এ মর্মে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ
তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে পৃথিবীতে খেলাফত
প্রদান করবেন, যেমন তিনি খেলাফত প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি
তাদের দীনকে অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন, যা তিনি তাদের
জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয় ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান
করবেন; তারা আমারই ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না আর এরপর যারা
অকৃতজ্ঞ হবে তারাই ফাসিক।” (আন-নুর, ২৪/৫৫)।
তাঁদের নেক আমলের বৈশিষ্ট্য:
তাঁদের ঈমান মজবুত।
তাঁরা কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন পরিচালনায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তাঁরা পরহেজগার ও তাকওয়াবান।
তাঁদের ঈমান শিরক মুক্ত আর ইবাদত বিদায়াত মুক্ত।
তাঁরা আল্লাহর বিধান ও রাসূলের সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনাকে জীবনের
উদ্দেশ্য মনে করেন।
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা:
নবী
সিদ্দীকিন
শহীদ
সলেহীন।
আল্লাহর অভিশপ্ত বান্দা কারা ও তাদের বদ আমল
আল্লাহর অভিশপ্ত বান্দারা ঈমানের বিপরীত চরিত্র বহন করে। তারা
আল্লাহদ্রোহী, নিজের নফস, শয়তান বা অন্য কারো তাবেদারি করে। বিনিময়ে
সে ইহকাল ও পরকালে অপমান-অপদস্থতা অর্জন করে। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে
অনেক ভালোবেসে তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি চান না যে, তাঁর
বান্দা অভিশপ্ত জীবন যাপন করুন। আবার মুসলমান যত বড় পাপীই হোক না কেন, তাকে
অভিশাপ দেয়া জায়েজ নেই- হতে পারে মৃত্যুর পূর্বে সে খাস দিলে তাওবা করে
নিয়েছে। আল্লাহ তাআলা তার অন্যান্য নেক আমলের কারণে তার পাপগুলো ক্ষমা করে
দিয়েছেন, যা মানুষের জানা সম্ভব নয়।
অপরদিকে, যারা অভিশপ্ত তারা আল্লাহদ্রহীতার কাজ করে- তা থেকে তাওবা না করে
মৃত্যু বরণ করে তারাই হলো আল্লাহর অভিশপ্ত বান্দা।
অভিশপ্তদের বৈশিষ্ট্য:
যারা আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব বাণীকে অস্বীকার করেছে।
যারা আল্লাহর নবীদের হত্যা করেছে।
যারা প্রত্যেকটি ব্যাপারে আল্লাহর প্রদত্ত আইন, বিধি-বিধান ও সীমা
লঙ্ঘন করেছে।
যারা মুমিন ও ঈমানদারদের কষ্ট দিয়েছে।
আল্লাহর অভিশপ্ত বান্দা :
কাফেরগণ
ইয়াহূদীগণ
নাসারাগণ
মুনাফিকগণ।
আল্লাহপাক তায়ালা আমাদের সবাইকে অভিশপ্তবান্দাদের থেকে দূরে রেখে
অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দাদের কাতারে শামিল করুন। আমিন!
পোস্টের উপসংহারঃ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ
পরিশেষে উপরের আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায় যে, আল্লাহর প্রিয় বান্দা
হতে হলে নেক আমল করতে হবে এবং তার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে
হবে। পূর্ব ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি- মানব সৃষ্টির সূচনা লগ্ন
থেকে আজ অবধি যত নবী-রাসুল, গুণী, মুমিন ব্যক্তিবর্গ এসেছেন তাদের
প্রত্যেকে নেক আমল ও স্বীয় কর্মগুনে যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালার প্রিয়
বান্দা হয়ে উঠেছেন এবং দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ
পেয়েছেন। আমাদের উচিত মুসলমান হিসেবে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নেক
আমল করা।এবং আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভ করা। চলুন, জান্নাত লাভের আশায়
আমরা নেক আমল করব, ইন্শাল্লাহ।
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url