সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম ও ফজিলত দোয়াসহ বিস্তারিত

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম ও ফজিলত অনেক গুরুত্বপূর্ণ।  প্রত্যেকের জীবনে কোনো না কোনো সমস্যা, দুঃখ, কষ্ট, বিপদ আসে এই সময়গুলোতে নফল ইবাদতের মধ্যে সালাতুল হাজত নামাজ আদায় করা আল্লাহর কাছে দোয়া করা অন্যতম একটি ইসলামিক আদর্শ।
সালাতুল-হাজত-নামাজের-নিয়ম
নিজের মনের ইচ্ছা, কামনা, বাসনা সব ধরনের কথা বা চাহিদা আল্লাহর কাছে এই সালাতুল হাজতের নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে তুলে ধরতে পারেন। চলুন আজকের পোস্টের জেনে নেয়া যাক সালাতুল হাজতের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত। 

সূচিপত্রঃ সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম ও ফজিলত 

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম 

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম মূলত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়মের মতই। সালাতুল হাজত  নামাজের মধ্যে দিয়ে আল্লাহর কাছে নিজের আকুতি মিনতি এবং নিজের প্রয়োজনীয় কথাবাত্রা পেশ করা যায়। যদিও পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং নিজের প্রয়োজনীয় সকল বার্তা বলা যায় শুধু পাঁচ ওয়াক্ত নয়, যেকোনো সময় যে কোন প্রয়োজনে আল্লাহকে ডাকা যায় এবং চাওয়া যায়।

কিন্তু সালাতুল হাজত মূলত এমন একটি সালাতের কথা বলা হয়েছে যেখানে নিজের একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস বা দোয়া সালাতের মধ্যে আল্লাহর কাছে চাওয়া যায়। হাজত শব্দের অর্থ চাহিদা, প্রয়োজন বা উদ্দেশ্য। তাহলে সালাতুল হাজত অর্থ প্রয়োজনে পড়া সালাত বা নামাজ। এটি একটি নকল নামাজ দিনের যেকোনো সময় করা যায়।

 যখন আল্লাহর কোন ঈমানদার বান্দা বা বান্দি কোন বিপদে পড়ে যার ফলে কোন পথ খুঁজে পায় না তখন এই দুই রাকাত সালাত পড়ে আল্লাহর কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চাওয়া যায়। নফল নামাজের মতই এর নিয়ত করতে হয়। প্রথমত আপনি ভালোভাবে অজু করে আল্লাহর কাছে নফল নামাজের নিয়ত ধরে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। 

তবে নির্দিষ্ট করে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে এর কোন বাধা ধরা নেই। চাইলে আপনি ২,৪,৬,৮ এর চেয়ে বেশি রাকাত পড়তে পারেন। তবে মূলত ২ রাকাত করে নামাজ পড়তে হবে। একসাথে ৪ রাকাত একবারে পড়া যাবে না। স্বাভাবিকভাবে ২ রাকাত নামাজ যেভাবে পড়েন সেরকমভাবেই পড়তে হবে। অর্থাৎ প্রতিটি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর অন্য যেকোনো একটি সূরা পড়তে হবে। 

আরো পড়ুনঃ জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ৪১ জন সাহাবীদের নাম

নামাজ শেষ করার পর বিভিন্ন দোয়া ও দরুদ শরীফ পাঠ করে নিজের চাওয়া আল্লাহর দরবারে পেশ করতে পারেন। চাইলে আপনি বিপদ আপদ থেকে মুক্তির দোয়া পড়তে পারেন যেমন "লা-ইলাহা-ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জালেমিন"। এছাড়া আপনি আপনার মনের মধ্যে যে সকল দোয়া আছে সেগুলো করতে পারেন।

সালাতুল হাজত নামাজের ফজিলত 

সালাতুল হাজত নামাজের ফজিলত রয়েছে। একজন মুসলিম হিসেবে প্রত্যেকের সালাতুল হাজত নামাজ পড়া জরুরী। মৃত্যুর আগে একবার হলেও এ সালাত আদায় করা উচিত। তবে এই নামাজের যেহেতু কোনো ওয়াক্ত নেই তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ওয়াক্ত ছাড়া যে কোন সময় এই নামাজ পড়তে পারেন। চলুন এর ফজিলত গুলো দেখে নেয়া যাক।

