ব্লগ কাকে বলে, ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয় বিস্তারিত
সূচিপত্রঃ ব্লগ কাকে বলে
-
ব্লগ কাকে বলে সহজ ভাষায় ব্লগের সংজ্ঞা
- ব্লগের প্রকারভেদ কি কি
- ব্লক লেখার মূল উদ্দেশ্য
- ব্লগ কাকে বলে এই সম্পর্কে সাধারণ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
- ব্লগ লেখার উপকারিতা কি
- ব্লগ এবং ওয়েবসাইট এর মধ্যে পার্থক্য
- একটি সফল ব্লগ তৈরির ধাপ
- ব্লগ এবং ভ্লগের মধ্যে পার্থক্য
- ব্লগ সম্পর্কিত আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
- শেষ মন্তব্য ব্লগ কাকে বলে
ব্লগ কাকে বলে সহজ ভাষায় ব্লগের সংজ্ঞা
ব্লগ কাকে বলে সহজ ভাষায় ব্লগের সংজ্ঞা দিতে গেলে বলা যায় যে দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন তথ্যের বা প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য গুগলে সার্চ করার মাধ্যমে যে সকল তথ্য পাওয়া যায় আর তথ্যগুলা যারা ইন্টারনেটে প্রকাশ করে সেটাকে ব্লগ বলা হয়। মানুষ তার মনের চিন্তাভাবনা, অভিজ্ঞতা যেমন কোন ডাইরিতে বা খাতাতে কলম দিয়ে লিখে রাখে হয়তো ভবিষ্যতে কাউকে জানানোর জন্য।
তেমনি ব্লগিং একটি ডায়রির মত যা খাতা-কলমে না লিখে অনলাইনে কোন একটি ওয়েবসাইটে লিখতে হয় সেখানে নিজের চিন্তা ভাবনা তথ্য মতামত শেয়ার করে থাকে। হতে পারে কোন শিক্ষা, চিকিৎসা, রান্না, লাইফ স্টাইল, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক ইত্যাদি লিখে ইন্টারনেটের মাধ্যমিক গুগলে পাবলিশ করে আর সেই তথ্যগুলো হাজার হাজার মানুষ সার্চ করে তথ্যগুলো সংগ্রহ করে।
বর্তমানে ব্লগ জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে তবে এর শুরুটা হয়েছিল অনেক আগে একেবারে ১৯৯০ এর দশকে। প্রথমে আমেরিকান একজন ছাত্র জাস্টিন হল তিনি 1994 সালে তার নিজের জীবনে লিখতে শুরু করেছিলেন একটি ওয়েবসাইটে আর এটাকেই বলা হয়েছিল ডিজিটাল ডায়েরি। ব্লগ শব্দটি এসেছে weblog শব্দ থেকে।
তবে ব্লগিংয়ের সবচাইতে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ২০০৫-২০১০ এ সময়ের মধ্যে। অধিকাংশ মানুষ এই সময়ের মধ্যেই ব্লক পেশাকে বেছে নিয়েছে। বর্তমানে ব্লগ ব্যবসা, মার্কেটিং, শিক্ষা ও অর্থ উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যারা ব্লগ করতে চাই তারা দুইটি প্ল্যাটফর্মে ব্লক করতে পারে একটি হচ্ছে ব্লগার ডট কম এবং অন্যটি ওয়ার্ডপ্রেস। এ ২ মাধ্যমে ব্লগার ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।
আরো পড়ুনঃ প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় ২০টি ট্রেন্ডিং উপায়ে ২০২৫
যারা ব্লগ লেখে তাদের ব্লগার বলা হয় এবং ব্লক বিভিন্ন ভাষায় লেখা যায় বাংলা, ইংরেজি। যেহেতু আমরা বাংলাদেশে বসবাস করি তাই বাংলা ভাষাতে ব্লগ লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়। আগে ব্লগাররা নিজের ব্যক্তিগত জীবন কাহিনী লিখত, কিন্তু এখন ব্লগ লেখাতে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে এখানে ব্লগাররা এমন ভাবে ব্লগ বা আর্টিকেল লিখে পোস্ট করে যেটা মানুষের প্রয়োজনে আসে।
ব্লগের প্রকারভেদ কি কি
ব্লকের প্রকারভেদ কি কি যারা ব্লগ করেন তারা অলরেডি এ বিষয়ে জানেন। তবে ব্লগ বিভিন্ন ধরনের হয়। তবে ব্লগ লেখার সময় ব্লগারদের কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে যেমন যে ব্লক পোস্টটি লিখা হয় সেটি যেন পাঠক পরে উপকৃত, বোধগম্য, আকর্ষণীয় হয়। বিষয়ভিত্তিকভাবে ব্লগের প্রকারভেদ বর্ণনা করতে গেলে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিচে ব্লগের প্রকারভেদ গুলো তুলে ধরা হলো।
