You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
প্রিয় পাঠক- আসসালামু আলাইকুম, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল
মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে, ইউটিউব (You Tube)। যেখানে মানুষ শুধু বিনোদনই খুজেঁ বেড়ায় না বরং টাকা ইনকামের সবচেয়ে বড় মাধ্যম (You Tube)। এখানে প্রতিদিন ১ বিলিয়নেরও বেশি ঘন্টা ভিডিও
দেখা হয়। You Tube- এ প্রতিমাসে প্রায় আড়াই বিলিয়নেরও বেশি ইউজার একটিভ
থাকে। যার ব্যবহার দিন দিন শুধু বৃদ্ধিই পাচ্ছে।
ফলে বিশাল এই প্লাটফর্ম থেকে বেশি বেশি আয় করার সুযোগও রয়েছে। আজকে আমরা এই
পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা করবো, ‘You Tube থেকে Income করার -৬টি গুরুত্বপূর্ণ উপায় বা পদ্ধতি’।
পেজ সূচিপত্রঃ You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
- You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
- You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি বা উপায়
- ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
- ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা হালাল না হারাম?
- প্রশ্ন ও উত্তরঃ You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
- পোস্ট ইতি-কথাঃ You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
You Tube থেকে Income অর্থাৎ ভিডিও থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা
ইনকাম করা যায়। বিষয়টি সত্যি কিংবা Possible কিনা? উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ, করা যায়। জনপ্রিয় এই
ভিডিও প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্লগাররা মাসে কয়েক লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত রোজগার
করে থাকেন। যেমন, সবচেয়ে বড় এবং প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ইনকাম যিনি করেন তিনি
হলেন Mr. Beast (বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার )।
আপনি যদি ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের হন, পাশাপাশি ভিডিও করতে পছন্দ করেন তাহলে You
Tube প্লাটফর্মটি আপনার জন্য খুবই উপযোগী।
তবে শুধু ক্রিয়েটিভ মাইন্ড আর ভিডিও করার অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে না এর জন্য আপনাকে
একটা নির্দিষ্ট নিয়মের ভিতর থাকতে হবে। এবং অনেক সময় আর ধৈর্য্য সহকারে কাজ
করতে হবে।
শুধু তাই নয়, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে আজকাল অনেকেই
প্রফেশনাল কোর্স করে বিষয়টিকে নিজের প্যাশন ও প্রফেশন হিসেবে গ্রহন করছেন।
তাই আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে You Tube থেকে Income - এর ৬টি
গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।
You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি বা উপায়
যারা ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করেন তারা অবশ্যই ইউটিউব প্লাটফর্ম থেকে সফল হবেন
তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ভাল ইনকামের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি বা উপায়
অবলম্বন করতে হবে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো-
- গুগল অ্যাডসেন্সের (Google AdSense) মাধ্যমে আয়:
গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense)- অনলাইন থেকে ইনকাম করার একটি গুরুত্বপূর্ণ
মাধ্যম। আপনি ইচ্ছে করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপনার ভিডিও গুলোতে এড বা
বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করতে পারেন খুব সহজেই।
- ইউটিউব চ্যানেলের দর্শক টার্গেট এর মাধ্যমে ইনকাম:
ইউটিউব চ্যানেলের দর্শক টার্গেট এর মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। এজন্য আপনাকে ভিডিও
তৈরির আগে আপনার ভিডিও কোন দর্শকদের কাছে নিয়ে যেতে চান তা আগে ঠিক করুন। এবং
ভিডিও তৈরির উপযুক্ত বিষয়বস্তু বা নিস্ পছন্দ করুন।
শুধুমাত্র সেই বিষয়ের উপরেই ভিডিও তৈরি করুন। এরপরে সেই দর্শকদের জন্য ভিডিও
তৈরি করে দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। পারলে সেই নির্দিষ্ট বিষয়ে
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করুন।
- চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইনকাম:
ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য সবার প্রথমে আপনার চ্যানেলে এক বছরের বা ৩৬৫ দিনের
মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। সাবস্ক্রাইবার সংখ্যায় আপনি টাকা না পেলেও
