খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ বিস্তারিত জানুন

খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই না? অনেকেই এই ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা এবং কোন রোগের পূর্বাভাস কিনা বুঝে উঠতে পারে না। আসলে এ ধরনের লক্ষণগুলো সচরাচর প্রায় লক্ষ্য করা যায়।
খাবারে-অরুচি-ও-বমি-বমি-ভাব
বমি বমি ভাব খাবার অরুচি দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সকলের হয়ে থাকে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটি খুবই স্বাভাবিক এবং অনেকের ক্ষেত্রে খুবই জটিল আকার ধারণ করে করে। তাই আজকের পোস্টে আমরা বিশ্লেষণ করবো এ সকল উপসর্গের সম্ভাব্য কারণ ও করণীয় কি নিয়ে।

সূচিপত্রঃ খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ 

খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ 

খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে এ ব্যাপারে বেশিরভাগ মানুষের ধারণা নেই। এ ধরনের সিমটম গুলো বিভিন্ন রোগের লক্ষণ বহন করতে পারে। তবে সাধারণ কিছু কারণেও এ ধরনের সমস্যাগুলো হতে পারে। কারণ অনেকের মাথা ধরলে কিংবা পেট ব্যথা হলে এবং গ্যাস্ট্রিকের কারণেও বমি বমি ভাব হতে পারে।

অর্থাৎ শরীর যখন ভালো থাকেনা, খাবারের অনিয়ম  হয় তখন এ ধরনের ইঙ্গিত গুলো দেখা যায়। কোন কোন সময় খাবারে অরুচি স্বাভাবিক হতে পারে আবার অনেক ক্ষেত্রে কোন রোগের লক্ষণ বহন করতে পারে। অনেক সময় খাবারে অরুচি মানসিক টেনশনের কারণে হয়ে থাকে। কারণ অতিরিক্ত টেনশন থাকে খাবারে রুচি থাকে না এবং বমি বমি অনুভব হয়।

  • অনেকের শরীরে জ্বর আসলে খাবার অরুচি লাগে এবং বমি বমি ভাব হয়।
  • আবার ডায়রিয়া বা আমাশয় হলে পেট মোচার দেই যার ফলে বমি বমি লাগে এবং খাবারের যে আসে। 
  • পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাসের সৃষ্টি হলে এবং পেট ফেঁপে গেলে বমি বমি ভাব লাগে এবং খাবার দেখলে অরুচি লাগে। 
  • লিভার জনিত কোন সমস্যা হলে অর্থাৎ লিভারের কার্য ক্ষমতা কমে গেলে খাবার হজমের অনেক ব্যাঘাত ঘটে যার ফলে মুখে আর রুচি হয় এবং বমি বমি ভাব দেখা দেয়। 
  • আবার অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা ডিপ্রেশন থাকলে মন মানসিকতা ক্ষুন্ন থাকে যার ফলে খাবারে কোন রুচি থাকে না এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয়। 
  • অনেক নারীদের গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে অর্থাৎ গর্ভধারণের ২-৩ মাস বমি বমি ভাব হয় এবং খাবারে অরুচি লাগে। হর মনের পরিবর্তন হয় যার কারণে বমি বমি লাগে। 
  • পেটে যদি কোন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত কোন ইনফেকশন হয় যার কারণে খাবার অরুচি লাগে এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয় এবং পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে।
  • মেয়েদের যখন প্রত্যেক মাসে পিরিয়ড হয় এ সময় পেটের নিচে দিকে ব্যথা করে যার কারণে বমি বমি ভাব অনুভব হয় অনেক ক্ষেত্রে খাবারের রুচি হারিয়ে যায়।
  • অনেকের মাথা ব্যথা করলে মাথা ঘুরলে লাগে এবং খাবারে কোন ধরনের বেঁচে থাকে না। 
  • যদি কারো কিডনিতে সমস্যা হয় এবং কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরে অস্বস্তিকর লাগে এবং খাবার অরুচি হয় এবং বমি বমি ভাব তৈরি হয়।

মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ 

মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ হতে পারে অবশ্যই এ ব্যাপারে জানতে আগ্রহী অনেকেই। মাথা ঘোরা এবং বৈবাহিক ভাব শরীরের ভেতরের কোন রোগের ইঙ্গিত বহন করতে পারে আবার অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কারণ ধরা যেতে পারে। কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম করার ফলে যখন শরীরে পানির ঘাটতি থাকে এবং শরীর ক্লান্ত থাকে তখন মাথা ঘুরে এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয়। 

  • অনেক সময় কারো ব্লাড প্রেসার লো হয়ে গেলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ না হওয়ার কারণে মাথা ঘুরে এবং অনেক ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • বিশেষ করে গরমের দিনে রৌদ্রে বাইরে যাওয়ার কারণে পানির ঘাটতি হয় যার কারণে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দেয় শরীরের মধ্যে এ সময় মাথার ঝিমঝিম করে এবং বমির হতে পারে। 
  • অনেক সময় চোখের যদি কোন প্রবলেম হয় অর্থাৎ চোখের অন্ত কর্ণের ভারসাম্য কমে যায় তাহলে মাথা ঘুরতে পারে বমি বমি ভাব খুব সাধারণ একটি ব্যাপার।
  • অনেকেরই মাইগ্রেনের সমস্যা আছে যার কারণে মাঝেমধ্যে মাথা ঘুরতে পারে এবং বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • রক্তে যদি শর্করার ঘাটতি হয় আর দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এ ধরনের সমস্যা গুলো হতে পারে যার কারণে মাথা ব্যাথা, শরীর দুর্বল এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয়।
  • আবার অনেকের স্ট্রোকের পূর্বাভাস হলে চোখে ঝাপসা দেখলে মাথা ঘুরতে ঘুরতে পারে এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয় এ ধরনের সমস্যা স্ট্রোকের আগ মুহূর্তে হতে পারে। 
  • অনেক সময় ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে মাথা ঘুরতে পারে। তাই যে কোন সমস্যার কারণে যদি কেউ এন্টিবায়োটিক খায় এসময় শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথা ঘোরাটা স্বাভাবিক।
  • পেটে যদি কোন কারনে ইনফেকশন বা ফুড প্রয়োজনই হয় তাহলে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এবং পেট ব্যাথা হতে পারে।

সারাদিন বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ 

সারাদিন বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ এ ব্যাপারে অনেকে জানালাম প্রকাশ করেছেন। সারাদিন বমি বমি ভাব অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এটি মূলত হতে পারে শরীরের ভেতরে কোন সমস্যা অথবা রোগের ইঙ্গিত বহন করতে পারে এছাড়া স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোন ব্যাঘাত করলে এবং স্বাস্থ্য হানি হলে ও খাবারের কোন গন্ডগোল হলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সারাদিন বমি বমি ভাব হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে যেমন তাড়াহুড়ো করে খাওয়া, অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত খাবার খাওয়া, তেল যুক্ত খাবার খাওয়া, খালি পেটে থাকা, দেরিতে খাবার খাওয়া, এ সকল কারণে পেটের ভেতরে এসিডিটি ফ্লাক্স হয় যার কারণে বমি বমি ভাব হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে ও তার সমাধান

নারীদের ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যায়। বেশিরভাগ নারীরা প্রেগনেন্সির প্রথম দিকে প্রায় ২-৩ মাস পর্যন্ত বমি বমি ভাব অনেক ক্ষেত্রে বমি হওয়া দেখা যায়। যেহেতু প্রেগনেন্সির সময় হরমোনের পরিবর্তন হয় যার কারণে বমি বমি ভাব হওয়াটা স্বাভাবিক।

প্রত্যেকটা মানুষ করো না কোন মানসিক চপ দুশ্চিন্তায় ভোগে। যখন এই দুশ্চিন্তা অতিরিক্ত পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং মাথায় চাপ পড়বে তখন অতিরিক্ত স্ট্রেসের ফলে পেটে অস্বস্তি হয় এবং বমি বমি ভাব অনুভব হয়।

