কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে ও তার সমাধান
সূচিপত্রঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে
- কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে
- হাতের চামড়া উঠে যাওয়ার প্রধান কারণ
- শীতের সময় হাতে চামড়া ওঠে কেন
- ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে এ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর
- হাতের চামড়া পড়া বন্ধ করার উপায়
- কি ধরনের খাবার খেলে হাতে চামড়া ওঠা কমবে
- হাতে চামড়া ওঠা কমাতে ব্যবহৃত ওষুধ
- হাতে চামড়া ওঠা প্রতিরোধ করনীয়
- হাতের চামড়া ফেটে যাওয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
- শেষ মন্তব্যঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে
কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে
কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে এটা জানার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে। কারণ কোন ধরনের রোগকে আজকাল ছোট করে দেখা যাবে না। আমাদের সবচাইতে একটি খারাপ অভ্যাস হচ্ছে যে কোন অসুস্থতাকে গুরুত্ব না দেয়া যার ফলে পরবর্তীতে শরীর নিয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। চলুন হাতের চামড়া কেন ওঠে এ ব্যাপারে আলোচনা করা যাক।
হাতের চামড়া ভিটামিনের অভাব হলে উঠতে পারে এটা সত্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে যাদের শরীরে এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে অথবা চর্মরোগ, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদির ওপর আনেকটা নির্ভর করে। অনেকে আছেন যারা প্রচুর পানি নাড়াচাড়া করে তাদের এ ধরনের সমস্যাগুলো হতে পারে। তবে বলা বাহুল্য যে ভিটামিনের অভাব থাকলে এ ধরনের সমস্যা হয় তাছাড়া হাতের চামড়া উঠা শরীরে পুষ্টির ঘাটতির অন্যতম একটি কারণ।
ভিটামিন এ এর অভাবে এ ধরনের লক্ষণ অর্থাৎ হাতের চামড়া উঠতে পারে। নিয়মিত ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র ভিটামিন এ নয় ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলেও এ ধরনের চামড়া উঠার সমস্যা হতে পারে। হাতের চামড়া ওঠা অতিরিক্ত আরও কারণ থাকতে পারে যেমন:
- অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা অর্থাৎ ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত ধোঁয়া।
- শরীরে পানির ঘাটতি হলে অনেক সময় হাত, পা এবং ত্বক ফেটে যায়।
- এছাড়া যাদের ত্বকে সংক্রমণ রয়েছে যেমন একজিমা চর্মরোগ ইত্যাদি এসবের কারণেও হতে পারে।
- আবার অনেকের ক্ষেত্রে হরমোন জনিত সমস্যা হিসেবে এই হাতে চামড়া ওঠাকে ধরা যায়।
- অনেকে আছেন যারা খুব বেশি কাপড় কাচতে পছন্দ করেন যার ফলে ডিটারজেন্ট বেশি নাড়াচাড়া হয় এ কারণেও হাতে চামড়া উঠতে পারে।
- সাবান, খার জাতীয় ডিটারজেন্ট, পানি বেশি ব্যবহার করলে হাতের চামড়া উঠার সম্ভাবনা থাকে।
তাই হাতের চামড়া ওঠা অনেকে সাধারণ সমস্যা হিসেবে ধরলেও এর পেছনে কিছু কারণ লুকিয়ে রয়েছে তার মধ্যে ভিটামিনের ঘাটতি, শরীরের অযত্ন, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদির কারণেও এ ধরনের সমস্যা গুলো দেখা দেয়। তাই যাদের শরীর অনেক শুষ্ক এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা অথবা গরম এর কারণে অল্পতেই হাত, পা,ত্বক ফেটে যায় তাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো বেশি দেখা দেয়।
হাতের চামড়া উঠে যাওয়ার প্রধান কারণ
হাতের চামড়া উঠে যাওয়ার প্রধান কারণ সমূহ জানতে চান তাহলে চলুন কি কারনে হাতের চামড়া উঠে যাই এবং ত্বক খসখসে হয়ে যায় এ নিয়ে নিজেকে প্রধান কারণ তুলে ধরা হলো। কারণ হাতের চামড়া ওঠার অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় কারণ থাকতে পারে। অভ্যন্তরীন ঘাটতির মধ্যে যদি দেহের পুষ্টির ঘাটতি থাকে তাহলে চামড়া উঠে। চলুন কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে দেখে নেয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ জন্ডিস হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে, আর কী খাওয়া যাবে না?