ব্যক্তিগত ব্লগ
ব্যক্তিগত ব্লগ হলো লেখক নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ভাবনা, দৈনন্দিন ঘটনা, ভ্রমণের গল্প, অনুভূতি, শিক্ষা কিংবা যেকোনো ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করেন। ব্যক্তিগত ব্লগে নিজের অভিজ্ঞতা এবং মতামত তুলে ধরা যায়। স্বাধীনভাবে লেখার সুযোগ রয়েছে। লেখক এখানে নিজের নাম ব্যবহার করতে পারেন অথবা ছদ্মনাম ব্যবহার করা যায়। ব্যক্তিগত ব্লগের বিষয় হতে পারে ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্ক, পরিবার, আবেগ, শিক্ষা, পেশা ইত্যাদি।
চাইলে এই ব্লগ থেকে গুগল এডসেন্স এবং স্পন্সর শিপ এর মাধ্যমে আয় করা যায়। ব্যক্তিগত ব্লক যারা শুরু করতে চান তাদের প্রথমে একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম বেছে নিতে হবে ওয়ার্ডপ্রেস অথবা ব্লগার। নিয়মিত নিজের অভিজ্ঞতা বা পোস্ট শেয়ার করতে হবে। ছবি এবং ভিডিও যুক্ত করে লেখাকে আরো জীবন্ত করে তোলা যায় এবং পাঠকের মন্তব্যের উত্তর দিতে হবে। তবে youtube আসার কারণে বর্তমানে ব্যক্তিগত ব্লক কমে গেছে।
ব্যবসায়িক ব্লগ
ব্যবসায়িক ব্লক হলো এমন একটা ব্লক যা কোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠান বা উদ্যোক্তা পরিচালনা করে তাদের পণ্য সেবা ব্র্যান্ড বা শিল্প সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও গাইড গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে। এ ব্লক মূলত গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন তথ্য প্রদান এবং বিক্রয় বাড়ানোর একটি কৌশল। ব্যবসায়িক ব্লক হল অনলাইনে লেখা যেখানে গ্রাহকের উপকারী ও প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট প্রকাশ করা হয়।
ব্যবসায়ী ব্লগ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবসার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানো, পণ্য ও সেবার সম্পর্কে তথ্য দেওয়া, গ্রাহক আকৃষ্ট করা, ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি, সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্ক বৃদ্ধি। অর্থাৎ ব্যবসায়ী ব্লগ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে একটি ব্যবসা নির্দিষ্ট ভাবে দাঁড় করাতে হবে মানসম্মত ও তথ্যভিত্তিক লেখা তৈরি করতে হবে এবং ছবি, ভিডিও ব্যবহার করতে হবে।
পেশাগত বা নেশাভিত্তিক ব্লগ
পেশাগত বা নেশাভত্তিক ব্লক এমন একটি ব্লগ যেখানে নির্দিষ্ট একটি বিষয়/নিশ নিয়ে ব্লক তৈরি করতে হয়। এই ব্লগগুলো মূলত তৈরি করতে হয় কোন একটি নির্দিষ্ট পেশাকে কেন্দ্র করে যেমন রান্না, ভ্রমণ, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, ফ্যাশন, শিক্ষা ইত্যাদি। সহজ ভাবে বলা যায় যদি শুধুমাত্র একটি বিষয় নিয়ে ব্লগ লেখেন এবং সেটিকে পেশাগত ভাবে উপার্জনের উৎস করার চেষ্টা করেন সেটাই নেশা ভিত্তিক ব্লক বা পেশাগত ব্লগ বলা হয়।
নিউজ বা সংবাদ ভিত্তিক ব্লগ
