জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
সূচিপত্রঃ জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
- জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
- আশারায়ে মুবাররাহ নামে মুহাম্মদ সাঃ এর ১০ জন বিশিষ্ট সাহাবী
- নবীজির সবচেয়ে প্রিয় সাহাবীর নাম
- জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
- জান্নাতি মহিলা সাহাবীর নাম
- জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবন থেকে শিক্ষনীয় বিষয়
-
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবনী নিয়ে জনপ্রিয় বইসমূহ
- জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী সম্পর্কিত আরো প্রশ্ন উত্তর
- শেষ মন্তব্যঃ জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম ইসলামের ইতিহাসে খুব সুন্দর ভাবে লেখা রয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে সাহাবীদের বিভিন্ন অবদানের কথা ও ট্যাগ যতই বলা হোক না কেন তা কখনোই শেষ হওয়ার কথা নয়। তাদের মধ্যে এমন কিছু সৌভাগ্যবান সাহাবী রয়েছেন যারা নবীজি (সঃ) এর দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করেছিলেন।
১। আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.)
আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা, রাসূল (সাঃ) এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ইসলামের প্রথম পুরুষ সাহাবী।
২। ওমর ইবনুল খাত্তাব (র.)
ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় খলিফা ইনসাফ ও উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত অন্যতম ন্যায়পরায়ণ।
৩। ওসমান ইবনে আফফান (রা.)
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে ওসমান ইবনে আফফান পরিচিত। তিনি দুইবার রাসুল সাঃ জামাটা হয়েছিলেন। কুরআনের প্রচারে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
৪। আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)
আলী ইবনে আবু তালিব ছিলেন এবং রাসুল সাঃ এর চাচাতো ভাই ও জামাতা। নবীজির কন্যা ফাতিমার একমাত্র স্বামী ছিলেন হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (র.)
৫। তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রা.)
ইসলামের অন্যতম জানাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী ছিলেন তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.)। ওহুদ যুদ্ধে রাসুল সাঃ কে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সাহসিকতা দেখান।
৬। জুবায়ের ইবনে আউয়াম (রা.)
জুবায়ের ইবনে আউয়াম ইসলামের অন্যতম একজন সাহাবী যিনি জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন। তিনি রাসূল সাঃ এর ফুফাতো ভাই ছিলেন ইসলামের প্রথম তরুণ মুসলমানদের একজন।
৭। আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)
আব্দুর রহমান ইবনে আউফ জান্নাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত একজন সাহাবী ছিলেন। তিনি একজন দানশীল সাহাবী ছিলেন। তার ধন সম্পদের কমতি ছিল না ইসলামের অর্থনীতি উন্নয়নের ভূমিকা রাখেন।
৮।সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)
সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস ছিলেন একজন সাহাবী এবং জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত। বিখ্যাত যোদ্ধা ছিলেন তিনি এবং ইরান বিজয়ের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত হিসেবে ইতিহাসে।
৯। আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.)
আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত কোনতম একজন সাহাবী। তিনি ছিলেন একজন আমানতদার, উপাধিপ্রাপ্ত, সিরিয়ার ফৌজের সেনাপতি।
১০। সাঈদ ইবনে জায়েদ (রা.)
সাঈদ ইবনে জায়েদ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ইসলামের পক্ষে অনেক লড়াই করেছেন এবং সাহসী ছিলেন।
১১। বিলাল ইবনে রবাহ (রা.)
বেলাল ইবনে রবাহ ছিলেন অন্যতম একজন সাহাবী যিনি রাসূল সাঃ এর কাছ থেকে জানাতে সুসংবাদ পান পান। তিনি ছিলেন একজন মোয়াজ্জিন তার পায়ের শব্দ জান্নাতে রাসুল সাঃ শুনেছেন।
১২। আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা.)
আমার ইবনে ইয়াসির ছিলেন জান্নাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত শহীদ সাহাবী। তিনি সিফফিনের যুদ্ধের শহীদ হন। তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী। নবীজির ঘনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন।
১৩। সালমান ফারসি (রা.)
সালমান ফারজানা তোমায় একজন জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবী। তিনি ফারস দেশের মহান আলেম ছিলেন। তাকে রাসুল সাঃ আমাদের পরিবারভুক্ত বলেছিলেন।
১৪। সহায়ব রুমি (রা.)
