দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
প্রিয় পাঠক- আসসালামু আলাইকুম, ইসলামের ৫ স্তম্ভের অন্যতম দ্বিতীয় স্তম্ভ হল নামাজ। নামাজ হল বেহেশতর চাবি। ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য কারী হলো নামাজ। আল্লাহ তায়ালা জীন ও ইনসান জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর এবাদত করার জন্য।
আর আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বোত্তম ইবাদত হল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। তাই আজকে আমরা ‘দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ফজিলত’ নিয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো, ইনশা-আল্লাহ।
পেজ সূচিপত্রঃ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
- দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
- নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
- কুরআনের আলোকে নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
- ফজর নামাজের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফজিলত
- মুমিনের জন্য নামাজ ও পুরুস্কার
- নামাজে অবহেলা করলে ১৪টি শাস্তি প্রদান করা হবে
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শারীরিক উপকারিতা
- পোস্টের শেষ-কথাঃ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মেরাজের রাতে আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে উপহার হিসেবে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ে এসেছিলেন দুনিয়াতে। একজন মুমিনের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের ব্যাপারে আলাদা আলাদা গুরুত্ব কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। তবে আসরের নামাজের ব্যাপারে এই গুরুত্ব আরও বেশি দেওয়া হয়েছে। কারণ, আসরের নামাজ বিশেষ গাফিলতির সময়।
💚আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘তোমরা সকল নামাজ এবং মধ্যবর্তী নামাজের প্রতি যত্নবান হও।’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)।
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এক জুমা থেকে অপর জুমা এবং এক রমজান থেকে অপর রমজান কাফফারা হয় সেসব গুনাহের জন্য যা এদের মধ্যবর্তী সময়ে হয় এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে রয়েছে বৈজ্ঞানিক উপকারিতা যা আদায় করলে মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্য এবং মন দুটোই সতেজ থাকে।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের এত গুরুত্ব রয়েছে যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে তা ত্যাগ করবে সে কুফরি করার কারণে কাফের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুশুখুজুর অর্থাৎ বিনয়ের সাথে আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে বিনা হিসেবেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করলে সগিরা গুনাহের কাফফারা আদায় হয়ে যায়।
💚রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ঠিক মত আদায় করবে আল্লাহ তাকে পাঁচটি পুরস্কারে সম্মানিত করবেন।” যথা-
- তার দুনিয়ার অভাব দূর করবেন
- কবরের আযাব থেকে মুক্তি দেবেন
- তাকে ডান হাতে আমল নামা দেবেন
- বিজলীর ন্যায় পুলসিরাত পার করাবেন
- বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইসলাম পাঁচটি খুঁটির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, নামাজ কায়েম করা, জাকাত প্রদান করা, হজ করা ও রমজান মাসে রোজা পালন করা।’ (বুখারি শরিফ, পৃষ্ঠা নং ১৬, হাদিস: ৭)।
নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু হাদিস নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
💚রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন,
হুজুরে কলব (হৃদয়ের উপস্থিতি) ব্যতীত নামাজ প্রকৃত নামাজ হয় না। (ফিকহুর রিজা)।
হুজুর অর্থ উপস্থিতি, হাজির অর্থ উপস্থিত, কলব মানে দিল, হৃদয়, মন। সফল মুমিনদের
পরিচয় পবিত্র কুরআনে এভাবে এসেছে,
- “ওই সকল বিশ্বাসীগণ সফল, যারা তাদের নামাজে আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়।” (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ১-২)।
- “কিয়ামতের দিন বান্দার আমল হিসাবে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যদি নামাজ ঠিক হয় তবে সে সফলকাম হবে এবং যদি নামাজ নষ্ট হয় তবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং: ৪১৩)
- “নামাজের জন্য আল্লাহতায়ালাকে ভয় করো তিনবার বলা হয়েছে। দ্বীন-ধর্মের একমাত্র নিদর্শন নামাজ- যে ব্যক্তি একাগ্রচিত্তে নামাজ সম্পন্ন করে সে প্রকৃত মো’মেন।”
- “ওয়াক্তমত শুদ্ধভাবে যে নামাজ আদায় করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয়।”
- “নামাজের সবচেয়ে উত্তম সময় হলো তার প্রথম ওয়াক্ত।” (সহীহ বুখারি, হাদিস নং: ৫২৭)
💚রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজ ত্যাগকরার শাস্তি সম্পর্কে বলেছেন,