নিউজ বা সংবাদ ভিত্তিক ব্লক হল অন্য একটা ব্লগের প্রকারভেদ। নিউজ ব্লগ সম্ভবত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আপডেট খবর প্রকাশ করতে হয়। নিউজ ব্লগের বিষয় হতে পারে জাতীয় সংবাদ, রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন, আন্তর্জাতিক, প্রযুক্তি, খেলা, বিনোদন, শিক্ষা, ব্যবসা ও মার্কেট ইত্যাদি। এই ব্লক তৈরি করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস কিংবা ব্লগার এ একটু ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ৪৬ হাজার টাকা ফ্রি ইনকাম বিকাশে পেমেন্ট ২০২৫
আর একটি নিউজ ব্লগ তৈরি করার জন্য একটি টিম গঠন করতে হয় কারণ এর ম্যানেজমেন্ট এক পক্ষে সম্ভব নয় এজন্য বিশাল রাইটারের টিম তৈরি করে ব্লক পাবলিস্ট করতে হয়। এ ধরনের ব্লগে প্রতিদিন অনেক আর্টিকেল পাবলিস্ট করতে হয়। নিউজ ব্লগ পাঠকদের কাছে দ্রুত পাঠকদের কাছে দ্রুত পৌঁছানো যায় এবং ওয়েবসাইটে ট্রাফিক দ্রুত বাড়ে বিজ্ঞাপন এবং স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে আয় করা যায়। এ ধরনের ওয়েবসাইট গুলো মূলত প্রেস কিংবা সাংবাদিকরা তৈরি করে থাকেন।
গেস্ট ব্লক বা মাল্টি অথর ব্লগ
গেস্ট ব্লক বা মাল্টি অথর ব্লগ বলতে বোঝানো হয়েছে এখানে অনেকগুলো লেখক থাকবে এবং প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লিখবে এবং প্রকাশ করে। সহজ ভাবে বলা যায় এখানে কোন একক লেখক ব্লক আর্টিকেল লিখে পাবলিক করতে পারবে না। অনেকগুলো লেখক থাকবে এবং বিভিন্ন বিষয়ের কনটেন্ট লিখে পাবলিস্ট করবে।
এ ধরনের ব্লক গুলোতে কনটেন্টের পরিমান দ্রুত বাড়ে এবং এবং ব্যবসায়িকভাবে পরিচালনা করা এবং বিজ্ঞাপন এবং স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। এ ধরনের ব্লগে দ্রুত এবং প্রচুর পরিমাণে ইনকাম বাড়ানো যায়। এ ধরনের ব্লগ গুলোর উদাহরণ হচ্ছে Medium.com, Prothom Alo blogs, Techcrunch,Moz blog।
ব্লগ লেখার মূল উদ্দেশ্য
ব্লগ লেখার মূল উদ্দেশ্য অবশ্যই রয়েছে। ব্লক লিখলে অনেক অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ব্লগ লেখালেখি নিয়ে অনেকেই বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে প্রায় ৬০০ মিলিয়নের বেশি ব্লগার ওয়েবসাইট রয়েছে। আর এই ব্লগার ওয়েবসাইট কে অনেকেই নিজের পেশা হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
ব্লগ লেখার প্রধান উদ্দেশ্য
- নিজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, পড়াশোনা করে অন্যদের মাঝে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও অনলাইনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া।
- নিজের আত্মিক ব্যক্তিগত মতামত গুলো উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। যেমন আপনি চাইলে শিক্ষা, প্রযুক্তি, সমাজ, রাজনীতি বা জীবন দর্শন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে মতামত প্রকাশ করতে পারেন ব্লগ এর মাধ্যমে।
- এছাড়া ব্লগার ওয়েবসাইট থেকে গুগল এডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সরশিপ ইত্যাদির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ্য পথ তৈরি করা যায়।
- ব্লগের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা বা পণ্যের মার্কেটিং বা প্রচার করা যায়।
- ব্লগার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কন্টেন্ট পাবলিশ করে এসিও ব্যবহারে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানো যায়।
- নিয়মিত ব্লগ লেখার কারণে নিজের দক্ষতা এবং লেখনীর মান, ভাষা অনেকটা উন্নত করা যায়।
ব্লগ কাকে বলে এই সম্পর্কে সাধারণ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: ব্লগিং কি?