তিনি ইসলামের ইতিহাসে মহান ত্যাগী ছিলেন কারণ ইসলামের প্রতি ভালোবাসার কারণে তিনি তার সম্পদ ত্যাগ করেছিলেন। তিনি রাসূল সাঃ কর্তৃক জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।
১৫। জাফর ইবনে আবু তালেব (রা.)
জাফর ইবনে আবু তালেব ছিলেন রাজশির দরবারে ইসলামের পক্ষে ভাষণ দাতা। রাসুল সাঃ তাকে জান্নাতের পাখায় উড়তে দেখেছেন শহীদ হওয়ার পর।
১৬। খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)
তিনি ছিলেন অন্যতম জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী। বহু যুদ্ধের বীর তিনি এবং তাকে আল্লাহর তরবারি ও বলা হয়। তিনি জান্নাতের আশ্বাসপ্রাপ্ত একজন সাহাবী।
১৭। হুজাইফা ইবনে ইয়ামান(রা.)
তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী এবং খ্যাতনামা সেনাপতি, দেশ বিজেতা, প্রথম জ্ঞানের অধিকারী। তিনি বদর ও ওহুদ, খন্দকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৮।আবু দারদা (রা.)
আবু দারদা ছিলেন ইসলাম শিক্ষার প্রচারক একজন মহান জ্ঞানী। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ইবাদত ও জ্ঞানচর্চায় নিজেকে মনোনিবেশ করেন।
১৯। ইক্কাসা ইবনে হিমশান (রা.)
তিনি একজন বিশিষ্ট সাহাবী ছিলেন। রাসুল সাঃ তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দেন যাব। বদরের যুদ্ধে তার তরবারি ভেঙে গেলে নবীজি (সা:) তাকে একটি খেজুরের ডাল দেন।
২০। মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)
মুয়াজ ইবনে জাবাল ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম একজন জান্নাতের সুপারিশ প্রাপ্ত সাহাবী। সবচেয়ে বেশি হালাল-হারাম বোঝাতে পারদর্শী বলে রাসূল সাঃ তার প্রশংসা করতেন।
২১। উবাই ইবনে কাব (রা.)
উবাই ইবনে কাব কুরআন বিশারদ সাহাবী ছিলেন। তার কন্ঠ এতই মধুর ছিল যে যে কেউ তার কন্ঠে কোরআন পাঠ শুনলে প্রশংসা করত। রাসুল সাঃ নিজেই তার কোরআন শুনে আনন্দ পেতেন।
২২। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ ইসলাম। ইসলামের অন্যতম একজন সাহাবী যিনি প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন। তার কুরআন তেলাওয়াত ছিল অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও বিশুদ্ধ অর্থাৎ কুরআন তেলাওয়াতে তিনি খুবই পারদর্শী ছিলেন।
২৩। আবু হুরায়রা (রা.)
আবু হুরায়রা ছিলেন সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা কারী সাহাবী। তার কাছে ৫৩৭৪ টি হাদিস সংকলিত হয়েছে।। তিনি ছোট থেকে বিড়ালছানা পুষতেন এবং ভালোবাসতেন তাই তাকে আবু হুরায়রা নাম দেওয়া হয়েছিল।
আরো পড়ুনঃ
২৪। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব এর পুত্র। ওমরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি হাদিস বর্ণনা করতেন তার কাছ থেকে ২৬৩০ টি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি ছিলেন উল্লেখযোগ্য আলেম সাহাবী।
২৫। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)
আব্দুল ইবনে আব্বাস ছিলেন তাফসির ও হাদিস বিশারদ। ইসলামের ইতিহাসে জান্নাতের সুপারিশ প্রাপ্ত অন্যতম একজন সাহাবী। রাসুল সাঃ তার জন্য দোয়া করতেন আল্লাহ যেন তাকে দিনের গভীর জ্ঞান ও কুরআনের ব্যাখ্যা বোঝার ক্ষমতা দান করেন।
২৬। সা'দ ইবনে মু'য়াজ(রা.)
তিনি ছিলেন তিনি ইসলামের প্রথম দিকের একজন সাহাবী ছিলেন তিনি উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন এবং জান্নাতের সংবাদ প্রাপ্ত একজন সাহাবী যার মৃত্যুর সময় আরশ কাঁপে।
২৭। হানজালা ইবনে আমর (রা.)