- “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিল, সে কুফরি করল।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং: ২৬২১)
- “নামাজ থেকে যারা গাফেল (দূরে সরে) থাকে এসব মানুষদের কুকুরের সমতুল্য করে দেয়।”
- “আল্লাহ ও নামাজের মধ্যে কোন আড়াল থাকে না।- সেজদা অবস্থায় আল্লাহ পরম করুনাময়ের সান্নিধ্য-নৈকট্য বেশী অর্জিত হয়।”
- “জামাতের সাথে নামাজ পড়া একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি ফজিলতপূর্ণ।” (সহীহ বুখারি, হাদিস নং: ৬৪৫)
- “ওয়াক্তমত শুদ্ধভাবে যে নামাজ আদায় করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয়।”
- “পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহসমূহ মোচন করে, যদি কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।" (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং: ২৩৩)
- “তাহাজ্জুদ নামাজ অবশ্যই পড়বে কারণ তাহাজ্জুদ নামাজে রাব্বুল আলামীনের সান্নিধ্যলাভ এবং যাবতীয় পাপ পংকিলতা থেকে ক্ষমা পাওয়া যায়।”
- “আল্লাহর রাসূল (স) বলেছেন, যারা সত্যিকার পূত: পবিত্র হয়ে কায়মনে নামাজের মাধ্যমে আহর সমীপে রুকু সেজদা করে তারা সফল কাম হয়েছে।”
- “নামাজ নি:সন্দেহে প্রত্যেক মুমিন বান্দার কোরবানীস্বরূপ।”
- “ওয়াক্তমত (সুনির্দিষ্ট সময়ে) নামাজ আদায় করা সর্ব শ্রেষ্ঠ আমল।”
- “সেজদায় ব্যবহৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আল্লাহ পাক দোজখের আগুনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।”
কুরআনের আলোকে নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
কুরআনের আলোকে নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না। আল্লাহ তাঁর পবিত্র কালামে বিভিন্নভাবে নামাযের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন এবং বিচিত্ররূপে নামাযের প্রতি আহ্বান করেছেন। নামাজ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে নির্দেশনা রয়েছে ৮২ বার। নামাজের উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহর স্মরণ।
নামাজে কুরআন তিলাওয়াত হলো আল্লাহর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা বলা। আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রত্যেক প্রশ্নের জবাব দেন, প্রতিটি আহ্বানে সাড়া দেন, সকল আবেদন মঞ্জুর করেন, সব দোয়া কবুল করেন। (মিশকাত শরিফ)।
💚আল্লাহ তায়ালা নামাজ সম্পর্কে বলেন-
- وَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِیْنَ
অর্থাৎ, “এবং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এবং রুকূকারীদের সঙ্গে রুকূ কর।” (সূরা বাকারা- ২ : ৪৩)
- আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে বলেন, “আর তোমরা আমার স্মরণোদ্দেশ্যে নামাজ কায়েম করো।” (সুরা-২০ তহা, আয়াত: ১৪)।
- পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত রাখে।” (সূরা-২৯ আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)।
- মহান আল্লাহ তায়ালার দেয়া বিভিন্ন নিয়ামতের শুধু মৌখিক শোকরিয়া আদায় করা যথেষ্ট নয়; বরং আমলগতভাবেও শোকরিয়া আদায় করতে হবে। যে সকল আমল দ্বারা এ নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় করা যায় তার শীর্ষে রয়েছে নামায, যাকাতসহ সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা।
- তিনি আরো বলেন, “আমার যে বান্দাগণ ঈমান এনেছে তুমি তাদেরকে বল, তারা যেন নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, সেই দিন আসার আগে, যে দিন কোনো বেচাকেনা থাকবে না এবং বন্ধুত্বও থাকবে না।” (সূরা ইবরাহীম -১৪ : ৩১)
এখানে আল্লাহ তায়ালা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদেরকে নামাযের আদেশ করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় নামায অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ফজর নামাজের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফজিলত
ফজরের নামাজ হচ্ছে আলোকিত ও সুস্থ, সফল জীবনের সূচনা। এটি ঈমান, তাকওয়া ও জীবন গঠনের মৌলিক ভিত্তি। বিশেষ করে জামাতে আদায় করা দ্বীনের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রমাণ এবং আল্লাহর নিকট একান্ত নৈকট্যের সুযোগ। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজর নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনাতীত। এ সম্পর্কে-
💚মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,- “আর তারা (সৎকর্মশীলরা) এমন যে, তারা রাত্রির কিছু অংশে তাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে।” (সূরা যারিয়াত, আয়াত: ১৮)
- “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে আল্লাহর জিম্মায় (রক্ষণাবেক্ষণে) থাকবে।” (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৬৫৭)
- “যে ব্যক্তি ফজর এবং আসরের নামাজ পড়বে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহীহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪)
