দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আসসালামু আলাইকুম- প্রিয় পাঠকগণ, اَلدُّنْيَا مَزْرَعةُ الآخِرَةِ অর্থাৎ ‘দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র।’ তবে কথাটির অর্থ সঠিক হলেও তা হাদিস নয় অর্থাৎ কোন সহীহ, জয়ীফ বা মাউযূ সনদেও কথাটি কোথাও বর্ণিত হয়নি।
ইসলামের দৃষ্টিতে দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে মূলকথা হলো দুনিয়াতে আমরা যে যাই করি বা যেমন কর্ম করবো আখিরাতে তেমন ফলই আমরা ভোগ করব এতে কোন সন্দেহ নেই। আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিতে কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করবো - ইনশা-আল্লাহ।
পেজ সূচিপত্রঃ দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
- দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
- দুনিয়া কি আসলেই আখিরাতের শস্যক্ষেত্র - চলুন জানি
- আখিরাত কাকে বলে এবং আখিরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন?
- ইসলামের দৃষ্টিতে দুনিয়ার গুরুত্ব কতটুকু?
- দুনিয়া নিয়ে ইসলামিক কিছু শিক্ষামূলক আয়াত ও হাদিস
- আখিরাত নিয়ে কিছু আয়াত ও হাদিস
- পোস্টের শেষকথাঃ দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
ইসলামে দুনিয়া হল একটি নশ্বর বা অস্থায়ী কার্যক্ষেত্র আর আখিরাত হলো চিরস্থায়ী, অনন্ত-অসীম পরকাল। দুনিয়াতে মানুষ শস্যক্ষেত্রে যেমনভাবে চাষাবাদ করে, বীজ বপন করে, যত্ন নেয় বা পরিচর্যা করে; ঠিক তেমনভাবেই ফল লাভ করে থাকে। যদি কোনো ব্যক্তি তার শস্যক্ষেত্রের যত্ন বা পরিচর্যা না করে তবে সে ভালো ফল লাভ করতে পারে না। অনুরূপভাবে, দুনিয়ার কাজ-কর্মের প্রতিদান বা ফলাফল আখিরাতে দেওয়া হবে।
দুনিয়াতে ভালো কাজ করলে আখিরাতে মানুষ পুরস্কৃত হবে। আর মন্দ কাজ করলে শাস্তি ভোগ করবে। তাই আখিরাত জীবনে সফলতা লাভের জন্যই বলা হয়েছে, "দুনিয়া হলো আখিরাতের শস্যক্ষেত্র।”
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَ اتَّقُوْا یَوْمًا تُرْجَعُوْنَ فِیْهِ اِلَی اللهِ ثُمَّ تُوَفّٰی كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ
“ভয় কর সেদিনকে, যেদিন তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে আল্লাহ তাআলার কাছে। অতপর প্রতিটি প্রাণকে বদলা দেওয়া হবে- যা সে অর্জন করেছিল। তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না।” [সূরা-বাকারা: (২) ২৮১]
অর্থাৎ, এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতে আমরা যা কিছু অর্জন করছি - ভালো কি মন্দ, হালাল কি হারাম, নেকি বা গুনাহ্ তা আমাদের অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সুতরাং এটা মনে রেখেইে আমাদের কাজ করতে বা চলতে হবে।
সূরা মূলক-এ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
تَبٰرَكَ الَّذِیْ بِیَدِهِ الْمُلْكُ ؗ وَ هُوَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرالَّذِیْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَ الْحَیٰوةَ لِیَبْلُوَكُمْ اَیُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْغَفُوْرُ
“অতি বরকতওয়ালা সেই সত্তা, সকল আধিপত্য যাঁর হাতে। সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান যিনি। যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যুকে ও জীবনকে। তিনি পরীক্ষা করবেন তোমাদের মধ্যে আমলে কে সুন্দরতর।” [সূরা-মূল্ক: (৬৭) ১-২]