হানজালা ইবনে আমার ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন সাহাবী। অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং শহীদ হয়েছেন। তার উপাধি ছিল 'গাসিলুল মালাইকা' যার অর্থ যাকে ফেরেশতারা গোসল করিয়েছেন। রাসুল সাঃ বলেছেন যে ফেরেশতারা তাকে স্বর্গীয় পানিতে গোসল করিয়েছেন।
২৮। আবু আইয়ুব আনসারী (রা.)
আবু আইয়ুব আনসারী ছিলেন রাসূল সাঃ এর ঘনিষ্ঠ অনুসারী। তিনি কনস্টান্টিনোপল অবরোধে অংশগ্রহণ করেন মদিনা ইউনিভার্সিটি আসলাম তার বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন তিনি খুব যত্নে সহকারে রাসুল সাঃ মেহমানদারী করেছিলেন।
২৯। আবু তালহা আনসারি (রা.)
তিনি একজন জানাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী। তিনি ছিলেন ওহুদের একজন বীর যোদ্ধা। ওহুদের যুদ্ধে তিনি রাসুল সাঃ কে রক্ষার জন্য সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ তীরন্দাজ, তার ছিল অসাধারণ যুদ্ধ কৌশল।
৩০। অসীম ইবনে সাবিত (রা.)
ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী। তিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি এক গোপন অভিযানের অংশ নেন যেখানে তাকে প্রতারণার মাধ্যমে হত্যা করা হয়। তিনি নবীজির কাছ থেকে জান্নাতের সংবাদ পেয়েছিলেন।
৩১। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.)
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ ছিলেন অন্যতম প্রধান হাদিস বর্ণনা কারি। ইসলাম প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তিনি 697 খ্রিস্টাব্দে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। নবীজির জীবন দশায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন যার মধ্যে যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।
৩২। উম্মে হারাম বিনতে মিলহান(রা.)
উম্মে হারাম বিনতে মিলহন ছিলেন ইসলামের একজন বিশিষ্ট নারী সাহাবী। তিনি রাসুল সাঃ এর খালা ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর কাছে থেকে পাঁচটি হাদিস বর্ণনা করেছেন যা ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
৩৩। উমাইর ইবনে হুমাম (রা.)
উমাইর ইবনে হুমাম ছিলেন একজন সাহসী বীর যোদ্ধা। তিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন যুদ্ধের সময় রাসূল সাঃ তাকে বলেছিলেন এগিয়ে যাও এবং জান্নাতকে আলিঙ্গন কর যার প্রশস্ত তা আকাশ ও পৃথিবীর সমান। এ কথা শুনে তিনি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
৩৪। আবু দাজামা(রা.)
আবু দাজামা ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা উহুদের যুদ্ধে তিনি রাসুল সাঃ এর কাছ থেকে একটি বিশেষ তলোয়ার লাভ করেন। ওদের যুদ্ধে নবীজিকে বাঁচানোর জন্য তিনি তার পিঠ পেতে দিয়েছিলেন, যাতে নবীর উপরে কোন শত্রুর তীর না লাগে।
৩৫। সাহল ইবনে হুনাইফ(রা.)
সাহল ইবনে হুনাইফ ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী তিনি বদর ওহুদ ও অন্যান্য অংশগ্রহণ করেছিলেন ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত তিনি ছিলেন অন্যতম একজন সাহাবী।
৩৬। সুলাইমান ইবনে সরদ (রা.)
সুলাইমান ইবনে সরদ যেভাবে পরিচিত কারবালার ঘটনার পরবর্তী প্রতিশোধ অভিযানের নেতৃত্বে দেওয়ার জন্য। তিনি জানাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত অন্যতম একজন সাহাবী। তিনি রাসূল সাঃ এর ঘনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন।
৩৭। খাব্বাব ইবনে আরাত (রা.)
খাববাব ইবনে আরাত ছিলেন ষষ্ঠ ব্যক্তি যিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলামের জন্য কঠোর নির্যাতন এর শিকার হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দাস ইসলাম গ্রহণের পর তার মনিব তার ওপর শারীরিক নির্যাতন করতেন। পরবর্তীতে তিনি 39 হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
৩৮। সাবিত ইবনে কাইস (রা.)
তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ বক্তা ইসলামের পক্ষে শক্তিশালী ভাষণ দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি সিফফিন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইসলামের জন্য তিনি অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।
৩৯। বারা ইবনে মালিক (রা.)