আপনার যতো বেশি সাবস্ক্রাইবার হবে তত আপনার আয়ের পরিমাণ বাড়বে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- আপনার চ্যানেলে যতো বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকবে তত বড় বড়
কোম্পানি আপনার চ্যানেলে ব্র্যান্ড প্রোমোশনের আগ্রহ দেখাবে।
- চ্যানেল মনিটাইজেশন (Channel Monetization)- এর মাধ্যমে ইনকাম:
চ্যানেল মনিটাইজেশন- এর মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়। ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১০০০
সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম হলে আপনার চ্যানেলটি মনিটাইজেশনের জন্য
অ্যাপ্লিকেবল হবে। তবে মনিটাইজ হয়ে গেলেই যে টাকা আসবে, তা নয়।
মনিটাইজ হলে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন আসবে। সেগুলোতে কেউ ক্লিক করে সম্পূর্ণ
বিজ্ঞাপন দেখলে তবেই রোজগার করতে পারবেন ইউটিউব থেকে। যদিও শুধুমাত্র ইউটিউব এর
বিজ্ঞাপন থেকে রোজগার শুরুর দিকে বেশি হয়না। তাই ধৈর্য্য ধরতে হবে। সফলতা
আসবেই।
- ইউটিউবে অ্যাফিলিয়েট লিংকের (Affiliate link) মাধ্যমে ইনকাম:
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার করে কমিশনের
মাধ্যমে আয় করার পদ্ধতি। আপনি আপনার ভিডিওতে কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে
কথা বলবেন এবং একটি বিশেষ অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক (Affiliate link) শেয়ার করবেন। যদি
কেউ সেই লিঙ্ক ব্যবহার করে কিছু কিনে, তাহলে আপনি তাদের খরচের ৫% থেকে ১০%
পর্যন্ত কমিশন পাবেন।
- স্পন্সরশিপ (Sponsorship) এর মাধ্যমে ইনকাম:
স্পন্সিপ এর মাধ্যমে আপনার You Tube চ্যানেল থেকে আপনি প্রচুর টাকা ইনকাম
করতে পারেন যদি আপনার চ্যানেলটিতে ভিউয়ার বা ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা বেশি
থাকে। আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন কোম্পানির
পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে অর্থাৎ স্পন্সার ব্যবহার করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে
পারবেন।
তবে মনে রাখতে হবে, আপনার ভিডিওর গুণগতমান এবং দর্শক সংখ্যা বা ফ্যান ফলোয়ার
প্রচুর পরিমাণে থাকতে হবে। অন্যথায় ইনকাম করা কঠিন হয়ে যাবে।
এছাড়াও ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার আরো অনেক উপায় আছেভ যেমন,
- ডোনেশনের মাধ্যমে ইনকাম
- YouTube Premium এর মাধ্যমে ইনকাম
- YouTube Studio Monetization এর মাধ্যমে ইনকাম
- ফ্যান ফান্ডিং এর মাধ্যমে ইনকাম
- সুপার চ্যাট এবং সুপার স্টিকার এর মাধ্যমে ইনকাম
- চ্যানেল মেম্বারশিপ এর মাধ্যমে ইনকাম
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও বানিয়ে টাকা ইনকাম করার পাশাপাশি ভিডিও না বানিয়েও ইনকাম
করা যায়। এর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। যেমন,
- Affiliate Marketing করে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- Copyright Free ভিডিও আপলোড করে ইনকাম
- You Tube Channel- এ Stock Video ব্যবহার করে ইনকাম
- ফ্রিতে Animation Video থেকে ইনকাম
- মিউজিক বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- Live Streaming করে ইনকাম
- ইউটিউব ভিডিও এডিটিং করে টাকা ইনকাম
- Product Promotion করে ইউটিউব থেকে আয়
- Sound Effect বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- ভিডিও শেয়ার করে ইউটিউব থেকে আয়
- Translate করে ইউটিউব থেকে ইনকাম
- Script লিখে ইউটিউব থেকে ইনকাম
ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়? এই প্রশ্নে জবাবে বলা যায়, ভালো বিষয়
ভিত্তিক এবং গুণগতমান সম্পন্ন কনটেন্ট দিয়ে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব থেকে প্রচুর
টাকা ইনকাম করা যায়। তবে প্রতি মাসে You Tube থেকে কত টাকা
Income করা যায় সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না।
আপনার ইউটিউব চ্যানেলে যদি ভালো সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার এবং দর্শক থাকে,
তাহলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডগুলো স্পন্সরশিপের জন্য আপনার কাছে যাবে। আপনি ব্র্যান্ড
প্রচারের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন৷
১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ভালো ভিউয়ের পরে, প্রতি মাসে ৫০০০-১০০০০ টাকা উপার্জন
করতে পারেন। ১ লাখ গ্রাহক থাকলে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা আয় করা যায়। বড়
ইউটিউবার, যাদের লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে, তারা প্রতি মাসে ৫ লাখ থেকে ৫০
লাখ টাকা পর্যন্ত মাসে আয় করতে পারেন।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা হালাল না হারাম?