আরো পড়ুনঃ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক আমল ও জান্নাত লাভ
দুনিয়া কি আসলেই আখিরাতের শস্যক্ষেত্র - চলুন জানি
‘দুনিয়া হলো আখিরাতের শস্যক্ষেত্র’- উক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, দুনিয়ার জীবন হলো আখিরাতের প্রস্তুতি গ্রহণের জায়গা। এই দুনিয়াতে মানুষ শস্যক্ষেত্রে যেভাবে চাষাবাদ করে, বীজ বপন করে, যেভাবে যত্ন বা পরিচর্যা করে; ঠিক সেভাবেই তার ফল লাভ করে থাকে। যদি কোনো ব্যক্তি তার শস্যক্ষেত্রের যত্ন বা পরিচর্যা না করে তবে সে ভালো ফল লাভ করে না। অনুরূপভাবে দুনিয়ার কাজকর্মের প্রতিদান আখিরাতে দেওয়া হবে।
দুনিয়াতে ভালো কাজ করলে আখিরাতে মানুষ পুরষ্কৃত হবে। আর মন্দ কাজ করলে শাস্তি ভোগ করবে। তাই আখিরাত জীবনে সফলতা লাভের জন্যই বলা হয়েছে, "দুনিয়া হলো আখিরাতের শস্যক্ষেত্র।"
সময়ের শপথ করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“সময়ের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্য ধৈর্যের উপদেশ দেয়।” [সূরা-আসর: ১-৩]
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো,
“ভাগ্যবান কারা? তিনি বললেন, ভাগ্যবান তারা, যারা দীর্ঘায়ূ লাভ করেছে এবং তা নেক আমলের মাধ্যমে অবিবাহিত করেছে। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো- দুর্ভাগা কারা তিনি বললেন, দুর্ভাগা তারা, যারা দীর্ঘায়ূ পেয়েছে এবং তা বদ আমলে কাটিয়েছে বা আমলবিহীন অতিবাহিত করেছে।” [সুনানে তিরমিজি; ২৩২৯]
আরো পড়ুনঃ ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি - ইসলামে এই বাক্যের গভীর তাৎপর্য
আখিরাত কাকে বলে এবং আখিরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন?
আখিরাত হচ্ছে একটি আরবি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে পরকাল বা মৃত্যুর পরবর্তী জীবন। যে জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। আখিরাতে দুনিয়ার সমস্ত কাজের হিসাব নেওয়া হবে এবং তার ফলাফল প্রদান করা হবে অর্থাৎ ভালো কাজ বা নেক আমল করলে পুরস্কৃত করা হবে এবং মন্দ কাজ বা গুনাহের কাজ করলে শাস্তি প্রদান করা হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” [সূরা-বাকারা: (২)৬২]
মহান আল্লাহ তায়ালা আখিরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন,
اِلَيۡهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِيۡعًا ؕ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقًّا ؕ اِنَّهٗ يَـبۡدَؤُا الۡخَـلۡقَ ثُمَّ يُعِيۡدُهٗ لِيَجۡزِىَ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ بِالۡقِسۡطِؕ وَالَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لَهُمۡ شَرَابٌ مِّنۡ حَمِيۡمٍ وَّعَذَابٌ اَلِيۡمٌۢ بِمَا كَانُوۡا يَكۡفُرُوۡنَ
“তাঁরই কাছে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। আল্লাহর ওয়াদা সত্য। নিশ্চয় তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন। তারপর তার পুনরাবর্তন ঘটান। যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে ইনসাফপূর্ণ প্রতিদান দেয়ার জন্য। আর যারা কুফরী করেছে, তাদের জন্য রয়েছে উত্তপ্ত পানীয় এবং বেদনাদায়ক আযাব। এ কারণে যে তারা কুফরী করত।” (সূরা-ইউনুস: ৪)
আরো পড়ুনঃ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ৩০ জন মহিলা সাহাবীদের নাম
ইসলামের দৃষ্টিতে দুনিয়ার গুরুত্ব কতটুকু?