বারা ইবনে মালিক ছিলেন রাসুল সাঃ এর সেবক আনাস ইবনে মালিক (র.) এর ভাই। আনাস ইবনে মালিক একজন বীর যোদ্ধা বিভিন্ন যুদ্ধের দিনে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিশেষ করে তিনি ইয়াম আমার যুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত অন্যতম একজন সাহাবী ছিলেন।
৪০। আবু মালিক আল আশ'আরী (রা.)
তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত হাদীস বর্ণনাকারী। যার কাছে থেকে ৪২ টি হাদিস সংকলিত হয়েছে। এখনো তোমায় একটা হাদিসে বলেছিলেন পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। তিনি রাসুল সাঃ এর শিক্ষা অনুসারে জীবন যাপন করতেন।
৪১। ইয়াসির (রা.)
ছিলেন ইসলামের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট সাহাবী। তিনি ছিলেন আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা:) এর পিতা এবং ইসলামের দ্বিতীয় শহীদ। তিনি ইসলামের শহীদ নারী সুমাইয়া (রা:) স্বামী। কুরাইশদের কঠোর নির্যাতনের শিকার হন তিনি। নবীজী তাকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন এবং জান্নাতের সুসংবাদ দেন।
আশারায়ে মুবাররাহ নামে মুহাম্মদ সাঃ এর ১০ জন বিশিষ্ট সাহাবী
আশারায়ে মুবাররাহ নামে মুহাম্মদ সাঃ এটা ১০ জন বিশিষ্ট সাহাবী ছিলেন। যাদের জীবদ্দশায়ী রাসূল সাঃ জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন। চলুন তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এবং নাম জানা যাক।
- হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক (রা:)-ইসলামের প্রথম খলিফা এবং নবী সাঃ এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ।
- হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা:)-ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা যিনি ন্যায় বিচারের জন্য প্রসিদ্ধ।
- হযরত ওসমান ইবনে আফফান-তিনি ইসলামের তৃতীয় সাহাবী, যার শাসনামলে কুরআনের সংকলন সম্পন্ন হয়
- হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা:)-তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা যার শাসনামলে কোরআনের সংকলন সম্পন্ন হয়।
- হযরত তালহা ইবনে ওবাইদুল্লাহ-ইসলামের ইতিহাসে তিনি একজন বিশিষ্ট খলিফা এবং রাসুল সাঃ এর জামাতা।
- হযরত জুবাইর ইবনুল আউয়াম (রা:)-তিনি ছিলেন বদর ও ওহুদের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবী।
- হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা:)-তিনি ছিলেন নবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর ফুফাতো ভাই এবং ঘনিষ্ঠ সাহাবী।
- হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা:)-প্রথম মুসলিম যিনি ইসলামের জন্য তীর ছুড়ে ছিলেন।
- হযরত সাঈদ ইবনে যাঈদ (রা:)-মক্কার সম্মানিত কুরাইশ বংশের একজন বিশিষ্ট সাহাবী।
- হযরত আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ -রাসুল সাঃ তাকে উম্মতের আমিন বা সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেন।
নবীজির সবচেয়ে প্রিয় সাহাবীর নাম
নবীজির সবচেয়ে প্রিয় সাহাবীর নাম কি এ ব্যাপারে বেশিরভাগ মানুষই হয়তো জানে। তবে মুসলিম হিসেবে সকলের দাবিতে জীবন কাহিনী এবং তাদের ইসলামের পথে জিহাদ করার ঘটনাগুলো জানা জরুরী। কারণ মুসলিম হয়ে ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষই জানে না বা জ্ঞান চর্চা করেনি। তবে আজকে জানবো নবীজির সবচেয়ে প্রিয় সাহাবীর নাম কি?
আরো পড়ুনঃ
নবীজির সব কঠিন এবং চরম মুহূর্তে তিনি নবীর পাশে ছিলেন। হিজরতের সময় সঙ্গী হিসেবে তিনি ছিলেন। সবচেয়ে বেশি ইসলামের খেদমতে সম্পদ ব্যয় করেছিলেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি ছিলেন সত্যবাদী এবং বিশ্বস্ত যার কারণে তাকে উপাধি দেওয়া হয়েছিল "সিদ্দিক"
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত স্বাভাবিক কাদের বলা হয়?