- ভিটামিন বি এর ঘাটতি হলে হাতে চামড়া উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন বি২, বি৩, বি৭ ইত্যাদির ঘাটতি হলে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
- ভিটামিন এ এর অভাব হলেও ত্বক ফেটে যায় এবং বিশেষ করে হাতের চামড়া খসখসে হয়ে উঠতে থাকে।
- ভিটামিন সি এর অভাব হলেও চামড়া দুর্বল হয়ে পড়ে যার কারণে চামড়া উঠতে থাকে।
- ভিটামিন ই এর ঘাটতি অন্যতম একটি প্রধান কারণ হাতের চামড়া উঠার। ত্বকের যত্ন কমে গেলে ভিটামিন ই এর অভাব হয় এবং ত্বক ফাটতে শুরু করে বিশেষ করে হাতের চামড়া উঠে যায়।
- আবার শুষ্ক আবহাওয়ার কারণেও হাতের চামড়া ওঠে। কারণ শুষ্ক আবহাওয়াতে হাত এবং পায়ের তালু জলে যার কারণে আদ্রতা কমে গিয়ে চামড়া উঠে যেতে থাকে।
- অতিরিক্ত সাবান ক্ষার দিয়ে হাত ধোয়ার ফলে অথবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ফলে হাতের চামড়া ফেটে যেতে এবং উঠে যেতে পারে। এ ধরনের জিনিস বেশি ব্যবহার করলে হাতের প্রাকৃতিক তেলের পরিমাণ কমে যায়।
- চর্মরোগ অন্যতম একটি উপাদান হাত ফেটে যাওয়ার। যাদের চর্ম রোগের সমস্যা রয়েছে বা চুলকানি রয়েছে একজিমা তাদের এ ধরনের সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়।
- অনেকের হাতে দাউদ হয় যার কারণে হাতের ত্বক ফেটে যেতে থাকে এছাড়াও দীর্ঘদিন চর্ম রোগের সমস্যায় ভুগলে সরিয়াসিস বা খোসপাচবার মত সমস্যা দেখা দেয়।
- অনেক সময় দেখা যায় মেডিকেলে ডাক্তার কিংবা নার্সদের এ ধরনের সমস্যা গুলো বেশি দেখা দেয় কারণ তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আট-দশ ঘন্টা গ্লাভস পড়ে থাকে যার কারণে প্রাকৃতিক আলো বাতাস হাতে পরেনা এবং হাতের ত্বকের উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
- এছাড়াও ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া/ফাঙ্গাস আক্রমণে হাতের চামড়া উঠে যেতে পারে বিশেষ করে আঙ্গুলের ডগায় আঙ্গুলের ফাঁকে ইত্যাদি জায়গাতে।
- শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং চামড়া উঠতে থাকে।
- হাত দিয়ে যান্ত্রিক কোনো মেশিন এর কাজ করা অথবা শক্ত জিনিস হাত দিয়ে ধরলে অনেক সময় হাতের চামড়া উঠে যায়।
- লোহা কিংবা কোন শক্ত জিনিসের সাথে হাতে ঘষা লাগলেও তাতে চামড়া উঠে যায় তবে দীর্ঘদিন এ ধরনের কাজগুলো করলে বিশেষ করে হাতের চামড়ার প্রচুর সমস্যা দেখা দেয়।
- এছাড়া অনেকের হরমোন জনিত সমস্যার কারণে হাতের চামড়া উঠে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের থাইরয়েড সমস্যা এবং বিভিন্ন কারণে হরমোন এর পরিবর্তনের ফলে এ ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শীতের সময় হাতে চামড়া উঠে কেন
শীতের সময় হাতে চামড়া ওঠা খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। তবে শুধু ঠান্ডা হওয়ার কারণেই যে এ ধরনের সমস্যা হয় তা কিন্তু নয় অনেক কিছুর সমন্বয়ক এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। চলুন শীতের সময় হাতে চামড়া উঠে যাওয়ার পেছনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি।
- শীতকালে আবহাওয়া অনেক শুষ্ক থাকে বাতাসের আদ্রতা কমে যায় যার কারণে ত্বক ফাটতে শুরু করে। বিশেষ করে হাতের ত্বক এবং খসখসে হয়ে যায় অনেক সময় চামড়া উঠতে থাকে।
- শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে গরম পানি বেশি ব্যবহার করা হয় যার কারণে শরীর শুষ্ক হয়ে যায়। কারণ শীতকালে ঠান্ডা পানি ব্যবহারের উপযোগী থাকে না যার কারণে গরম পানি বেশি বেশি ব্যবহার করার ফলে চামড়া ফেটে যায়।
- ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বকের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে যার কারণে ত্বকের চামড়া দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ফাটতে শুরু করে।