- “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে পড়ে, তারপর বসে বসে আল্লাহর জিকির করতে থাকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত, তারপর দু’রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য পূর্ণ একটি হজ্জ ও উমরার সাওয়াব লেখা হয়।” (তিরমিজি, হাদিস: ৫৮৬)
মুমিনের জন্য নামাজ ও পুরুস্কার
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ হল নামাজ। আর একজন মুমিন মুসলমানের জন্য নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ বিষয়। নামাজ সম্পর্কে কুরআনে পাকে আল্লাহ তায়ালা ৮২ বার সালাত শব্দটি উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- (হে আল্লাহর রাসুল!) আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল কোনটি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, ‘নামাজ’। (বুখারি ও মুসলিম)
নামাজের গুরুত্ব দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী এবং আল্লাহর প্রিয় রাসূল হযরত
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, যেসমস্ত আল্লাহ তায়ালার মুমিন
বান্দা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুশু-খুজুর সাথে অর্থাৎ ঠিকমত আদায় করবে
আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পাঁচটি পুরস্কারে পুরস্কৃত বা সম্মানিত করবেন। যথা-
১. দুনিয়াতে ওই মুমিন বান্দার অভাব থাকবে না বা দূর করবেন।
২. মৃত্যুর পর কবরের সওয়াল-জওয়াব সহজ করবেন এবং আজাব থেকে মুক্তি দিবেন।
৩. আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ডানহাতে আমলনামা দিয়ে পুরস্কৃত করবেন।
৪. তাদেরকে বিজলীর নিয়ে পুলসিরাত পার করাবেন। এবং
৫. বিনা হিসাবে মুমিন বান্দাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
নামাজে অবহেলা করলে ১৪টি শাস্তি প্রদান করা হবে
প্রতিদিন খুশু-খুজুর সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে যেমন আল্লাহ তা'আলা পাঁচটি পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন তেমনি নামাজে অবহেলা করলে ১৪ টি শাস্তি প্রদান করবেন। চৌদ্দটি শাস্তির মধ্যে দুনিয়াতে পাঁচটি, মৃত্যুর সময় তিনটি এবং বাকি তিনটি কবর থেকে উঠানোর সময় দেওয়া হবে।
নামাজে অবহেলাকারীর দুনিয়াতে ৫টি শাস্তিঃ
নামাজে অবহেলাকারীর মৃত্যুর সময় ৩টি শাস্তিঃ
নামাজে অবহেলাকারীর কবরে ৩টি শাস্তিঃ
নামাজে অবহেলাকারীর কবর থেকে উঠানোর সময় ৩টি শাস্তিঃ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শারীরিক উপকারিতা
দৈনিক সময়মত নামাজ পড়লে আল্লাহ ঐ বান্দাকে সব থেকে বেশি পছন্দ করেন এবং তাকে সবধরণের বিপদআপদ থেকে রক্ষা করেন। সুতরাং নামাজের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা এর দ্বারা প্রমাণিত।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে বান্দা শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক শান্তি লাভ করে। তবে ব্যায়াম নয়, নামাজ আদায় করতে হবে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত হিসেবে। নামাজ আদায়ের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালন, তাকওয়া এবং তাঁর নৈকট্য অর্জন। নিশ্চয় এর মাঝে বান্দার জন্য শারীরিক, মানসিকসহ সব ধরনের কল্যাণ নিহীত রয়েছে।
কুরআনে বলা আছে, “ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।” (সূরা- আল বাকারা, আয়াতঃ ৪৫)
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের যেসমস্ত শারীরিক উপকারিতা পরিলক্ষিত হয় তা হলো-
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য পাঁচ বার ওযু করতে হয়। এ থেকে শরীরের জীবাণু চলে যায় এবং শরীর পাক পবিত্র হয়ে ওঠে। তাই ওজুর মাধ্যমে মুখে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়, মুখে বিভিন্ন ধরনের দাগ, ব্রণ কমে যায়, শরীরে রক্ত সরবরাহ ঠিক থাকে সর্বোপরি কেয়ামতের দিন অজুর মাধ্যমে ঐ বান্দাকে চেনা যাবে।
নামাজে রুকু-সিজদা করার ফলে মাংস পেশি সচল, শরীরের বিভিন্ন হাড় ও কোমরের ব্যথা উপশম হয়। নামাজে যখন আমরা সিজদাহ্ দিয়ে থাকি তখন আমাদের শরীর থেকে রক্ত মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয় যার কারণে, আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং আমরা সহজে সব কিছু মনে রাখতে পারি।
পোস্টের শেষ-কথাঃ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
‘দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত’ শিরোনামের আর্টিকেলটি আলোচনা করে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমরা নামাজের মাধ্যমেই নিজেদের দেহ,মন, নফস পরিশোধিত করে কুরআনের বাণী তথা মহান রাব্বুল আলামীনের বাণী ও বাসূলে পাক (সা.) এর হাদিস অনুযায়ী সত্যিকারভাবে সর্বপ্রকার অন্যায়-অপকর্ম ও লজ্জাজনক কাজ-কর্ম থেকে নিজেদের বিরত রাখা সম্ভব। তাই চলুন, আমরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুশু-খুজুর বা সময়মত আদায় করি। তাহলেই মিলবে দুনিয়াতে শান্তি আর আখিরাতে পাবো মুক্তি।


গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url