  • এই সালাতের মাধ্যমে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে আল্লাহ তার বান্দার দোয়া শুনেন এবং নিজ হাতে তাদের বিপদ থেকে রক্ষা করেন। 
  • আত্মার প্রশান্তি মেলে এই নামাজের মাধ্যমে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয়। 
  • যারা জীবনের অনেক কঠিন সময়ে এই নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর কাছে মন থেকে নিজের চাহিদাগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করে এবং দোয়া করে তাদের জন্য এই নামাজ বিপদ মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার বলা যায়। 
  • সালাতুল হাজত অন্যতম একটি নফল নামাজ। তাই কোন ঈমানদার ব্যক্তি যদি মন থেকে দুই রাকাত বা এর চাইতে বেশি সালাত আদায় করে, তাহলে সালাত আদায়ের সোয়াব সহ আল্লার কাছে তার মনের ইচ্ছা পোষণ করার অতিরিক্ত সোয়াব লাভ করে।
  • নিয়ম মেনে সালাত আদায় করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে ইনশাল্লাহ মনের সকল ইচ্ছা পূরণ হবে।

সালাতুল হাজত কখন পড়া উত্তম 

সালাতুল হাজত কখন পড়া উত্তম এ ব্যাপারে অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে থাকেন। কারণ অনেকেই জানেন সালাতুল হাজত নামাজ পড়া খুবই উপকার কিন্তু কখন পড়তে হয় এ ব্যাপারে অনেকে জানেন না। তাই এ ব্যাপারে যারা জানতে চান তারা এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। 

সালাতুল হাজত নামাজ যেহেতু একটি নফল নামাজ তাই এই নামাজের ধরা বাধা কোন সময় নেই তবে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে যেগুলো মেনে চললে দিনের পথে নিজেকে পরিচালনা করা যায়। তবে এই নামাজ কিছু নির্দিষ্ট সময়ে পড়লে বরকতময় বলা যেতে পারে। এ নামাজ পড়লে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই অনেকেই এই নামাজকে আঁকড়ে ধরেন। 

এই নামাজ যদি আপনি তাহাজ্জুতের নামাজের সময় অর্থাৎ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়লে অনেক নেকি রয়েছে। আল্লাহতালা রাতের শেষ দিতে আসে আকাশের নেমে আসেন যার কারণে তিনি তার বান্দাদের বলেন "কে আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে দিব"। এই সময় সালাতুল হাজত আদায় করে দোয়া করলে আল্লাহ কখনোই সেটা ফিরিয়ে দেন না। 

যদিও আল্লাহতালা কোন বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না বরং তিনি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। এছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ফরজ নামাজের পরে এই সালাত আদায় করতে পারেন। অনেক আলেম ওলামায়েগণ বলেছেন মাগরিব ও এশার পরে সালাতুল হাজত আদায় করা উপকারী কারণ নামাজের পরেই দোয়া বেশি বেশি কবুল হয় বলে হাদিসে বর্ণিত আছে।

আরো পড়ুনঃ

এছাড়া জুমার দিন বা এর আগের রাত নফল ইবাদতের অনেক ফজিলত রয়েছে। তাই এই দিনগুলোতে সালাতুল হাজত আদায় করতে পারেন। সকালে যোহরের নামাজের ওয়াক্তের আগে যেকোনো সময় এই নামাজ আদায় করা যায়। অর্থাৎ  মনে যখন অশান্তি হবে ভালো লাগবে না তখনই এই নামাজ পড়তে পারেন।

সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর 

প্রশ্ন: সালাতুল হাজত নামাজ কি? 

উত্তর: সালাতুল হাজত হলো এটি নফল নামাজ যা কোন প্রয়োজন সমস্যা বা চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে আদায় করা হয়। 

প্রশ্ন: কখন এই নামাজ পড়তে হয়?

উত্তর: যখনই কোন সমস্যায় পড়বেন বা চিন্তা ভাবনায় আপনার মন খারাপ থাকবে তখন এই নামাজ পড়া যায়।

প্রশ্ন: সালাতুল হাজতের রাকাত সংখ্যা কত? 

উত্তর: সালাতুল হাজতের রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। ২ রাকাত করে পড়তে হয় যত ইচ্ছা তত।

প্রশ্ন: এটি ফরজ* সুন্নত না নফল? 

উত্তর: এটি নফল ইবাদত।

প্রশ্ন: সালাতুল হাজতের পর দরুদ পড়া কি জরুরী? 