- শীতকালের শরীর খুবই ডিহাইড্রেশন হয়ে যায় অর্থাৎ ঠান্ডার কারণে পানি কম খাওয়া হয় যার ফলে ত্বকের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বক ফাটতে শুরু করে।
- শীতকালের ত্বকের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন কিন্তু শীতকালে ত্বকের যত্ন না নেওয়ার ফলে এবং লোশন মশ্চারাইজার ব্যবহার কম করার কারণে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং ফাটতে শুরু করে।
- শীতকালে ঠান্ডার কারণে গোসল কম করা হয় যার কারণে শরীর পানির সংস্পর্শ কম পায় এবং ফাটতে শুরু করে। এবং প্রতিদিন গোসল না করার ফলে শরীরে ময়লা জমে শরীর ফেটে যায়।
- শীতকালে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের রোগ বৃদ্ধি পায় যেমন একজিমা বা চর্মরোগ, সরিয়াসিস ইত্যাদি রোগ বৃদ্ধি পায় এবং হাতের ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে এবং ত্বক ফেটে যায়।
কোন ভিটামিনের অভাবে হাতে চামড়া ওঠে এ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: ভিটামিন এ এর ঘাটতি কিভাবে হাতের চামড়া উঠতে পারে?
উত্তর: ত্বকের আদ্রতা নমনীয়তা কমিয়ে দেয় এবং ত্বক রুক্ষ করে এবং খোশ পাঁচড়ার মত হয়ে যায়।
প্রশ্ন: ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বকের কি ঘাটতে হয়?
উত্তর: ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বকে কোলাজানের উৎপাদন কমে যায় ফলের ত্বক দুর্বল ও শুষ্ক হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন ভিটামিন ই কিভাবে ত্বকের সুরক্ষায় সাহায্য করে?
উত্তর: ভিটামিন ই ত্বকের শুষ্কতা ও জ্বালাপোড়া রোধ করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুরক্ষা দেয়।
প্রশ্ন: চামড়া উঠা কমাতে ঘরোয়া প্রতিকারে কি সহায্য পেতে পারি?
উত্তর: নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারে ঘরোয়াভাবে হাতের চামড়া উঠাতে অনেক প্রতিকার পাওয়া হতে পারে।
হাতের চামড়া পড়া বন্ধ করার উপায়
হাতের চামড়া পড়া বন্ধ করার উপায় জানা থাকলে এ ধরনের অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে। হাতের চামড়া ওটা বন্ধ করার জন্য সর্বপ্রথম হচ্ছে ত্বকের যত্ন নেওয়া। ত্বকের যত্ন না নিলে এ ধরনের স্বাভাবিক সমস্যা গুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। তাই নিজের শরীরের যত্ন নিজেকেই নিতে হবে তবে কার্যকরী কিছু উপায় মেনে চললেই এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।
- যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক রুক্ষ তারা নিয়মিত মুখের ত্বকে কিংবা হাতের ত্বকে অথবা শরীরের ত্বকে লোশন অথবা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিবার হাতমুখ ধোয়ার পরে হাতে লোশন অথবা ক্রিম ব্যবহার করবেন।
- এছাড়া যাদের হাত একটু খসখসে তারা হাত ধোয়ার পরে ভালোভাবে হাত শুকিয়ে বা কাপড় দিয়ে মুছে অলিভ অয়েল মাখতে পারেন এতে শরীরের ত্বক অনেক নরম থাকে, সহজে ফাটেনা।
- আরেকটি হচ্ছে প্রতিবার হাত ধোয়ার পরে হাতে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন অনেক নরম থাকে এবং শুষ্কতা থেকে রক্ষা পায়।
- এছাড়া হাতের চামড়া ওঠা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া এলোভেরা জেল অথবা ভিটামিন ই যুক্ত লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
- শরীর বা হাতের ত্বক ফাটা থেকে রক্ষা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন দৈনিক ১০-১২ গ্লাস পানি পান করতে থাকুন।
- হাতে সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করার সময় গ্লিসারিন বেসড সাবান ব্যবহার করুন। হার্ড কেমিক্যাল যুক্ত সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ভালো মানের হ্যান্ডওয়াশ এবং বেবি সাবান ব্যবহার করতে পারেন।