উত্তর: যেসব চাবি কে রাসুল সাঃ জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, তারা।
প্রশ্ন: কতজন সাহাবীকে জীবিত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর: ১০ জন সাহাবীকে একত্রে এবং আরও অনেককে বিভিন্ন সময় আলাদা ভাবে।
প্রশ্ন: নবীজির সালাম কতজন সাহাবীর নাম একসঙ্গে নিয়ে জান্নাতের সুসংবাদ দেন?
উত্তর: ১০ জন-যাদের বলা হয় আশারায়ে মুবাররাহ।
প্রশ্ন: ইসলামের প্রথম শহীদদের মধ্যে কি কেউ জান্নাতে সুসংবাদ পেয়েছেন?
উত্তর: হ্যাঁ, সুমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু নারীদের মধ্যে প্রথম শহীদ।
প্রশ্ন: জান্নাতের আটটি দরজা সম্পর্কে কোন সাহাবীকে বিশ্ব সম্মান দেয়া হয়েছে?
উত্তর: আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ)-তাকে জান্নাতের সব দরজা থেকে ডাক দেওয়া হবে।
জান্নাতি মহিলা সাহাবীর নাম
জান্নাতে মহিলা সাহাবীর নাম বেশিরভাগ মানুষের অজানা। তবে ইসলামের ইতিহাসে সাহাবীদের জীবনে পড়ে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করা যায়। কারণ প্রত্যেক সাহাবী রাসূল সাঃ এর অনুসারী ছিলেন। প্রত্যেকে নবীজির দেখানো পথে চলেছেন। ইসলামের ইতিহাসে বেশ কিছু মহীয়সী সাহাবী নারী আছেন যাদের সম্পর্কে হাদিস বইগুলোতে জানাতে সুসংবাদ বা জান্নাতি হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
- খাদিজা বিনতে খোয়াইলিদ (রা.)
- ফাতিমা যাহারা
- আয়েশা সিদ্দিকা
- হাফসা বিনতে ওমর
- উম্মে সালামা
- জয়নাব বিনতে জাহশ
- সওদা বিনতে জামা
- মাইমুনা
- আসমা বিনতে আবু বক্কর
- সুমাইয়া
- উম্মে আম্মারা নাসিবা
- রুবাইয়া বিনতে মুয়াওয়িয
- উম্মে রুমান
- উম্মে সুফিয়ান
- উম্মে ফজল
- উম্মে আইমান
- উম্মে শারিফ
জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবন থেকে শিক্ষনীয় বিষয়
জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবন থেকে ১০ টি শিক্ষনীয় বিষয় জানা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবী বলতে আসলে বোঝানো হয়েছে তারা জান্নাতে যাবে, তাহলে মানুষ হিসেবে আমাদের জান্নাতের আশা করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা অত্যন্ত জরুরি। জান্নাতি হতে হলে অবশ্যই আল্লাহর কথা অনুযায়ী এবং নবীজির দেখানোর পথে চলতে হবে।
- জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবন থেকে শিক্ষনীয় বিষয়গুলোর মধ্যে প্রথমত অবিশ্বাস্য ঈমান ও তাওয়াক্কুল অর্থাৎ আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে। সাহাবীরা কোন কিছুর বিনিময় নয় শুধু আল্লাহর ও রাসুলের প্রতি ভালোবাসা থেকে ইসলাম গ্রহণ করেন।
- জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীরা নিজেদের ধন সম্পদ ,পরিবার, এমনকি জীবন কেউ আল্লাহর পথে এবং ইসলামের পথে কুরবানী দিয়েছেন। দিন প্রচারে ছিল তারা অটল।
- সত্যবাদিতা ও আমানতদারি ছিল তাদের অন্যতম একটি গুণ। আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং ওমর এর ন্যায়পরায়ণতা ইতিহাসের অংশ। তারা কখনো মিথ্যা কথা বলেননি অন্যায়কে মেনে নেয়নি।
- রাসুলের কথা ও কাজ মেনে চলতে তারা কখনো দ্বিধাবোধ করতেন না এটি তাদের জান্নাত প্রাপ্তির অন্যতম কারণ।
- তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামের পতাকা পুরা বিশ্বে ছড়িয়েছেন এবং সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলেন যা মুসলিম উম্মার জন্য পথ নির্দেশক।
- তারা দুনিয়াকে প্রাধান্য দিতেন না আখিরাত কে প্রাধান্য দিতেন এর জন্য তারা প্রস্তুতি নিতেন। দুনিয়াকে অস্থায়ী মনে করতেন, তাইতো জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।