দুনিয়ার জীবনকে মহান আল্লাহ তায়ালা খেল-তামাশা ও ধোঁকার উপকরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই জীবন প্রকৃতপক্ষে সাময়িক সুখ-শান্তি ও ভোগ-বিলাসের উপকরণ। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। আর নিঃসন্দেহে আল্লাহভীরুদের জন্য পরকালীন জীবনই উত্তম। এর পরও কি তোমরা বুঝবে না।” (সূরা-আনআম: ৩২)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“এই পার্থিব জীবন তো খেল-তামাশা ছাড়া কিছু নয়। আর পরকালীন জীবন হলো চিরস্থায়ী, যদি তারা জানত।” (সূরা-আনকাবুত: ৬৪)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
“মানুষের জন্য শোভনীয় করা হয়েছে তাদের আসক্তিসমূহকে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি, স্বর্ণ ও রৌপ্যের রাশিকৃত সঞ্চয়সমূহের প্রতি, চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদি পশু ও শস্যক্ষেতসমূহের প্রতি। এসবই পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু মাত্র। আর আল্লাহর কাছেই আছে সুন্দরতম ঠিকানা।” (সূরা-আল ইমরান: ১৫)
দুনিয়া নিয়ে ইসলামিক কিছু শিক্ষামূলক আয়াত ও হাদিস
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ), কুরআন ও হাদিস থেকে পাওয়া এই উক্তিগুলো আমাদের নৈতিকতা, ধৈর্য, বিশ্বাস এবং জীবন পরিচালনার সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে। নিম্নে কিছু শিক্ষামূলক উক্তি তুলে ধরা হলো:
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম ইসলাম।” (সূরা আলে ইমরান: ১৯)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“যে ব্যক্তি অন্তর থেকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই) বলে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ মুসলিম)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই সালাত অসৎ ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আনকাবূত: ৪৫)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“সালাত হলো জান্নাতের চাবি।” (তিরমিজি)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা: ১৫৩)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না, সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না।” (আবু দাউদ)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“তোমরা উত্তম কথাবার্তা বলো, যাতে মানুষের হৃদয়ে তা দাগ কাটে।” (সূরা আহযাব: ৭০)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“সবচেয়ে উত্তম মুসলিম সে, যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।” (সহিহ বুখারি)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“যারা আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করে, তাদের পুরস্কার আল্লাহ বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন।” (সূরা বাকারা: ২৬১)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“দান-সদকা গুনাহকে নিঃশেষ করে, যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয়।” (তিরমিজি)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।” – (সূরা আল-বাকারা: ১৫৩)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“আল্লাহ যার জন্য কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন।” – (সহিহ বুখারি: ৭১)
- মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“নিশ্চয়ই নামাজ- অসৎ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।” – (সূরা আল-আনকাবুত: ৪৫)
নবীজীর (সা.) এর হাদিস,
“তোমরা সত্যবাদী হও, কারণ সত্য ন্যায়ের দিকে পরিচালিত করে।” – (সহিহ মুসলিম: ২৬০৭)
আখিরাত নিয়ে কিছু আয়াত ও হাদিস
- وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡكَ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِكَ ۚ وَ بِالۡاٰخِرَۃِ هُمۡ یُوۡقِنُوۡنَ
“আর যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে। আর আখিরাতের প্রতি তারা ইয়াকীন রাখে।” [আল-বাকারা: (২) ৪]
- وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ مَا هُمۡ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ۘ
“আর মানুষের মধ্যে কিছু এমন আছে, যারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং শেষ দিনের প্রতি’, অথচ তারা মুমিন নয়।” [আল-বাকারা: (২) ৮]
- اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ الَّذِیۡنَ هَادُوۡا وَ النَّصٰرٰی وَ الصّٰبِئِیۡنَ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَلَهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡ ۪ۚ وَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ
“নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, যারা ইয়াহূদী হয়েছে এবং নাসারা ও সাবিঈরা* -(তাদের মধ্যে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং নেক কাজ করেছে - তবে তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” [আল-বাকারা: (২) ৬২]
- اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ اشۡتَرَوُا الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا بِالۡاٰخِرَۃِ ۫ فَلَا یُخَفَّفُ عَنۡهُمُ الۡعَذَابُ وَ لَا هُمۡ یُنۡصَرُوۡنَ
“তারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে খরিদ করেছে। সুতরাং তাদের থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।” [আল-বাকারা: (২) ৮৬]
- وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰهِ اَنۡ یُّذۡكَرَ فِیۡهَا اسۡمُهٗ وَ سَعٰی فِیۡ خَرَابِهَا ؕ اُولٰٓئِكَ مَا كَانَ لَهُمۡ اَنۡ یَّدۡخُلُوۡهَاۤ اِلَّا خَآئِفِیۡنَ ۬ؕ لَهُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ وَّ لَهُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ
“আর তার চেয়ে অধিক যালেম কে, যে আল্লাহর মাসজিদসমূহে তাঁর নাম স্মরণ করা থেকে বাধা প্রদান করে এবং তা বিরাণ করতে চেষ্টা করে? তাদের তো উচিৎ ছিল ভীত হয়ে তাতে প্রবেশ করা। তাদের জন্য দুনিয়ায় রয়েছে লাঞ্ছনা আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব।” [আল-বাকারা: (২) ১১৪]
- وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰهٖمُ رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّ ارۡزُقۡ اَهۡلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنۡ اٰمَنَ مِنۡهُمۡ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ قَالَ وَ مَنۡ كَفَرَ فَاُمَتِّعُهٗ قَلِیۡلًا ثُمَّ اَضۡطَرُّهٗۤ اِلٰی عَذَابِ النَّارِ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ
“আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম বলল, ‘হে আমার রব, আপনি একে নিরাপদ নগরী বানান এবং এর অধিবাসীদেরকে ফল-মুলের রিয্ক দিন যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে’। তিনি বললেন, ‘যে কুফরী করবে, তাকে আমি স্বল্প ভোগোপকরণ দিব। অতঃপর তাকে আগুনের আযাবে প্রবেশ করতে বাধ্য করব। আর তা কত মন্দ পরিণতি’।” [আল-বাকারা: (২) ১২৬]
- لَیۡسَ الۡبِرَّ اَنۡ تُوَلُّوۡا وُجُوۡهَكُمۡ قِبَلَ الۡمَشۡرِقِ وَ الۡمَغۡرِبِ وَ لٰكِنَّ الۡبِرَّ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ الۡمَلٰٓئِكَۃِ وَ الۡكِتٰبِ وَ النَّبِیّٖنَ ۚ وَ اٰتَی الۡمَالَ عَلٰی حُبِّهٖ ذَوِی الۡقُرۡبٰی وَ الۡیَتٰمٰی وَ الۡمَسٰكِیۡنَ وَ ابۡنَ السَّبِیۡلِ ۙ وَ السَّآئِلِیۡنَ وَ فِی الرِّقَابِ ۚ وَ اَقَامَ الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَی الزَّكٰوۃَ ۚ وَ الۡمُوۡفُوۡنَ بِعَهۡدِهِمۡ اِذَا عٰهَدُوۡا ۚ وَ الصّٰبِرِیۡنَ فِی الۡبَاۡسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ حِیۡنَ الۡبَاۡسِ ؕ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الۡمُتَّقُوۡنَ
“ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী।” [আল-বাকারা: (২) ১৭৭]
- আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। যে আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে লোক আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস করে, সে যেন ভাল কথা বলে, নতুবা চুপ করে থাকে।” (হাদীস নং ৫৫৯৩)
- আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“কোন ব্যক্তি যদি কেয়ামতের দৃশ্য দেখতে চায় সে যেন সূরা তাকভীর, সূরা ইনফিতার ও সূরা ইনশিক্কাক পাঠ করে।” (সহীহ আত্-তিরমিযী, হাদীস-৩৩৩৩)
- সাহাল ইবনে সাহাদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন মানব জাতিকে মথিত আটার রুটির নেয় লালিমাযুক্ত শ্বেতবর্ণ জমিনে একত্রিত করা হবে, যেখানে কারো কোন ঘর-বাড়ির চিহ্ন থাকবে না।” (বুখারী মুসলিম সপ্তম খন্ড, মিসকাত-৫২৯৮)
পোস্টের শেষকথাঃ দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের কিছু আলোচনা
দুনিয়া ও আখিরাত সম্পর্কে ইসলামের আলোচনার শেষকথায় আমরা বলতে পারি যে, মানুষ এই নশ্বর ও ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে শুধুমাত্র এক মুছাফিরের ন্যায় এসেছে যার মূল গন্তব্যস্থল হচ্ছে আখিরাত বা পরকাল। দুনিয়াতে যে যেমন কর্ম করবে পরকালে ঠিক তেমনই ফল পাবে। তাই চলুন আমরা সবাই দিনের পথে চলি আর ইসলামী আইন মেনে চলে।
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url