আয়রন ট্যাবলেট খেলেই কি ওজন বাড়ে? জানুন সত্যি না মিথ্যা!
সূচিপত্রঃ আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
- আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
- মোটা হওয়ার পেছনে কি আয়রন ট্যাবলেট দায়ী
- শরীরে আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ গুলো কি কি
- মেয়েদের শরীরে আয়রনের অভাবে কি হয়
- আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
- আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রধান কারণ
- আইরন ট্যাবলেট এর নাম
- সরকারি আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- আয়রন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- আইরন ট্যাবলেট খাওয়া সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্ন উত্তর
- শেষ মন্তব্যঃ আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এটি জানার আগে জানতে হবে আইরন ট্যাবলেট মূলত শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সমূহ সরবরাহ করে যা হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। আইরন ট্যাবলেট খেলে মোটা হয় এ ধারণা মাথায় আনা যাবে না। কারণ অনেকে মনে করেন আইরন ট্যাবলেট খেলে মোটা হয় কিন্তু ধারণাটি সঠিক নয়।
আইরিন ট্যাবলেট খাওয়া হয় মূলত শরীরে আয়রনের ঘাটতি এবং রক্ত শূন্যতার কারণে। শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, আর বেশিরভাগ চিকিৎসকরা রক্তশূন্যতা রোগীদের ক্ষেত্রে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করতে দিয়ে থাকেন। যারা গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন তাদেরকে এই ধরনের আয়রন ট্যাবলেট বেশি সাজেস্ট করা হয়।
গর্ভাবস্থায় রক্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যার কারণে গর্ভবতী নারীদের নির্দিষ্ট গর্ভকালীন সময়ে আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া অনেকের শরীরে থাইরয়েড বেশি থাকলে মোটা হতে থাকে কিন্তু এ সময় যদি কেউ আয়রন ট্যাবলেট খায় তখন তারা মনে করে এই ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে মোটা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ধারণাটি ভুল।
আরো পড়ুনঃ খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ বিস্তারিত জানুন
বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে যায় যার কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এ সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিলে অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। এবং বিভিন্ন ব্যবহারকারীর মতে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে খাবার গ্রহণের প্রবণতা বেড়ে যায় যার কারণে ওজন বৃদ্ধি হতে থাকে।
এছাড়া আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেট ফেঁপে যেতে পারে, এবং মল ত্যাগ কম হয় যার কারণে ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। অনেকে এটি আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলে মনে করেন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কখনোই শরীর মোটা হয় না আইরন ট্যাবলেট মূলত শরীরের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে।
মোটা হওয়ার পেছনে কি আয়রন ট্যাবলেট দায়ী
মোটা হওয়ার পেছনে কি আয়রন ট্যাবলেট দায়ী এ প্রশ্নের উত্তর জানার আগে প্রথমে বুঝতে হবে আইরন ট্যাবলেট কিভাবে শরীরে কাজ করে এবং তা শরীরে ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে কোন ভাবে জড়িত কিনা। যদি এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর খুঁজতে যান তাহলে বলা যায় যে আয়রন ট্যাবলেট সরাসরি মোটা হওয়ার কোন কারণ নয়।
তবে এটি খাওয়ার পেছনে কিছু পরোক্ষ প্রভাব থাকতে পারে যা মানুষকে মোটা হওয়ার কিছু অনুভূতি দিতে পারে। যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তারা যদি আয়রন ট্যাবলেট খাই, খাওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং অনেক ক্ষুধা বেড়ে যায়, যার কারণে বাড়তি খাবার খেয়ে ফেলে, ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে থাকে।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে ও তার সমাধান