উত্তর: ব্লক তৈরী, লেখা, প্রকাশ ও পরিচালনার প্রক্রিয়াকে ব্লগিং বলে।
প্রশ্ন: ব্লক দিয়ে ফ্রি করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, blogger.com ও wordpress.com দিয়ে ফ্রি ব্লগ শুরু করা যায়।
প্রশ্ন: ব্লগে কতটা লম্বা পোস্ট হওয়া উচিত?
উত্তর: ৫০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে হলে ভালো, তবে বিষয়ভিত্তিক ভিন্নতা থাকতে পারে।
প্রশ্ন: ব্লগের জন্য কি লেখার অভ্যাস থাকা জরুরী?
উত্তর: হ্যাঁ, নির্ভুল স্পষ্ট ও ধারাবাহিকভাবে লেখার অভ্যাস থাকা দরকার।
ব্লগ লেখার উপকারিতা কি
ব্লক লেখার উপকারিতা কি এ ব্যাপারে জানা থাকলে অনেকেই এই ব্লগ লেখার প্রতি আগ্রহী হবেন এবং নিজেকে একজন যোগ্য ব্লগার হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন। কারণ ব্লগার ওয়েবসাইট তৈরি করা অন্যান্য সকল কিছুর চাইতে সোজা এবং নিজেকে একজন যোগ্য রাইটার হিসেবে সকলের কাছে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। যারা লেখালেখি করতে ভালোবাসেন তারা অবশ্যই ব্লগার ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।
ব্লগ লেখার উপকারিতা
- জ্ঞান ও গবেষণার পরিধি বাড়ানো যায় কারণ ব্লক লেখার আগে অনেক রিসার্চ করতে হয় যার কারণে নিজে অনেক কিছু শেখা যায়।
- ব্লক লেখার মাধ্যমে অনলাইনে পরিচিতি তৈরি হয় ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে।
- চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ব্লগ রাইটিং এর ক্ষেত্রে। কারণ অনেক কোম্পানি ব্লগারদের রাইটিং স্কিল দেখে চাকরির সুযোগ করে দেয়।
- এশিয়াতে দক্ষতা অর্জন করা যায় কারণ সার্চ ইঞ্জিনিয়ার মাধ্যমে ব্লগিংয়ে শেখা যায়।
- অনলাইনে কমিউনিটি তৈরি করা যায় কারণ পাঠক্রম মন্তব্য করে যার ফলে লেখক ও পাঠকের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়।
- এডসেন্স এর মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম এর উৎস তৈরি করা যায় ও দীর্ঘ সময় ধরে আয় করার সুযোগ রয়েছে।
ব্লগ এবং ওয়েবসাইট এর মধ্যে পার্থক্য
ব্লগ এবং ওয়েবসাইটের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা বেশি নয় তবে ব্লগ হচ্ছে একটি একটি ওয়েবসাইট বা তার অংশ। অনেকেই ব্লগকে ওয়েবসাইট বলে থাকে। ব্লগ যেখানে নতুন কনটেন্ট বা পোস্ট নিয়মিত লিখে প্রকাশ করতে হয়। অন্যথায় ওয়েবসাইট একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পণ্য এবং পরিষেবা পূর্বেই উপস্থাপন করা থাকে।
- একটি নতুন পোস্ট প্রকাশ করতে হয়, কিন্তু ওয়েবসাইটে স্থায়ী কনটেন্ট থাকে।
- ব্লগে লেখনীর মাধ্যমে নিজের মতামত, অভিজ্ঞতা, গাইড ইত্যাদি প্রকাশ করা হয় কিন্তু ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পণ্যের তথ্য, বিবরণ, পরিষেবা ইত্যাদি উল্লেখ করা থাকে।