আল্লাহ তায়ালার এই দুনিয়াতে সব কিছুর মধ্যেই ভালো-মন্দ বা হালাল-হারাম দুটোই
আছে। তাই ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা হালাল না হারাম এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে
আপনার You Tube এ প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়বস্তু এবং বিজ্ঞাপনের ধরনের উপর।
যদি আপনার কন্টেন্টের বিষয়বস্ত অর্থাৎ ভিডিওতে হারাম বিষয়বস্তু যেমন,
মিথ্যাচার, অশ্লীলতা, কুরুচিপূর্ণ দৃশ্য, সর্বোপরি ইসলাম বিরোধী কোনো
বিষয় থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই হালাল হবে না এতে কোন সন্দেহ নেই। আর এর বিপরীতে
আপনার কন্টেন্টের বিষয়বস্তু যদি শালীন হয়, সত্য হয়, রুচির সম্মত হয়,
মানুষকে বিভিন্ন খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে তাহলে অবশ্যই হালাল
হবে।
তাছাড়া আপনার ভিডিওতে যে সমস্ত বিজ্ঞাপন আপনি ব্যবহার করবেন সেগুলো যদি
গুনাহের কাজ হয় যেমন, মদ খাওয়া, নিষিদ্ধ পণ্যের প্রচারণা করা হয় তাহলে হারাম
হবে আপনার উপার্জন নিঃসন্দেহে।
প্রশ্ন ও উত্তরঃ You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
১. প্রশ্ন:
ইউটিউবে অর্থ প্রদান কিভাবে করা হয়?
উত্তর:
ইউটিউব থেকে আয়ের প্রধান উৎস বিজ্ঞাপন। এছাড়াও, YouTube প্রিমিয়ামের মতো
আপনার মাসিক মেম্বারশিপ বিজনেস থেকেও অর্থ ইনকাম করা যায়।
২. প্রশ্ন:
বিশ্বের ১ নম্বর ইউটিউবার কে?
উত্তর:
বিশ্বের ১ নম্বর ইউটিউবার হচ্ছেন Mr. Beast। যার বছরে আয় প্রায় ৫৫ মিলিয়ন
ডলার।
৩. প্রশ্ন:
ইউটিউবের টাকা কি হারাম?
উত্তর:
যদি ইউটিউবের বিষয়বস্তু এমন হয়- অশ্লীল ভিডিও, নাচ, শরীর
প্রদর্শন, মিউজিক ভিডিও, মেয়েদের শরীরচর্চা ইত্যাদি তাহলে সেটা হারাম।
অপরদিকে ভুয়া খবর, গীবত, পরনিন্দা, বিতর্ক তৈরি করা, মানুষকে বিভ্রান্ত
করা কনটেন্ট এসব থেকেও ইনকাম হারাম।
পোস্ট ইতি-কথাঃ You Tube থেকে Income - ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি, You Tube থেকে Income করতে আপনাকে
প্রথমে বিভিন্ন ইন্টারেস্টিং এবং মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। এবং ধীরে
ধীরে দর্শকদের আকৃষ্ট করতে হবে। আপনি যখন ইউটিউবে জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন অর্থাৎ
ভিউয়ার এবং ফ্যান ফলোয়ার বাড়বে তখন বিভিন্ন আয়ের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে। যেমন:
গুগল অ্যাডসেন্স, স্পনসরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি খোলা থাকবে।
এখন কথা হল আপনি যদি কন্ফিডেন্ট হন ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য তাহলে প্রথমে
একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে নিন এবং কাজ শুরু করে দিন। প্রচুর সময় দিন এবং ধৈর্য
সহকারে কাজ করতে থাকেন সফলতা আসবেই ইনশাল্লাহ।
বি: দ্র: এই পোস্টটি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আপনার সামনে
উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আশা করি, উপকৃত হবেন। ভালো থাকবেন। আর ভুল
ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।


গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url