তবে এটা আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রতিফল বলা যায় না। শরীরে রক্তের ঘাটতি থাকলে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পরে যদি হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীরের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং স্বাভাবিকভাবেই খাবারের রুচি ফিরে আসে যার কারণে ওজন বৃদ্ধি হলে অনেকেই এটাকে আয়ন ট্যাবলেট খাওয়ার কারণ মনে করে থাকেন। কিন্তু ধারণাটি সঠিক নয়, মোটা হওয়ার জন্য আইরন ট্যাবলেট কোনভাবে দায়ী নয়।
শরীরে আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ গুলো কি কি
শরীরে আয়রনের ঘাটতি লক্ষণগুলো জানা থাকলে খুব সহজেই এ ধরনের রোগ গুলো চিহ্নিত করতে পারবেন। কারণ আমাদের শাড়ির বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে কিন্তু রোগ সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে আমরা বুঝে উঠতে পারি না কি ধরনের সমস্যা হয়েছে এবং কিসের অভাবে হয়েছে শরীরে। তবে আয়রনের ঘাটতি হলে অনেক ধরনের লক্ষণ দেখা যায় চলুন সেগুলো কি কি দেখে নেয়া যাক।
- শরীরে ক্লান্তি অনুভব হওয়া এবং শক্তি না থাকা এবং চিরস্থায়ী দুর্বলতা এবং অসুস্থতা।
- শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠে এবং যার কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
- অনেক সময় বসে থেকে ওঠার পরে মাথা ঘুরে ওঠে এটিও আয়রনের ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ বলা যেতে পারে।
- অনেক সময় আয়রনের ঘাটতি হলে চেহারা ফ্যাকাসে ভাব হয়ে যায় ঠোঁট চোখের নিচে সাদা এবং রক্তহীন লাগে।
- অনেক সময় বুক ধরফর করে এবং হৃদ স্পন্দন দ্রুত হয়।
- ঘাটে থাকলে একটুতেই ঠান্ডা লেগে যায় এবং শরীরে অক্সিজেন এর পরিমাণ কমে যায় যার ফলে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে থাকে।
- ঘাটতি হলে অনেক ক্ষেত্রে চুল পড়ে যায় এবং শরীরের দেহকোষে অক্সিজেন না পৌঁছার কারণে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মেয়েদের শরীরে আয়রনের অভাবে কি হয়
মেয়েদের শরীরে আয়রনের অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাধতে পারে। আয়রনের অভাব শুধু যে মেয়েদের হয় তা কিন্তু নাই ছেলে মেয়ে উভয়ের আয়রনের ঘাটতি থাকতে পারে। আয়রনের ঘাট থেকে অনেক ধরনের লক্ষণ আলোচনা করা হয়েছে এ ধরনের লক্ষণগুলো ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে হলেই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। মেয়েদের মাসিকের কারণে নিয়মিত রক্ত ক্ষয় হয় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণের আয়রন না খাওয়া হয় তাহলে রক্ত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে থাকে এবং রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
- আইরন দেহের রক্ত বৃদ্ধি করে যার কারণে মেয়েদের অনেক সময় রক্তস্বল্পতার কারণে শরীর দুর্বল অনুভব হয় এবং কাজের সময় শক্তি পাওয়া যায় না।
- মেয়েদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে ঘন ঘন মাথা ঘুরে, বমি বমি ভাব হয় অনেক সময় চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি আয়রনের অভাবজনিত কারণ হতে পারে।
- মেয়েদের শরীরে আয়রনের অভাব হলে হাত পায়ের নখ ভেঙে যায় ফ্যাকাসে হয়ে যায় এবং চুল পড়ে যেতে থাকে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দুর্বল হতে থাকে, শরীরের শক্তি কমে যায়।
- আয়রনের অভাবে মেয়েদের শরীরের নার্ভাস সিস্টেমে অনেক প্রভাব ফেলে যার কারণে মানসিক অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, রাগ, মেজাজ ছিটখিটে বেড়ে যায়।
- মেয়েদের শরীরে আয়রনের অভাবে চোখের নিচে ফ্যাকাশে সাদা হয়ে যায় এবং ঠোট, মুখ শুকিয়ে যায় এবং ফ্যাকাসে লাগে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে ক্ষুধা বা স্বাদে পরিবর্তন দেখা দেয়। অর্থাৎ কোন খাবারে স্বাদ পাওয়া যায় না ইচ্ছামত কোন খাবার খাওয়া যায় না।
- গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের প্রচুর আয়রনের ঘাটতি থাকে যার কারণে অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে।
- আয়রনের অভাবে ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়, যার কারণে একটুতেই সর্দি, কাশি, ঠান্ডা জনিত সমস্যায় পড়তে হয়।
- মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অনেক সময় শরীর হাপিয়ে ওঠে একটুতেই দুর্বল অনুভব হয় মাঝে মাঝে দম বন্ধ হয়ে আসে।
আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার পর ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক কি?