- একটি ব্লগে তারিখ ও ক্যাটাগরি ভিত্তিক পোস্ট প্রকাশ করতে হয় কিন্তু ওয়েবসাইটে পেজ ও সেকশন ভিত্তিক মেনু গঠন থাকে।
- পোস্টের নিচে একজন লেখকের নাম এবং ছবি থাকে কিন্তু ওয়েবসাইটে সাধারণত কোন কোম্পানির বা ব্র্যান্ডের পরিচয় তুলে ধরা হয়।
- ব্লগে পাঠকের মন্তব্য করার অপশন রয়েছে কিন্তু ওয়েবসাইটে সাধারণভাবে মন্তব্য করার অপশন নাই।
- ব্লগে এডসেন্স, এফিলিয়েট এবং স্পন্সর এর মাধ্যমে আয় করা যায় কিন্তু ওয়েবসাইটে মূলত পণ্যের বিক্রির মাধ্যমে আয় করা যায়।
একটি সফল ব্লগ তৈরির ধাপ
একটি সফল ব্লগ তৈরির ধাপ গুলো জানা থাকলে খুব সহজেই একটি ব্লগার ওয়েবসাইটে নিজের অভিজ্ঞতা দক্ষতা শেয়ার করে ব্লগ তৈরি করে পাঠকের সাথে অনলাইন প্লাটফর্মে নিজের পরিচয় তৈরি এবং সফল ব্লগার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবেন। চলুন নিজে সফল ব্লগ তৈরির ধাপগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি।
- সঠিক বিষয়/নিশ নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ কোন ধরনের টপিকগুলো নিয়ে লিখবেন সেগুলো নির্ধারণ করতে হবে যেমন: স্বাস্থ্য, রান্না, প্রযুক্তি, ভ্রমণ, ইসলামিক, ব্লগ শিক্ষা, লাইফস্টাইল ইত্যাদি।
- এবং দ্বিতীয়তঃ একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন যেখানে আপনি একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং করতে পারেন। প্ল্যাটফর্ম গুলো হল ব্লগার ডট কম, ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম।
- ডোমেইন হোস্টিং ক্রয় করুন ভালো কোন হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে। অর্থাৎ ডোমেন হচ্ছে আপনার ব্লগের নাম (যেমন multiit.com)। অন্যথায় হোস্টিং হচ্ছে আপনার ব্লগের জন্য ডাটা সংরক্ষণ করা বা ক্রয় করা। তবে নতুনদের জন্য ব্লগার ব্যবহার করাই ভালো সেখানে হোস্টিং কেনার প্রয়োজন হয় না। ওয়ার্ডপ্রেসে হোস্টিং ক্রয় করতে হয়।
- সুন্দর একটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগ সেটাপ করুন এবং মোবাইল ফ্রেন্ডলি থিম ব্যবহার করুন।
- এরপর নিউ পোস্ট এগিয়ে মানসম্মত কনটেন্ট লিখুন যেন পাঠক আকৃষ্ট হয়। এসো ব্যবহার করুন যেন গুগলে রেঙ্ক করে।
- এসব শিখুন এবং প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। কিওয়ার্ড ব্যবহার, ভালো টাইটেল, মেটা ডিস্ক্রিপশন, ইমেজ সেটাপ করুন যেন আর্টিকেল মানসম্মত হয়।
- ব্লক চালু হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ট্রাফিক আসবে তখন google এডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সর পোস্ট গুলোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
- ধৈর্য ও নিয়মিতভাবে ব্লগার ওয়েবসাইটে পোস্ট পাবলিশ করুন।
ব্লগ এবং ভ্লগের মধ্যে পার্থক্য