বর্তমানে মাইগ্রেনের সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে  ছাত্র-ছাত্রীদের এ ধরনের সমস্যা গুলো প্রচুর পরিমাণে দেখা দেয়। বেশি আলোতে গেলে বা মাথায় চাপ পড়লে এই মাইগ্রেনের সমস্যা বৃদ্ধি পায় এবং বমি বমি ভাব অনুভূত হতে পারে।

দৈনন্দিন জীবন যাপনে যখন মানুষ বাইরে জীবিকা নির্বাহী বা বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে বা পড়াশোনার ক্ষেত্রে যাওয়ার ফলে অনেকে বাইরের খাবার বা স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ফলে বদহজমের সৃষ্টি হয় যার কারণে পেটে গ্যাস জমে সারাদিন বমি বমি ভাব অনুভূত হতে পারে।

আবার হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আক্রমণের ফলে যখন লিভারের সমস্যা হয় বা লিভার দুর্বল হয়ে পড়ে তখন খাবার অরুচি এবং সারা দিন বমি বমি ভাব অনুভব হয় এবং শরীর অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে।

অনেকে আছেন যাদের শারীরিক জটিলতার কারণে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকেন যেমন অ্যান্টিবায়োটিক, পেইনকিলার, উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ, মাইগ্রেনের ওষুধ ইত্যাদি খাওয়ার ফলে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং এর ফলে সারাদিন বমি ভাব অনুভব হয়।

খাবারের অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ কিছু প্রশ্ন উত্তর 

প্রশ্ন: প্রতিদিন বমি বমি ভাব হলে কি করা উচিত?

উত্তর: ঘরোয়া প্রতিকার নিন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন: খাবারের গন্ধে বমি আসে কেন? 

উত্তর: এটি গর্ভাবস্থা, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও স্নায়বিক সংবেদনশীলতার কারণে হতে পারে।

প্রশ্ন: কোন ওষুধে বমি বমি ভাব হতে পারে? 

উত্তর: এন্টিবায়োটিক, ব্যথা নাশক, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ ইত্যাদি। 

প্রশ্ন: মানসিক চাপে কি এই উপসর্গ দেখা দেয়? 

উত্তর: হ্যাঁ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা অনেক সময় বমি বমি ভাবের কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন: গরমে বমি বমি ভাব বেশি কেন হয়? 

উত্তর: অতিরিক্ত ঘাম, পানি শূন্যতা ও হিট স্ট্রোকের কারণে। 

মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব দূর করার উপায় 

মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব দূর করার উপায় অবশ্যই হয়েছে। ঘরে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজেই মাথা ঘোরার বনভূমি ভাব দূর করা যায়। চলুন যাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে তারা আজকের এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন এবং ফলো করলে অবশ্যই আপনারা আপনাদের প্রত্যেক জীবনের এ ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন।

খাবারে-অরুচি-ও-বমি-বমি-ভাব

  • মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব দূর করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি হচ্ছে লেবুর শরবত বা রস পান করা। এক গ্লাস পানিতে ১-২ দিলে লেবু ভালোভাবে চিপে হালকা লবণ দিয়ে খেয়ে ফেললে এবং বমি ভাব এবং মাথা ব্যথা অনেকটা আরামদায়ক হয়।
  • আদা অন্যতম একটি উপাদান ভাব দূর করার। যখন প্রচুর মাথা ব্যথা এবং বমি বমি ভাব অনুভব হবে তখন এক কাপ পানিতে আদা ভালোভাবে ফুটিয়ে পান করতে পারেন অথবা চা মিশ্রিত করে এবং হালকা লেবুর রস চিপে দিয়ে খেতে পারেন। 
  • অনেক সময় লেবুর পাতার ঘ্রাণ ঢুকলেও বমি ভাব দূর হয়। লেবুর পাতা অথবা লেবু নাকের কাছে গন্ধ শুকলে অনেক সময় বমি বমি ভাব দূর হয়ে যায়। 
  • এছাড়া বাড়িতে যদি যেকোনো টক আচার আমের জলপাই কিংবা বড়ই ইত্যাদির আচার থাকলে খেতে পারেন বা মুখে দিয়ে থাকলেও অনেক সময় বমি বমি ভাব দূর হয়। 
  • অনেক সময় ঠান্ডা বরফ বা বরফের টুকরা মুখের মধ্যে দিয়ে থাকলে বমি বমি ভাব কমে যায়। 
  • পুদিনা পাতার রস খেলে মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কমানো যায়। অর্থাৎ পুদিনা পাতার রস যদি আপনি চিবিয়ে খান তাহলে এ ধরনের উপসর্গগুলো কমে যাবে। 
  • এছাড়া সোজা উচিত হয়ে মাথা উপর দিকে করে কিছুটা বিশ্রাম নিলেও এ ধরনের সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যায়।

খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব দূর করার ওষুধ 

খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব দূর করার ওষুধ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা গুলো করা উচিত। তবে এ ধরনের সমস্যাগুলো যদি বুঝতে পারেন যে গ্যাস্ট্রিক, লিভার জনিত সমস্যা বা মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

  1. Domperidone - বমি বমি ভাব ও গ্যাস্ট্রিক কমায়, খাবার খাওয়ার আগে খেতে হবে। 
  2. যদি আমাশয় কিংবা পাতলা পায়খানার কারণে বমি বমি ভাব হয় তাহলে অবশ্যই বারবার পায়খানার পরে ওর স্যালাইন (ORS) খেতে হবে। 
  3. প্যানটোপ্রাজল/ ইসোমেপ্রাজল গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা হলে খেতে হয় সকালে খালি পেটে।
  4. Li-52 Hepamerz - লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াই ও অরুচি কমায় দিনে দুইবার।

তবে অবশ্যই ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। কারণ চিকিৎসা ছাড়া ওষুধ খেলে হিটের বিপরীত হতে পারে অর্থাৎ সমস্যা সমাধানের যেতে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 

মেয়েদের বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ 

মেয়েদের বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ হতে পারে এ ধরনের চিন্তাভাবনা অনেকের মাথায় ঘুরপাক খায়। মেয়েদের বমি বমি ভাব বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন হরমোনের পরিবর্তন অন্তঃসত্ত্বা সাধারন কিছু উপসর্গ পেটব্যথা ইত্যাদির কারণে। মেয়েদের বমি বমি ভাব এর কারণ গুলো তুলে ধরা যাক।

আরো পড়ুনঃ জন্ডিস হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে, আর কী খাওয়া যাবে না?

  • গর্ভাবস্থায় মেয়েদের বমি ভাব হয় এবং খাবার অরুচি দেখা দেয়। এটি খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার কারণ গর্ভধারণকালে মেয়েদের বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন ঘটে যার কারণে খাবারের অরুচি, অস্বস্তি, খাবারের গন্ধ, ক্লান্তি ও বমি বমি ভাব খুবই স্বাভাবিক একটি লক্ষণ।
  • এছাড়া হরমোনের পরিবর্তন হলে মেয়েদের বমি বমি ভাব হালকা মাথাব্যথা হতে পারে। যেমন মেয়েদের ঋতুস্রাবের আগে এবং ঋতুস্রাবের সময় অনেকের পেট ব্যথা করে এবং অনুভব হয়। এ ধরনের সমস্যা গুলো মূলত যাদের থাইরয়েডের সমস্যা এবং ওভারি সিনড্রোম থাকে তাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো হতে পারে। 
  • অনেক সময় মেয়েরা খালি পেটে থাকার ফলে বা খাবার দেরি করে খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক হয় এবং কোন হতে পারে। 
  • এছাড়া শরীরে যদি কোন অস্ত্র পাচার অর্থাৎ কোন বড় ধরনের অপারেশন হয় অপারেশনের পরবর্তী সময়ে ব্যথার কারণে অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের বমি বমি ভাব হতে পারে। যেমন কিডনিতে পাথর, জরায়ুতে সিস্ট, পিত্তথলি পাথর, বাচ্চা ডেলিভারি ইত্যাদি অপারেশনের পরে বমি বমি ভাব এবং খাবারে অরুচি খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।
  • অনেকের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে যার কারণে একটুতেই মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব এবং খাবারে অরুচি দেখা দেয়। এছাড়া পেটে আলসারের মতো সমস্যা হলেও এ প্রবলেম গুলো হতে পারে। 
  •  ইউরিন ইনফেকশন বা লিভার জনিত কোন সমস্যা, কিডনির, সমস্যা থাকলে খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এটি অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কারণ খাবারে অরুচি এবং বমি বমি ভাব বিভিন্ন কারণে হতে পারে হয়তোবা কোন সাধারণ কারণ অথবা জটিল রোগের লক্ষণও হতে পারে যার কারণে কোন কিছু অবহেলা করা চলবে না সকল পরিস্থিতিতে নিজেকে সাবধানতা অর্জন করে চলতে হবে। 