উত্তর: স্বাভাবিক না, তবে পানি জমে যাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে সাময়িক ওজন বেড়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন: আইরন ট্যাবলেট কি খিদে বাড়িয়ে দেয়?
উত্তর: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক হলে খিদে বেড়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন: গর্ভবতী মায়েরা আয়রন খেলে কি বেশি মোটা হয়?
উত্তর: গর্ভাবস্থায় ওজন বেড়ে যায় স্বাভাবিক, সেটা আয়রনের কারণে নয় বরং হরমোন ও শিশুর বৃদ্ধির কারণে।
প্রশ্ন: আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর কি শরীরে পানি জমে?
উত্তর: সাধারণত না, তবে কিডনির সমস্যা থাকলে পানি যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রধান কারণ
আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার কারণ অবশ্যই রয়েছে। আয়রনের ঘাটতি এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখাতেই আর এই রক্তশূন্যতা পূরণ করার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রধান কারণ গুলো কি কি সেগুলো নিচে তুলে ধরা যাক।
- রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
- গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়, কারণ মা ও শিশু সুস্থতার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।
- মেয়েদের মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হলে আয়রনের অভাব দেখা দেয় এজন্য আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
- কোন ধরনের দুর্ঘটনা বা অপারেশনের পরে প্রচুর রক্ত ক্ষয় হয় যার কারণে শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে এ ধরনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
- অনেক শিশু-কিশোরদের শারীরিক বিকাশ বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে যার কারণে শারীরিক বৃদ্ধির জন্য আয়রনের প্রয়োজন রয়েছে।
- অনেকে আছেন যারা আমিষ খেতে পছন্দ করেন না, শুধু নিরামিষ খেয়ে থাকেন, এ ধরনের ব্যক্তিদের প্রচুর আয়রনের ঘাটতি রয়ে যায়, যার কারণে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
- যারা দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যেমন কিডনি রোগ, ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক, আলসার ইত্যাদি এ সকল রোগীদের জন্য আয়রনের ঘাটতি থেকে যায় যার কারণে আয়রন খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
- বর্তমানে অনেকেই রক্ত দান করে থাকে কিন্তু রক্ত দেওয়ার ফলে তার শরীরে আয়রনের ঘাটতি থেকে যায় এজন্য অনেকেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ডাবের পানি কিংবা এবং আইরন জাতীয় খাবার গ্রহণ করে থাকেন।
আইরন ট্যাবলেটের নাম
আয়রন ট্যাবলেটের নাম যেগুলো বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো তুলে ধরা হলো। যদিও আয়রন ট্যাবলেটের নাম জানা থাকে তারপরও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো খাওয়া উচিত নয়। নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেহেতু আয়রন ট্যাবলেট শরীরের রক্তের ঘাটতি পূরণ করার জন্য খাওয়া হয় তাই প্রয়োজন ছাড়া এটি খাওয়া কখনোই উচিত নয়।
- Ferrocin (ফেরোসিন)
- Sangobion (সংগোবিয়ন)
- Ferose (ফেরোজ)
- Fersolate (ফেরসলেট)
- Hemofer (হেমোফার)
- Ibex Iron+Folic Acid
- Ranferon (রেনফেরন)
- Feroglobin B12 (ফেরোগ্লোবিন বি১২)
- Nutrifer (নিউট্রিফার)
- Zilvit Capsul (জিলভিট ক্যাপসুল)
- Bicozin-I
- Arubin (এরোবিন)
সরকারি আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
সরকারি আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ওর দিকনির্দেশনা জানা জরুরী বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য। আয়রন ট্যাবলেট বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদেরকে বেশি খাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গর্ভবতী নারীদের আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবনের কিছু নিয়ম রয়েছে।
খাবার খাওয়ার আগে খেলে অনেক সময় পেটে অস্বস্তি অনুভব হয়, বমি বমি লাগে তাহলে খাবারের সঙ্গে খেতে পারেন অথবা খাবার খাওয়ার পরেও খাওয়া যায়। যদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান তাহলে আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সরকারি আয়রন ট্যাবলেট গুলো নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক, সরকারি হাসপাতাল অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারেন।