ব্লগ এবং ভ্লগের মধ্যে পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে। কারণ অনেকে বুঝতে পারে না ব্লগকে ভ্লগ মনে করে। তবে দুইটি আলাদা। ব্লগ হল এমন এক ধরনের মাধ্যম যেখানে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করে কনটেন্ট বা আর্টিকেল কোন একটা ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে হয়। অন্যথায় ভলগ হচ্ছে ভিডিও কনটেন্ট যা সাধারণত ইউটিউব কিংবা ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।
- ব্লগ হচ্ছে লিখিত কনটেন্ট বা ফরম্যাট যেখানে লেখা ও ছবি দেখানো হয়। অন্যথায় ভ্লগ হচ্ছে ভিডিও কনটেন্ট যামানুষ অভিনয়ের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে ইউটিউবে প্রকাশ করে।
- ব্লক প্রকাশের মাধ্যম হচ্ছে ব্লগার ওয়েবসাইট, ব্লগিং প্লাটফর্ম এবং vlog প্রকাশ করা হয় ইউটিউব, ফেসবুক, টিক টক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে।
- ব্লক লিখে পোস্ট করতে হয়। কিন্তু ভ্লগ ভিডিও ধারণ করে এডিট করে আপলোড করতে হয়।
- ব্লগ পাঠযোগ্য কিন্তু ভ্লগ দর্শনযোগ্য এবং শ্রবণযোগ্য।
- ব্লগে আয়ের মাধ্যম হচ্ছে এডসেন্স, এফিলিয়ট, স্পন্সর লেখা কিন্তু ভ্লগে ইউটিউব মনিটাইজেশন, ব্র্যান্ড স্পন্সরস, প্রোডাক্ট রিভিউ করে আয় করতে হয়।
- ব্লগে লেখা ও seo দক্ষতা থাকতে হয় কিন্তু ভ্লগে ভিডিও তৈরি, কথা বলা ও এডিটিং দক্ষতা থাকতে হয়।
ব্লগ সম্পর্কিত আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: একই ব্লগে কি ভিন্ন বিষয়ের পোস্ট দেওয়া যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, বিভিন্ন বিষয় যেমন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, ধর্ম, ইত্যাদি বিষয়ে লেখা যায়।
প্রশ্ন: ব্লগিং কি ক্যারিয়ার হিসেবে করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, সফল ব্লগাররা ফুল টাইম ইনকাম করছেন।
প্রশ্ন: একটি ব্লগ কত বছর চালানো যায়?
উত্তর: সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করলে দীর্ঘ বছর চালানো সম্ভব।
প্রশ্ন: ব্লগ লেখার জন্য কোন ভাষা ব্যবহার ভালো?
উত্তর: যে ভাষায় আপনি সাবলীল এবং পাঠক বেশি সেটিই ভালো।
শেষ মন্তব্যঃ ব্লগ কাকে বলে
পরিশেষে বলা যায় যে ব্লগ এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে লেখালেখির মাধ্যমে অনলাইনে নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দেওয়া এবং উপকৃত করা। ব্লগ শুধু লেখালেখির মাধ্যমে নয় এখানে জ্ঞানের চর্চা হয় এবং বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে ব্যবসার প্রচার-প্রচারণা করা যায় এবং আর্থিক উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। ব্লগারের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
গ্রো কেয়ার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url