  • যদি উপসর্গ গুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় অর্থাৎ জ্বর কাশি মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব ৩ দিনের বেশি থাকে এবং হজমের সমস্যা এবং অরুচি এক সপ্তাহের বেশি চললে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। 
  • মেয়েদের অস্বাভাবিক রক্তপাত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ প্রস্রাব বা পায়খানা সঙ্গে রক্ত হঠাৎ নাক বা মুখ দিয়ে রক্ত আসলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 
  • খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো না করলে ওজন কমে গেলে সারাক্ষণ মাথায় ঝিম ধরে থাকা এ ধরনের সমস্যা চলতে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 
  • যদি নিয়মিত বমি বমি ভাব অনুভব হয় অর্থাৎ এক দিনে তিনবার বা তার বেশি হলে খাবারের গন্ধ ও বমির প্রবণতা বেড়ে গেলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। 
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি, রক্তপাত, পেটব্যথা ইত্যাদি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • শিশুদের জ্বর, ডায়রিয়া, খাওয়ার অরুচি এবং বৃদ্ধদের মাথা ঘোরা চলাফেরা সমস্যা, ভুলে যাওয়া খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মুখে অরুচি ও বমি বমি ভাব এ সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্ন

প্রশ্ন: কিডনি সমস্যাতেও কি বমি বমি ভাব হয়? 

উত্তর: হ্যাঁ, কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে কিডনিতে বজ্র জমে গিয়ে হতে পারে। 

প্রশ্ন: কোন টেস্ট করলে জানা যাবে কি সমস্যা? 

উত্তর: রক্ত পরীক্ষা, ইউরিন টেস্ট, আল্ট্রাসোনো ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে। 

প্রশ্ন: মাথা ঘোরার সাথে বমি বমি ভাব কি ভার্টিগো লক্ষণ? 

উত্তর: হ্যাঁ, অনেক সময় ভার্টিগো বা মাইগ্রেনে এমন হয়।

প্রশ্ন: খাবারে অরুচি কি বড় কোন রোগের ইঙ্গিত? 

উত্তর: হ্যাঁ, ক্যান্সার লিভার সিরোসিস বা কিডনি রোগে এমন হতে পারে।

শেষ মন্তব্যঃ খাবারে অরুচি ও বমি বমি ভাব কোন রোগের লক্ষণ 

পরিশেষে বলা যায় যে ছোট উপসর্গ অনেক সময় বড় রোগের লক্ষণ হতে পারে। খাবারে অরুচি দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে এবং বমি বমি ভাব প্রায় কয়েক দিন চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। স্বাভাবিক বা ঘরোয়া উপায়ে সমস্যার সমাধান না করা গেলে  অন্য কোন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে । তাই এ ধরনের সমস্যা গুলো বারবার হলে অবশ্যই সাধারণভাবে না সারলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url