আয়রন ট্যাবলেটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
আয়রন ট্যাবলেট হচ্ছে আয়রনের ঘাটতি পূরণকারী একটি ঔষধ তবে অতিরিক্ত সেবনের ফলে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই আইরন ট্যাবলেট গুলো খেয়ে থাকেন কিন্তু এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জানা থাকলে অবশ্যই অতিরিক্ত খাওয়া থেকে সাবধানতা অর্জন করতে পারবেন।
- আর এ ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে অনেক সময় বমি বমি ভাব অনুভব হয়। খালি পেটে খাওয়ার কারণে এটা হতে পারে।
- ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা, ঢেকুর এবং পেট ফাঁপা সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পেটের সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
- আর ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কিছু পার্শপ্রতিকরার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য যারা নিয়মিত খাই তাদের শরীরের উপর নির্ভর করে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
- এছাড়া ইমিউনিটি সিস্টেমের উপর নির্ভর করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে অনেক সময় পায়খানার রং কালো হয় তবে এটি সাধারণ ব্যাপার ক্ষতিকর ধরা যায় না। আয়রনের কারণে এরকম হতেই পারে।
- খালি পেটে খাওয়ার ফলে অনেকের ক্ষেত্রে পেট ব্যথা এবং অস্বস্তি, পেট জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে। তবে অতিরিক্ত পেট জ্বালাপোড়া করলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন
- অনেক সময় মাথা ঘুরা দুর্বল অনুভব হয় শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে। কারণ আয়রন ট্যাবলেট সকলের শরীরে সহ্য নাও হতে পারে।
- আইরন ট্যাবলেট এমন একটি ঔষধ যা অনেকের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখাইতে পারে তার মধ্যে ডায়রিয়া অন্যতম। যারা প্রথমবার আয়রন ট্যাবলেট খায় তাদের ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা হতে পারে। তবে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
- আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত আয়রন শরীরের জামার ফলে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে যা মারাত্মক আকার ধারণ করার সম্ভবনা থাকে।
আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: নিয়মিত আয়রন খেলে কি ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন?
উত্তর: না, লাইফ স্টাইলে ব্যালেন্স রেখে চললে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।
প্রশ্ন: আয়রনের প্রভাব কি পুরুষ ও নারীদের ক্ষেত্রে একরকম?
উত্তর: প্রভাব একই, তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন খাওয়ার দরকার পড়ে।
প্রশ্ন: আইটেম ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে শরীর ফুলে যায় কেন?
উত্তর: গ্যাস বা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য এমন হতে পারে।
প্রশ্ন: যারা ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করেন তারা কি আয়রন খেতে পারেন?
উত্তর: অবশ্যই পারবেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক ডোজ গ্রহন করা উচিত।
প্রশ্ন: কোন ভিটামিন আইরনের সঙ্গে খেলে ওজন বাড়ে না?
উত্তর: ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বাড়ায়, ওজন বাড়ায় না।
শেষ মন্তব্যঃ আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
উপরের তো সকল আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায় যে আয়রন ট্যাবলেট মূলত রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য খাওয়া হয়। যাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন কম এবং রক্তস্বল্পতা রয়েছে তাদের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে শরীরে রক্তের মাত্রা সঠিক রাখার জন্য চিকিৎসক আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে কখনোই এ ধরনের প্রশ্ন মাথায় আনা উচিত নয়, যে আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় আয়ন ট্যাবলেট খেলে মোটা হয় না তবে বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।