- আবু বক্কর ওমর ওসমান ও আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু যার খলিফায় ছিলেন ন্যায় পরাণ ও আল্লাহর ভীতি সম্পন্ন শাসক।
- ইসলাম প্রচার এবং ইসলামের দাওয়াত দিতে তারা কখনো পিছপা হননি। তাদের উপর অনেক অত্যাচার হওয়া সত্বেও তারা ইসলাম প্রচার করেছিলেন।
- তারা মৃত্যুকে কখনো ভয় পেতেন না বরং শাহাদাতকে বরণ করে নিয়েছিলেন। কারণ বিভিন্ন যুদ্ধে তারা শহীদ হয়ে জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করেছিলেন।
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবনী নিয়ে জনপ্রিয় বইসমূহ
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবনে নিয়ে জনপ্রিয় বইসমূহ এর তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো। আপনারা চাইলে এই বইগুলো কিনে সাহাবীদের জীবনে পড়তে পারেন এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। বইগুলো বাংলা উর্দু আরবি ও ইংরেজি ভাষায় পাওয়া যায় বিভিন্ন ইসলামিক গবেষক আলেম সমৃদ্ধ।
- বায়তুস সাহাবা-লেখক মাওলানা মোঃ ইউসুফ কান্ধলভি-বাংলা/উর্দু ভাষা।
- আসারায়ে মুবাররাহ - মুফতি মোহাম্মদ শফী (রহ.) - বাংলা/ উর্দু ভাষা।
- জীবন্ত সাহাবীদের গল্প - লেখক মাওলানা আব্দুল হাসান আলী নদভী - বাংলা ভাষা।
- সাহাবায়ে কেরামের ঈমান ও আমল - লেখক সাইখুল হাদিস জাকারিয়া কান্দলভী - বাংলা ভাষা।
- সিরাতে সাহাবা - লেখক সাঈদ রমাদান আল বুতি - আরবি/বাংলা ভাষা।
- সাহাবীদের জীবনচরিত - লেখক প্রফেসর গোলাম আযম - বাংলা ভাষা।
- Men around the Messenger - লেখক খালিদ মোহাম্মদ খালিদ - ইংরেজি/আরবি ভাষা।
- জান্নাত প্রাপ্ত সাহাবীদের জীবন - মাওলানা শামসুদ্দিন - বাংলা ভাষা।
- আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু - ড. আলী মহম্মদ সাল্লিবি - বাংলা ভাষা।
- ওসমান ইবনে আফফান (রা:) - লেখক ড. আলী মোঃ সাল্লাবী - বাংলা ভাষা।
- আলী ইবনে আবু তালিব (রা:) - লেখক ড. আলী সাল্লাবী - বাংলা ভাষা।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী সম্পর্কিত আরো প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: কোরআন সংকলনের কাজ কোন খলিফার সময় শুরু হয়?
উত্তর: আবু বক্কর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর খিলাফাতে।
প্রশ্ন: জুবায়ের ইবনে আউয়াম সম্পর্কে বিশেষ তথ্য কি?
উত্তর: তিনি ছিলেন নবীজির ফুফাতো ভাই এবং সাহসী যোদ্ধা এবং অন্যতম সাহাবী।
প্রশ্ন: জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবীদের মধ্যে কে ছিলেন ধনী ও দানশীল?
উত্তর: আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ)।
প্রশ্ন: আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বিশেষ তথ্য কি?
উত্তর: তিনি নবীজির ঘরে বড় হন, তরুণ সাহাবীদের মধ্যে অন্যতম।
প্রশ্ন: হাদিসে উল্লেখ আছে ওমর রাঃ কে দেখে শয়তান কি করে?
উত্তর: ওমরকে দেখলে শয়তান রাস্তা পরিবর্তন করে।
শেষ মন্তব্যঃ জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম
আলোচনা পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী এবং মহিলা সাহাবীদের জীবন চরিত প্রত্যেকটি মুসলমানের জানা দরকার। জীবন যাপন করার জন্য এ সকল জীবনে কাব্যগুলো জানা জরুরী। আমরা পুঁথিগত শিক্ষাই নিজেকে শিক্ষিত করি কিন্তু ইসলামিক জ্ঞান চর্চা বা অর্জন করতে পিছপা হই। তাই যারা জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম জানতে চান এবং তাদের জীবনে নিয়ে কিছু বই উল্লেখ করা হলো সেগুলো সংগ্রহ করে পড়তে পারেন।
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url