- বাড়ির যেকোন পানির কাজ করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন এবং ডিটারজেন্ট, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
- শীতের দিনে বাইরে গেলে অবশ্যই হাতমোজা ব্যবহার করুন তাহলে শীতের আদ্রতা থেকে রক্ষা পাবেন এবং হাতে চামড়া ওঠা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
- বেশি বেশি ভিটামিন এ, সি, ই জাতীয় খাবার খান তাহলে হাত কাটা থেকে রক্ষা পাবেন।
- যদি হাতের চামড়া উঠে যায় তাহলে সেখানে ঘষা কিংবা চুলকানো এড়িয়ে চলুন। যত বেশি চুলকাবেন তত বেশি হাতের অবস্থা খারাপ হতে থাকবে।
- হাতে নারিকেল তেল, মধু এবং এলোভেরা জেল ব্যবহার করুন এতে হাতের চামড়া উঠানোর টা কমে যাবে।
কি ধরনের খাবার খেলে হাতের চামড়া ওঠা কমবে
কি ধরনের খাবার খেলে হাতের চামড়া ওঠা কমানো সম্ভব এ ধরনের প্রশ্ন অনেকে করে থাকেন। কারণ হাতের চামড়া ওঠা অনেকেই গুরুত্ব না দিলেও হাতের ত্বকের জন্য খুবই খারাপ একটি সমস্যা। কারণ হাতের চামড়া উঠলে হাতে কোন ধরনের কাজ করা যায় না জ্বালাপোড়া করে ব্যথা করে। তাই যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তারা কিছু খাবারের তালিকা তৈরি করে খেলে অনেকটা কমানো সম্ভব হবে।
আরো পড়ুনঃ স্ক্যাবিস দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
ভিটামিন A সমৃদ্ধ খাবার - গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ডিমের কুসুম, পালং শাক, কলিজা ইত্যাদি খেলে ভিটামিন এ এর ঘাটতি পূরণ হবে।
ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার - পেয়ারা, কমলা, আমলকি, টমেটো, ব্রকলি, লেবু ইত্যাদি খেলে ভিটামিন C এর ঘাটতি পূরণ হয়।
ভিটামিন E সমৃদ্ধ খাবার - অলিভ অয়েল, কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখী তেল, বাদাম ইত্যাদি খেলে ভিটামিন E এর ঘাটতি পূরণ হয়।
ভিটামিন B কমপ্লেক্স - ডাল, ডিম, দুধ, মাছ, শাকসবজি ইত্যাদি খেলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের বাড়িতে পূরণ হয়।
ভিটামিন D - প্রতিদিন ২০-২৫ মিনিট রোদ, ডিম, মাছের তেল।
হাতের চামড়া ওটা কমাতে ব্যবহৃত ওষুধ
হাতের চামড়া ওটা কমানোর জন্য অনেকেই অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু কি ধরনের ওষুধ ব্যবহার করতে হয় এটা অনেকে জানেন না। তবে খাবারের পাশাপাশি কিছু উপাদান ব্যবহার করলে হাতের ত্বকের শুষ্কতা কমায় এবং আদ্রতা ধরে রাখে।
- ময়েশ্চারাইজার ক্রিম/লোশন
- ভেসলিন (Vaseline)
- নিভিয়া সফট (Nivea shaft)
- বায়ো অয়েল (Bio oil)
- বোরোলিন (Boroline)
- ল্যাকটো ক্যালামাইন (Lacto Calamine)
- ছত্রাক সংক্রমনে চামড়া উঠে থাকলে ব্যবহার করতে হবে Clotrimazole (cream), Ketoconazole (Nizoral)
- এলার্জিজনিত সমস্যা বা চুলকানির কারণে যদি হাতে চামড়া উঠে যায় তাহলে অবশ্যই রাতে ঘুমানোর আগে Cetirizine/loratadine/fexofenadin ট্যাবলেট খেতে হবে।
- ত্বকের ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Becozym, Revital এবং ভিটামিন এ সি ই সাপ্লিমেন্ট (centrum Revital ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।
তবে অবশ্যই সতর্কতা অনুযায়ী একজন ভালো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তারপরে সকল ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করতে হবে। কারণ হাতের চামড়া উঠে যাওয়া বিভিন্ন কারন রয়েছে তাই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ক্রিম, এন্টিবায়োটিক অন্যান্য ওষুধ বা মেডিসিন ব্যবহার করা উচিত।
হাতের চামড়া উঠা প্রতিরোধে করণীয়