উত্তর: হ্যাঁ, দোয়ার আগে ও পরে দরুদ পাঠ করা সুন্নাত এবং দোয়া কবুলের মাধ্যম।

সালাতুল হাজত নামাজ পড়ার নিষিদ্ধ সময় 

সালাতুল হাজত নামাজ পড়ার নিষিদ্ধ সময় আছে। এই সময়গুলোতে নামাজ পড়লে গুনাহ হয়। নফল নামাজ সব সময় পড়া যায়, কিছু নির্দিষ্ট সময় বাদে। কারণ নামাজ পড়লেই যে কবুল হবে তা নয় এর একটি নির্দিষ্ট সময়ে রয়েছে যে সময়গুলোতে যেকোনো সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সময় গুলো কি কি দেখে নেয়া যাক। 

  • যখন সূর্য উঠতে শুরু করে সূর্য ওঠা থেকে প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। সহজ বলতে গেলে সূর্যোদয়ের সময় কোন প্রকার নামাজ পড়া জায়েজ নয়। 
  • যখন সূর্য ঠিক মাথার উপরে থাকে তখন নামাজ আদায় করা নিষেধ। 
  • আসল ও মাগরিবের মাঝখানের সূর্যাস্ত যাওয়ার মুহূর্ত থাকে তাই এ সময় গুলোতে সালাতুল হাজত আদায় করা মাকরূহ বা নিষিদ্ধ। 

ইসলামের সালাতুল হাজতের গুরুত্ব 

ইসলামের সালাতুল হাজতের গুরুত্ব প্রচুর। তবে মুসলিম হিসেবে প্রত্যেক মুসলমানকে সালাতুল হাজত নামাজ সম্পর্কে জানা জরুরী। কারণ এ পৃথিবীতে মানুষকে সৃষ্টির একমাত্র মূল কারণই হচ্ছে আল্লাহর এবাদত করা। মহান আল্লাহ তায়ালা এবাদত করার জন্যই একমাত্র এই পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তাঁর ঈমানদার বান্দা-বান্দী কে চিহ্নিত করবেন।

সালাতুল-হাজত-নামাজের-নিয়ম
সকলেই জানি ইসলাম পূর্ণাঙ্গ একটি জীবন ব্যবস্থা এবং প্রতিটি দিকের জন্য একটি দিকনির্দেশনা রয়েছে। নামাজ এবং দোয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অস্ত্রের মত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দোয়া এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় এবং পরকালে  জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে নিতে হয়। 

আল্লাহ আমাদের ঈমান পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দুঃখ কষ্ট অসুস্থতা দিয়ে পরীক্ষা করেন। আর এই কঠিন সময় গুলোতে বেশিরভাগ আল্লাহর বান্দা ভেঙে পড়েন। তবে আল্লাহ এই বিপদ আপদ থেকে মুক্তির জন্য অনেকগুলো পথ খোলা রেখেছেন যেগুলো সকলের পালন করা একান্ত কর্তব্য। এর মধ্যে নফল ইবাদত অন্যতম একটি হাতিয়ার। 

নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং রুপার থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। সালাতুল হাজত এমনই একটি নফল ইবদত বা নামাজ যার মাধ্যমে কঠিনতর বিপদ থেকে আল্লাহর রহমত ও সাহায্য লাভ করা যায়। কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও সালাতুল হাজত খুবই কার্যকর। নবী কারীম (সা:) এ নামাজ আদায়ের জন্য উৎসাহিত করেছেন। 

সালাতুল হাজত নামাজ হাদিস ও বর্ণিত একটি আমল। এই নামাজ কেবল বাহ্যিক সমস্যার সমাধানে নয় বরং আত্মিক প্রশান্তি মানসিক প্রশান্তি অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই নামাজের মাধ্যমে একজন মুসলমান মানসিকভাবে আরো স্থির এবং ধৈর্যশীল হতে পারে। যখন সাধারণ দোয়া কবুল হয় না, তখন এ সালাতুল হাজত আদায় করলে গ্রহণযোগ্য হয় আল্লাহর কাছে।

অর্থাৎ সংক্ষেপে বলা যায় সালাতুল হাজত ইসলামের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ নফল ইবাদত যা একজন মুসলমান তার প্রয়োজনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দেয়। আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া না থাকলেও এ সালাত  আদায় করা উচিত।

দ্রুত দোয়া কবুলের জন্য সালাতুল হাজতের ভূমিকা 

দ্রুত দোয়া কবুলের জন্য সালাতুল হাজতের ভূমিকা রয়েছে। কারণ দোয়া একজন মুমিনের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। দোয়া ছাড়া অন্য কোন কিছু দ্বারা ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে আমার দোয়া কেন কবুল হয় না, এত কাঁদলাম তবুও কেন আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করলো না, এ ধরনের অনেক অভিযোগ থাকে তাই না?