হাতে চামড়া ওঠা প্রতিরোধ করতে করণীয় অনেক ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে ও নিয়ম রয়েছে যেগুলো সঠিকভাবে পালন করলে হাতের চামড়া ওঠা অনেক অংশ কমানো সম্ভব। হাতের চামড়া বিভিন্ন কারণে উঠে থাকে কোন পুষ্টি অথবা ভিটামিনের ঘাটতি অথবা ওয়া অসচেতনতা। হাতে চামড়া ওঠা প্রতিরোধ করার জন্য কি কি এড়িয়ে চলা উচিত সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
- ভিটামিন এ বি সি ই সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন: গাজর, পেয়ারা, লেবু, আমলকি, কমলা, শাকসবজি, ডিম, মাছ, ডাল ইত্যাদি।
- অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা যাবে না এবং গরম পানি দিয়ে বারবার হাত ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ক্ষার জাতীয় সাবান, ডিটারজেন্ট, হ্যান্ড ওয়াস কম ব্যবহার করতে হবে অথবা এড়িয়ে চলতে হবে।
- অনেকেই বারবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অতিরিক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে যাওয়া যাবে না বা কাজ করা যাবে না এতে ত্বকের অথবা হাতের চামড়া পুড়ে যায় চামড়া উঠে থাকে।
- পুষ্টিহীন খাদ্য অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে বিশেষ করে প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি, তেল যুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি।
- হাত ভেজা রাখা যাবে না। দীর্ঘ সময় হাত ভেজা থাকলে চামড়া উঠে যাবে। তাই অতিরিক্ত পানি বা কাপড় ধোয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই গ্লাভস ব্যবহার করে কাজ করুন।
- তবে অনেকক্ষণ গ্লাভস পড়ে থেকে কাজ করলে ঘেমে গিয়ে চামড়া উঠে যায় তাই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত গ্লাভস ব্যবহার করুন।
- যখন তখন নিজের ইচ্ছামতো মলম বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না এতে ত্বকের উপর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরে এবং আরো বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হাতের চামড়া বা ত্বক ফেটে যাওয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: হাতের চামড়া ঠিক রাখতে দৈনিক কতটুকু পানি পান করা উচিত?
উত্তর: দৈনিক কমপক্ষে ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
প্রশ্ন: কোন সাপ্লিমেন্ট ছেলে চামড়া ওঠা কমবে?
উত্তর: মাল্টিভিটামিন, ভিটামিন এ, সি, ই ও বি কমপ্লেক্স সাপ্লিমেন্ট।
প্রশ্ন: হাতে চামড়া উঠলে ডাক্তার দেখানোর জরুরি কি?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি ইনফেকশন র্যাস,বা ব্যথা থাকে তবে অবশ্যই দেখাতে হবে।
প্রশ্ন: শুধু কি ভিটামিনের অভাবে চামড়া উঠে?
উত্তর: না, ত্বকের শুষ্কতা, এলার্জি, ইনফেকশন, একজিমা ইত্যাদির কারণেও উঠতে পারে।
প্রশ্ন: ইনফেকশনের কারণে চামড়া উঠতে পারে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংক্রমণ থেকেও চামড়া উঠতে পারে।
শেষ মন্তব্যঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে
হাতের চামড়া খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। সাবধান হয়ে চললেই এ ধরনের সমস্যা থেকে খুব সহজেই সমাধান পাওয়া যায়। অনেকেই বলে থাকে হাতের চামড়া ওঠে কারো শীতের সময় ওঠে আবার অনেকের সারা বছরে উঠে তবে এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ থাকতে পারে অথবা না ও থাকতে পারে।
যাদের ত্বক একটু শুষ্ক এলার্জি সমস্যা আছে তাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো বেশি দেখা দেয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটা ভিটামিনের অভাবেও হতে পারে। তাই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত সাবান পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। আশা করি উপরিউক্ত সকল আলোচনায় বুঝতে পেরেছেন কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে এবং কি কারণে এ ধরনের সমস্যা গুলো হয়।
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url