সালাতুল হাজত এমন একটি বিশেষ নামাজ যে নামাজে আল্লাহর কাছে নিজের বিপদমুক্তির জন্য দোয়া করলে মনে প্রশান্তি মিলে। বিশেষ মনোযোগ এবং বিনয় প্রকাশ করে সালাতুল হাজত নামাজে মনোনিবেশ করলে আল্লাহর দরবারে আপনার প্রার্থনা কে আরো আন্তরিক করে তোলে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন তোমাদের কারো কোনো বিশেষ প্রয়োজন হলে সে যেন দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তারপর আল্লাহর কাছে চায়।

অনেক মানুষ এই সালাত আদায় করে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা থেকে সমাধান পেয়েছে। চাকরি, বিবাহ, অসুস্থতা, ব্যবসার ক্ষতি যে কোন মানসিক চাপ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হয়ে বিশ্বাসের সাথে এই সালাত আদায় করার চেষ্টা করবেন এবং দোয়া করবেন।

সালাতুল হাজত নামাজের তাসবিহ 

সালাতুল হাজত নামাজের তাসবিহ সম্পর্কে অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম যেহেতু অন্যান্য আরো সকল নামাজের মতই তাই নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না এর নামাজের পরে কোন দোয়া করতে হবে। তবে আমরা যেহেতু বাংলা ভাষায় অভ্যস্ত আরবি ভাষায় দোয়া করতে হবে এমন কোন কথা উল্লেখ নাই। আল্লাহ সকল ভাষা বোঝেন এবং তারই সৃষ্টি। 

তাই নামাজ আদায়ের পর আপনার ইচ্ছামতো যা ইচ্ছা তাই দোয়া করতে পারেন। তবে নামাজের মধ্যেও সেজদায় গিয়ে দোয়া করা যায়। হাদিসে বর্ণিত আছে সেজদারত অবস্থায় বান্দা আল্লাহর কাছাকাছি থাকে। তাই সেজদায় বেশি বেশি দোয়া করার চেষ্টা করাই উত্তম। তবে সালাতুল হাজত নামাজ আদায়ের পর বিভিন্ন ধরনের ইসমে আজম আছে সেগুলো পড়তে পারেন। 

"তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ",

 সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম,"

 দরুদ শরীফ পাঠ করা যায়, 

হাসবুনাল্লাহ ওয়ানিয়ামাল ওয়াকিল" -অর্থ আমার আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট।

"লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজাল্লিমিন।"- আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আপনি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়া আপনার নিজ ভাষায় আপনার মনের ইচ্ছাগুলো আপনি আল্লাহর কাছে পেশ করতে পারেন।  আপনার আল্লাহর কাছে যা যা চাওয়ার ইচ্ছা থাকে সকল কিছু আপনি চাইতে পারেন ইনশাল্লাহ দোয়া কবুল হবেই।

সালাতুল হাজতের নিয়ম সম্পর্কিত আরো কিছু প্রশ্ন উত্তর 

প্রশ্ন: সালাতুল হাজত পড়া নির্দিষ্ট সময় আছে কি? 

উত্তর: না, তবে সূর্যাস্ত এবং সূর্য উদয়ের সময় বাদে যেকোনো বৈধ সময় পড়া যায়। 

প্রশ্ন: এ নামাজ মহিলারা আদায় করতে পারবে? 

উত্তর: অবশ্যই, মহিলারা ঘরে বসেই এই নামাজ আদায় করতে পারবে। 

প্রশ্ন: মাকরুহ বা নিষিদ্ধ সময় কোনগুলো? 

উত্তর: সূর্যোদয়, সূর্য ঢল, সূর্যাস্ত-এ ৩ সময়।

প্রশ্ন: বারবার একই দোয়া বা চাহিদার ক্ষেত্রে এই নামাজ পড়া যাবে? 

উত্তর: হ্যাঁ, যতবার প্রয়োজন ততবার পড়া যায় শুধুমাত্র হালাল চাহিদা হলেই হবে। 

প্রশ্ন: প্রতিদিন পড়া কি জায়েজ?  

উত্তর: জায়েজ, তবে প্রয়োজন ছাড়া প্রতিদিন না পড়াই উত্তম।

শেষ মন্তব্যঃ সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম

উপরোক্ত সকল আলোচনার সাপেক্ষে বলা যায় যে সালাতুল হাজত এমন একটি নামাজ যেখানে বান্দা তার বিপদের জন্য সমাধান পেতে আল্লাহর কাছে তার আর্জি পেশ করতে পারেন। সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ তবে এই নফল নামাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। যখনই বান্দা তার মনের দুঃখ কষ্ট কাউকে বলতে পারেনা তখন এই নামাজ আদায় করার উত্তম সময়। তাই বলা হয়েছে সালাতুল হাজতের নিয়ম ও ফজিলত ব্যাপক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url